বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রধান কোচের পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে চন্দিকা হাথুরুসিংহেকে। কেন তাকে বরখাস্ত করা হলো সে প্রশ্ন ঘুরে ফিরছিল সবার মুখে মুখে। অনেকেই মনে করেছিলেন বিসিবি প্রধান ফারুক আহমেদ হাথুরুকে পছন্দ করেন না এবং তিনি মনেও করেন না যে হেড কোচ হিসেবে হাথুরুর বাংলাদেশ দলকে দেয়ার কিছু আছে । আর সে কারণেই হয়তো পদচ্যুত করা হয়েছে হাথুরুকে। গতকাল বিকেলে হাথুরুসিংহেকে নিষিদ্ধ করার কারণ ব্যাখ্যা করে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ জানালেন অন্য কথা। তিনি বলেন ঠিক পারফরমেন্সের কারণেই যে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে তা কিন্তু নয়। মূলত তার বিপক্ষে গুরুতর অভিযোগ আছে। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় দলের একজন ক্রিকেটারকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করেছেন। সে সঙ্গে শৃঙ্খলাভঙ্গেরও অভিযোগ আছে তার বিপক্ষে। একই সাথে চুক্তির বাইরে বেশি সময় ছুটি কাটানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিপক্ষে। সবকিছু মিলিয়ে হাথুরু যুগের অবসান হয়েছে গতকাল। এখানে উল্লেখ্য বিসিবি সভাপতি হওয়ার আগে থেকেই ফারুক আহমেদ বলে আসছিলেন, তিনি মনে করেন না হাথুরুসিংহের আর বাংলাদেশ দলকে দেয়ার কিছু আছে। বোর্ড প্রধান হওয়ার পরও ঠিক একই জায়গায় স্থির ছিলেন তিনি। অবস্থান বদলাননি।
গতকাল জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলে বসেন হাথুরু ইস্যুতে আমি এখনো আগের অবস্থানেই আছি। মাঝখানে জাতীয় দলের টানা খেলা থাকায় ফারুক আহমেদ সময়ক্ষেপণ করলেও হাথুরু ইস্যুতে তার সর্বশেষ বক্তব্য ছিল যে আমরা বিষয়টাকে মাথায় রেখেছি। সময় হলে দেখবেন। জানবেন। তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই ধারণা করা হয়েছিল ফারুক আহমেদ বোধহয় ওই কারণই বলবেন। কিন্তু তা না করে তিনি জানিয়ে দিলেন মূলত জাতীয় দলের ক্রিকেটারকে (নাসুম আহমেদ) লাঞ্চিত করার কারণেই তার বিপক্ষে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়। বিসিবি সভাপতি দাবি করেন, হাথুরু যাকে লাঞ্চিত করেছেন, আমি নিজে তার সাথে কথা বলেছি। তার মতামত নিয়েছি। জেনেছি তার কথা। স্ব–চক্ষে দেখা একাধিক সাক্ষীর মন্তব্যও শুনেছি। সব সাক্ষ্য প্রমাণের পরই এমন শাস্তিমূলক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিসিবি সভাপতি সরাসরি কথা বলেননি হাথুরুসিংহের সঙ্গে। সভাপতির পক্ষ থেকে প্রধান নির্বাহী বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছেন বিদায়ী কোচের কাছে। বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার আগে হাথুরুসিংহের কঠোর সমালোচকদের একজন ছিলেন ফারুক। তবে বোর্ড প্রধান হিসেবে এই সিদ্ধান্তে ব্যক্তিগত পছন্দ–অপছন্দের কোনো প্রভাব পড়েনি বলেই দাবি তার। তিনি বলেন ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ করি না, কথাটা ওভাবে আমি বলিনি। আমি বলেছিলাম, কোচ হিসেবে তার খুব বেশি কিছু দেওয়ার নেই। এটা ছিল একজন সাবেক ক্রিকেটার হিসেবে আমার মূল্যায়ন। এখানে ব্যক্তিগত পছন্দ–অপছন্দের ব্যাপার নয়। কোচ হিসেবে তার যে সামর্থ্য, সেটাতে আমি খুব বেশি সন্তুষ্ট ছিলাম না। ব্যক্তিগত পছন্দ–অপছন্দ এখানে বিন্দুমাত্র প্রভাব ফেলেনি।