কেন্দ্রের নির্দেশে স্থগিত থানা পুনর্গঠন কার্যক্রম

নগর বিএনপি ।। বিলুপ্ত হচ্ছে ওয়ার্ড কমিটি

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ৩০ অক্টোবর, ২০২১ at ১০:৫২ পূর্বাহ্ণ

কেন্দ্রের নির্দেশে থানা কমিটি গঠন প্রক্রিয়া স্থগিত করে সাংগঠনিক ওয়ার্ড ও ইউনিট কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু করছে নগর বিএনপি। এর অংশ হিসেবে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে নগরের আওতাধীন ৪৩ সাংগঠনিক ওয়ার্ডের বিদ্যমান কমিটি বিলুপ্ত করা হবে। সেখানে এক মাসের জন্য ঘোষণা করা হবে ‘সম্মেলন প্রস্তুত কমিটি’। তারা পুরো নভেম্বর মাসে ৭৩৫ ইউনিটে সদস্য সংগ্রহ অভিযান পরিচালনা করবে এবং ডিসেম্বর মাসে কাউন্সিলের মাধ্যমে ওয়ার্ড কমিটি গঠন করবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কমিটি গঠনের লক্ষ্যে প্রতিটি থানায় গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ধারাবাহিক কর্মী সমাবেশ শুরু করেছিল নগর বিএনপি। ইতোমধ্যে ১৫টি’র মধ্যে ১৩ থানায় সমাবেশ শেষও হয়েছে। বাকি আছে হালিশহর এবং পাহাড়তলী থানায়। এ দুই থানায় কর্মীসমাবেশ শেষে একযোগে ১৫ থানায় আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করার কথা ছিল। এ অবস্থায় কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা এসেছে, থানা কমিটির আগে ইউনিট ও ওয়ার্ড কমিটি গঠন করতে হবে। এক্ষেত্রে ইউনিট কমিটি গঠনের আগে সদস্য সংগ্রহেরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে জন্য একটি তথ্য সংগ্রহ ফরমও পাঠিয়েছে কেন্দ্র। বিষয়টি নিশ্চিত করে নগর বিএনপি’র আহ্বায়ক ডা.শাহাদাত হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, ওয়ার্ড সম্মেলন করার জন্য নতুন নির্দেশনা এসেছে। সেটার প্রস্তুতি চলছে। তাই আপাতত থানা কমিটি গঠন কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা দুই-তিন দিনের মধ্যে ওয়ার্ডের বিদ্যমান কমিটি বিলুপ্ত করে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি করে দিব। তারা নভেম্বর মাসের মধ্যে সদস্য সংগ্রহ করে ইউনিট কমিটি করবে। ইউনিটের প্রত্যক্ষ ভোটে ওয়ার্ড কমিটি করা হবে। পরবর্তীতে ওয়ার্ডে নির্বাচিতদের ভোটেই থানা কমিটি গঠন করব। নগর বিএনপি’র সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর দৈনিক আজাদীকে বলেন, দলকে তৃণমূল থেকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আগে ওয়ার্ড কমিটি গঠন করব। শীঘ্রই এ প্রক্রিয়া শুরু হবে।
নগর বিএনপি’র একাধিক নেতার সাথে আলাপকালে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সম্মেলনের মাধ্যমে ৩৯টি ওয়ার্ডের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছিলেন নগর বিএনপির তৎকালীন সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর। সেদিন ৯নং উত্তর পাহাড়তলী এবং ১০ নম্বর কাট্টলী ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্ত করা হয়নি। একইদিন কমিটি গঠনে সম্মেলন করার জন্য ৩১টি ওয়ার্ডে নতুন করে আহ্বায়কদের নামও ঘোষণা করা হয়েছিল। এছাড়া ওই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সম্মেলন করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। সর্বশেষ ২০১৯ সালের আগস্ট মাসের শুরুতে থানা ও ওয়ার্ড কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গ করার প্রক্রিয়া শুরু করেন শাহাদাত-বক্কর। তখন ২৮ আগস্ট কেন্দ্রের নির্দেশে তা স্থগিত হয়। তার আগে পাঁচটি থানা ও ২৮টি ওয়ার্ডে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর ডা. শাহাদত হোসেনকে আহ্বায়ক ও আবুল হাশেম বক্করকে সদস্য সচিব করে ৩৯ সদস্যের নগর কমিটি করা হয়। গত ২ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর নয়াপল্টনস্থ বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে র্ভাচুয়ালি যুক্ত হয়ে লন্ডনে অবস্থানরত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নগরের আওতাধীন ১৫টি থানা ও ৪৩ সাংগঠনিক ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন। একইসঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে সাংগঠনিক কমিটিগুলো গঠনের নির্দেশনা দেন তিনি। এর প্রেক্ষিতে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি নগরের আহ্বায়ক, সদস্য সচিব এবং ১৩ জন যুগ্ম আহ্বায়কের সমন্বয়ে পৃথক ১৫টি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করা হয়েছিল। প্রতিবেদনও জমা দেয় পর্যালোচনা কমিটি। পরবর্তীতে গত ২৯ মার্চ নগরের নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে মিছিল ও সমাবেশ করার সময় পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে গ্রেপ্তার হন আহ্বায়ক। গত ১ সেপ্টেম্বর জামিন পান তিনি। এরপর থানা কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু করলেও স্থগিত করতে হল কেন্দ্রের নির্দেশে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবেসিক ঠিক থাকলে সফলতা আসবে
পরবর্তী নিবন্ধসহায়তা প্রদানে কে কোন দল ও মতের বিবেচনা করা হয় না : তথ্যমন্ত্রী