র্যাবের অভিযানে বান্দরবানে পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) নারী শাখার প্রধান সমন্বয়ক জিংঠিয়াম বম প্রকাশ আকিম বম (১৮) গ্রেপ্তার হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার লাইমী পাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই অভিযানে গ্রেপ্তার হন লালসিয়ামলং বম (৬০) নামের কেএনএফের অপর এক সক্রিয় সদস্য। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয়রা জানান, বান্দরবান সদর উপজেলার লাইমী পাড়া এলাকায় অভিযান চালায় র্যাব–১৫ এর সদস্যরা। অভিযানে সামরিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কেএনএফের বান্দরবান সদর ও রোয়াংছড়ি উপজেলা অঞ্চলের নারী শাখার প্রধান সমন্বয়ক আকিম বম গ্রেপ্তার হন। অভিযানকালে গ্রেপ্তার হন লালসিয়ামলং বম নামের অপর এক সদস্যও।
র্যাব–১৫ এর স্কোয়াড্রন লিডার তৌহিদ জানান, ব্যাংক ডাকাতি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অস্ত্র লুট ও ব্যাংক ম্যানেজার অপহরণের ঘটনায় কেএনএফ সশস্ত্র সংগঠনের সঙ্গে জড়িতদের ধরতে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় র্যাব গোপন তথ্যের ভিত্তিতে লাইমী পাড়ায় অভিযান চালিয়ে নারী শাখার প্রধান সমন্বয়কসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনায় বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাব–১৫ এর কমান্ডার লেফট্যানেন্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন জানান, কেএনএফের ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায়ও নারী সদস্যরা সম্পৃক্ত ছিল। সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফের নারী শাখার সমন্বয়কের কাজটি পরিচালনা করতেন মূলত আকিম বম। তিনি ক্যাওক্রাডং পাহাড়ের একটি স্কুলের ছাত্রী ছিলেন। সেই স্কুলের শিক্ষক ছিলেন তার বাবা। স্কুলে লেখাপড়া করার সময় মাইকেল নামে এক যুবকের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব ও প্রেমের সম্পর্ক হয়। মূলত মাইকেলের হাত ধরেই কেএনএফের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ইতিমধ্যে দেশের বাইরেও কয়েক দফায় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
র্যাবের কমান্ডার এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন জানান, সদর উপজেলা ও রোয়াংছড়ি উপজেলাসহ আশপাশের বম জনগোষ্ঠীর এলাকাগুলো থেকে বম নারীদের কেএনএফের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে উদ্বুদ্ধ করা হত। কেএনএফের সঙ্গে জড়িত সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের মধ্যে নারীর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বিষয়টি জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, রুমা–থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি, হামলা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৪টি অস্ত্র লুট, ব্যাংকের অর্থ ও ব্যাংক ম্যানেজার অপহরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৯টি মামলা হয়েছে। তারমধ্যে থানচিতে চারটি ও রুমায় পাঁচটি মামলায় ৮৪ জনকে কেএনএফের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন ২৪ জন নারীও।