কেন এই আত্মহনন

তাহেরা বেগম | সোমবার , ১০ মার্চ, ২০২৫ at ৬:০৬ পূর্বাহ্ণ

পৃথিবীর মানুষের চলার পথটি সব সময় কুসুমাস্তীর্ণ নয়। মানুষের জীবনে আছে সুখদুঃখ, আনন্দবেদনা, হাসিকান্না। তবে এগুলো কোনোটাই স্থায়ী নয়। প্রযুক্তি মানুষকে ব্যস্ত করে তুলেছে। জীবনের ক্রমবর্ধমান ব্যস্ততা মানুষকে নিঃসঙ্গ করে তুলেছে। প্রতিটি মানুষ তাদের নিজেদের পাশে একটি অদৃশ্য দেয়াল নিয়ে ঘুরছে। তবে নিকষ অন্ধকার দূর করে যেমন সোনালী সূর্য উঠে ঠিক তেমনি একদিন বেদনার মেঘ কেটে আনন্দ ধরা দেয়। সমাজে চলতে মানুষকে যুদ্ধ করতে হয়। সমাজে চলতে গেলে কারো সাথে মতের অমিল হওয়া স্বাভাবিক। এই অমিলকে সরিয়ে মানুষকে সুন্দর জীবন খুঁজে নিতে হয়। মানুষের জীবনের সাথে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা জড়িত। মানুষকে এগুলোকে এড়িয়ে চলতে হয়। সমাজকে কিছু অশুভ ব্যাধি ছড়িয়ে আছে। এগুলোকে অনেকেই গ্রহণ করে। তেমনি আত্মহত্যা একটি। চিকিৎসকদের মতে এটি একটি মানসিক ব্যাধি। আত্মহত্যাকে সবধর্মেই পাপ বলা হয়েছে। পৃথিবীতে প্রায় প্রতিবছর দশ লাখ মানুষ আত্মঘাতী হন। বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় বিশহাজার এবং প্রতিদিন আঠাশ জন মানুষ নিজেকে হত্যা করছে যাদের বয়স একুশ থেকে একত্রিশ বছরের মধ্যে। বেশির ভাগ আত্মহত্যার সাথে মানসিক রোগের সম্পর্ক রয়েছে। বিষণ্নতা, মাদকাসক্তি ইত্যাদি মানসিক রোগের চিকিৎসা না করালে, এবং সম্পর্ক জনিত জটিলতা, ব্যর্থতাজনিত কারণে আত্মহত্যার ঘটনা বেশি ঘটে থাকে। পাশ্চাত্যে মধ্য বয়সী পুরুষ দের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। বাংলাদেশে যৌতুক, পারিবারিক নির্যাতন, অভিমান, আবেগ নিয়ন্ত্রণের ব্যর্থতা, দারিদ্র্য, বেকারত্ব, পরীক্ষায় ব্যর্থতা, দাম্পত্যকলহ, ইত্যাদি কারণে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে থাকে। ইভটিজিং এর শিকার হয়েও অনেক নারী আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আবার প্রচার মাধ্যমগুলোতে আত্মহত্যার সংবাদে অতিপ্রচার, অপ প্রচার বা দায়িত্বহীন পরিবেশনের কারণে আত্মহত্যার ঘটনা বাড়ছে।

,বি শিক্ষর্থি তাজরিয়ান আহমেদ মানুষ হিসেবে নিজেকে ব্যর্থ লিখে আত্মহত্যা করেছে। বিখ্যাত রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাদী মোঃ মায়ের মৃত্যুর কারণ দেখিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এছাড়া একজন ডাক্তারও সব জেনে শুনে আত্মহত্যা করেছিলেন। তিনি ডাঃ মোস্তাফা মোরশেদ আকাশ। যেটা শুনে সবাই বিস্মিত হয়েছিলেন। একজন ডাক্তার শুধু দেশের সম্পদই নয় তিনি মানুষের সেবক। স্ত্রীর বিদেশী কালচারে চলাফেরা মেনে নিতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। পেন্সিল ফাউন্ডেশনের এডমিন মোঃ আনোয়ার অতিরিক্ত নিঃসঙ্গতা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছিলেন। লেখালেখির কারণে তাকে আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিনতাম। আসলে আমরা নেতিবাচক গণ্ডি থেকে বের হয়ে আসতে পারি না। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে ইতিবাচক করতে হবে। আমাদের বিষণ্নতাকে চিকিৎসা করাতে হবে। বিষণ্নতাকে এড়িয়ে কাজে ডুবে থাকতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআল্লাহ আমাদের হেদায়েত করুন
পরবর্তী নিবন্ধনারীর নিরাপত্তা কেন প্রশ্নবিদ্ধ