বাংলাদেশ রেলওয়ের ইঞ্জিন সংকট ঘুচাতে নতুন করে ৬০টি মিটার গেজ ইঞ্জিন আমদানির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এক হাজার কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে এসব ইঞ্জিন কেনা হবে। এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক এবং এক্সিম ব্যাংক অব কোরিয়া এই ৬০টি ইঞ্জিন কেনার প্রকল্পে অর্থায়ন করতে সম্মত হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই রোটেম কোম্পানি থেকে এসব ইঞ্জিন কেনার ব্যাপারে আলোচনা চলছে বলেও সূত্র জানিয়েছে। সূত্র জানায়, বাংলাদেশ রেলওয়ের অধিকাংশ ইঞ্জিনেরই আয়ুষ্কাল ফুরিয়ে গেছে। বিভিন্ন সময় ইঞ্জিন বিগড়ে থাকে। ইঞ্জিনের অভাবে ঠিকঠাকভাবে ট্রেনই চালানো সম্ভব হয় না। ইঞ্জিনের গতি না থাকায় নির্ধারিত সময়ে ট্রেন চলাচল সম্ভব হচ্ছে না। ‘মালগাড়ি’র চলাচলে লাগে নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে বহু বেশি সময়। ট্রেনের যাত্রী সেবা এবং কন্টেনার পরিবহনে সময়ক্ষেপণ সার্বিক ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি করছে। কন্টেনার পরিবহনে সময়ক্ষেপণ আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ব্যাহত হচ্ছে রাজস্ব আয়। ইঞ্জিন সংকটকেই রেলের অন্যতম বড় একটি সংকট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছিল বহুদিন ধরে। শুধু পণ্যবাহী ট্রেনের ক্ষেত্রেই নয়, যাত্রীবাহী ট্রেনের ক্ষেত্রে সংকট চলছে। ঢাকা–কঙবাজার রুটে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো যাচ্ছে না ইঞ্জিনের অভাবে। ইঞ্জিন সংকটের কারণে সিডিউল বিপর্যয় নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে।
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে দৈনিক ১১২টি ইঞ্জিনের চাহিদা রয়েছে। অথচ রেলের নিকট শ’ খানেক চালু ইঞ্জিন রয়েছে। এতে করে সংকট লেগে থাকে।
এই সংকট ঘুচাতে সরকার নতুন করে ৬০টি মিটার গেজ ইঞ্জিন কেনার উদ্যোগ নিয়েছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এবং এঙ্মি ব্যাংক অব কোরিয়ার অর্থায়নে এক হাজার কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে ৬০টি ইঞ্জিন কেনার প্রক্রিয়া চলছে বলে সূত্র জানিয়েছে। কোরিয়ার বিশ্বখ্যাত হুন্দাই রোটেম কোম্পানির উৎপাদিত ইঞ্জিন (লোকোমোটিভ) ইতোপূর্বেও রেলের বহরে রয়েছে। ২২০০ হর্স পাওয়ারের মিটার গেজ ইঞ্জিনগুলোকে ইচ্ছে করলে ব্রডগেজেও রূপান্তরের সুযোগ রয়েছে। এসব ইঞ্জিন ঘন্টায় ১১০ কিমি গতিবেগে চলতে পারে।
রেলের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, আমাদের ইঞ্জিনের সংকট প্রকট। এই সংকট ঘুচাতে অচিরেই ইঞ্জিন কিনতে হবে। ইঞ্জিনের অভাব প্রকট থাকলে যাত্রী এবং পণ্য পরিবহনে যে সংকট তা ঘুচবে না।