কেবল যুক্তরাষ্ট্র নির্ভর অর্থনীতি হতে পারে না : খসরু

| শনিবার , ২ আগস্ট, ২০২৫ at ৬:১৫ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে সম্পূরক শুল্ক আরোপ করেছে, তা প্রতিদ্বন্দ্বী পোশাক রপ্তানিকারকদের প্রায় সমান হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তবে সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী মনে করেন, দেশের পোশাক রপ্তানি কেবল যুক্তরাষ্ট্র নির্ভর হতে পারে না। তার ভাষায়, এটা জয়পরাজয়ের কোনো বিষয় না। যে শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতিযোগিতায় আমরা তুলনামূলকভাবে একটা সন্তোষজনক অবস্থানে আছি। আমরা ২০%, পাকিস্তান ১৯%, ভিয়েতনামে ২০%, ভারতে ২৫%। সেই ক্ষেত্রে আমি মনে করি, সার্বিকভাবে ট্যারিফের ফিগারটা সন্তোষজনকপ্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে। ট্যারিফ বিষয়ে আমাদের প্রতিযোগীদের সাথে যেটা হয়েছে সেটা ঠিকই আছে। এটা সন্তাষজনক। খবর বিডিনিউজের।

গতকাল শুক্রবার দুপুরে গুলশানে নিজের বাসায় সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রতিক্রিয়া জানান। বাণিজ্য নিয়ে দর কষাকষি শেষে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর সম্পূরক শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ ঠিক করেছে যুক্তরাষ্ট্র। শুল্কের চাপ কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কী কী বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে তা প্রকাশের দাবি জানান সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, পুরো নেগোসিয়েশনের সার্বিক বিষয়টা তো আমাদের জানা নেই। আমরা শুধু ট্যারিফের বিষয়টা জানি। সার্বিক বিষয়টা জানার পরে এই বিষয়ে মন্তব্য করতে পারব। এর (ট্যারিফ) বিপরীতে আর কী দিতে হয়েছে সেটা না জানা পর্যন্ত তো এর ইমপেক্টটা কী হবে, সেটা আমরা বলতে পারছি না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু বলেন, নেগোসিয়েশনের পেছনের যে বিষয়গুলো, এটা তো একটা প্যাকেজ। এখানে অনেকগুলো সিদ্ধান্ত হয়েছে। শুধুমাত্র ট্যারিফের কত পারসেন্ট কমানো হলো, সেটাতে তো সিদ্ধান্ত হয়নি। এই সিদ্ধান্তের পেছনে অনেক আলাপআলোচনা, আমেরিকানরা কী পাঠাতে পারবে? বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের কী দাবিদাওয়া ছিল, এই বিষয়গুলো প্রকাশ হলে আমরা বুঝতে পারব।

শুল্কের চাপ কমাতে ২৫টি বোয়িং উড়োজাহাজ কেনার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আমীর খসরু বলেন, কিছু তো করতেই (কেনাকাটা) হবে; কারণ আমেরিকানদের পুরো ট্যারিফের বিষয়টা হচ্ছে, আমেরিকানদের পণ্য রপ্তানির স্বার্থে। সেজন্য তো এই অতিরিক্ত ট্যারিফ আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু সেটা করতে গিয়ে বাংলাদেশ কতটুকু অ্যাবজরভ করতে পারবে, আমাদের অর্থনীতি কতটুকু অ্যাবজরভ করতে পারবে, আমাদের ব্যবসায়ীরা কতটুকু অ্যাবজরভ করতে পারবে, আমাদের ইকোনমি কতটুকু অ্যাবজরভ করতে পারবে, সেই বিষয়গুলো আলোচনার বিষয়। আমরা বিস্তারিত জানলে সেটার ওপর মন্তব্য করতে পারব।

তিনি বলেন, এটা আমাদের মনে রাখতে হবে, এটা শুধুমাত্র একটা ট্যারিফের বিষয় নয়। এর পেছনের আরো যে বিষয়গুলো জড়িত আছে, সেগুলো সম্মিলিতভাবে আমাদের বিবেচনায় আনতে হবে। সেই বিবেচনাটা গুরুত্বপূর্ণ আগামী দিনের জন্য। বাট, আমাদের রপ্তানিকারকরা আপাতত স্বস্তি পেয়েছে বলে আমি মনে করি।

আমীর খসরু বলেন, বাণিজ্য শুধু আমাদের আমেরিকার সাথে নয়, অন্যান্য দেশে সাথেও আমাদের পণ্য রপ্তানি হয়। সেই জায়গাগুলো বিবেচনায় নিয়ে সম্মিলিতভাবে আমরা কোথায় দাঁড়াচ্ছি সেটা বুঝতে হবে, পর্যালোচনা করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে পোশাক রপ্তানির নতুন বাজার খোঁজার তাগিদ দিয়েছেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, রপ্তানিটা আমাদের আরো বেশি ডাইভারসিফাই করতে হবে। বিদেশে ডাইভারসিফাই করতে, দেশেও ডাইভারসিফাই। আমাদের শুধু আমেরিকা নির্ভরশীল অর্থনীতি হতে পারে না। সেটাই হচ্ছে আমাদের আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ। সেজন্য বাংলাদেশে বিনিয়োগ পরিবেশ, অর্থনীতিতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ এবং আমাদের যে ক্যাপাসিটিবিল্ডিং ইউজ অব ড্রিম বিজনেস, যেটা অত্যন্ত নিচে এখন, সেটাকে এই ডিরেগুলেশনের মাধ্যমে, রিভেলুয়েশনের মাধ্যমে আমাদের পরিবর্তন আনতে হবে। বড় ধরনের পরিবর্তন আমাদের আনতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমার্কিন শুল্ক ২০ শতাংশ নির্ধারণ বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক : খলিলুর রহমান
পরবর্তী নিবন্ধইঞ্জিন সংকটে ভুগছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল