নির্বাচন হওয়া না হওয়া নিয়ে রাজনীতির মাঠে কারো বক্তব্যে কিছু আসে যায় না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, রাজনৈতিক বক্তব্য ওরা রাখুক। আমি বামপন্থি রাজনীতি করছি। তখন কত বক্তব্য দিয়েছি। হল বন্ধ করে দাও। ইউনিভার্সিটি বন্ধ করে দাও। বন্ধ কী হয়েছে নাকি? গতকাল বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের ‘ইউ পেনশন’ অ্যাপের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অর্থ উপদেষ্টা এ কথা বলেন। খবর বিডিনিউজের।
অন্তর্বর্তী সরকার আগামী বছর রোজার আগে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নির্ধারণ করেছে। নির্বাচন কমিশনও ফেব্রুয়ারিতে ভোট করতে এর দুই মাস আগে সূচি ঘোষণার কথা বলেছে। দ্রুত নির্বাচনের দাবি করে আসা বিএনপিসহ অন্য রাজনৈতিক দল এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। পরে জামায়াতও ফেব্রুয়ারির ভোট নিয়ে তাদের আপত্তি না থাকার কথা বলেছে। তবে সংস্কার ও অভ্যুত্থান ঠেকানোর ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার বিচার না হওয়ার আগে নির্বাচনের বিরোধিতা করে আসছে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি–এনসিপি। অভ্যুত্থানের নেতাদের নিয়ে গঠিত দলটি নির্বাচনের আগে এ দুই দাবির বাস্তবায়ন চেয়ে আসছে।
গত মঙ্গলবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, নির্বাচনের ডেট ঘোষণা হয়েছে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে; ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে না। রাজনীতির মাঠে নির্বাচন নিয়ে এমন বক্তব্য এলেও অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে একটি ভালো নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করতে সব ধরনের সহযোগিতা অর্থমন্ত্রণালয় থেকে করা হবে। তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারিতে ভালো একটা নির্বাচন দেওয়ার চেষ্টা আমরা করবো। ঋণ খেলাপিরা তো থিওরেটিক্যালি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। নির্বাচন কমিশন ঋণ খেলাপি বিষয়টি দেখবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করার জন্য যা যা লাগে আমরা সব সাপোর্ট আমরা দেব। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
নির্বাচনে কালো টাকার ব্যবহার প্রসঙ্গে সালেহউদ্দিন বলেন, কালো টাকার উৎস বন্ধ করার চেষ্টা করছি। আগে তো ব্যাংকের মালিক, শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক, নিউজ পেপারের মালিক, ফ্লাটের মালিক সব একজনই। এখন তো মোটামুটি, এখন একটু চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স হচ্ছে। এখনো আমাদের কাছে বিষয়টি আসে নাই। নির্বাচন কমিশন চিন্তা করবে যে এটা কীভাবে ঠিক করবে। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন নির্ভর করে রাজনৈতিক সংস্কৃতির ওপর। রাজনীতিবিদরা যদি উৎসাহ দেন যে টাকা পয়সা দিয়ে মনোনয়ন দেবেন, ভোট দেবেন তাহলে আমি অর্থ মন্ত্রণালয়ে থেকে তো কিছুই করতে পারব না।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ‘ইউ পেনশন’ মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমেই এখন থেকে ব্যক্তি পর্যায়ে সর্বজনীন পেনশনের স্কিম বা চাঁদা দেওয়া যাবে। মোবাইল থেকে লগইন, যাবতীয় তথ্য যাচাই করা এবং নোটিফিকেশন পাবেন গ্রাহকরা। অ্যাকাউন্টের নমিনি পরিবর্তন বা অন্যান্য সব কাজই অ্যাপসের মাধ্যমে করা সম্ভব।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সরকারি কর্মচারী ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় আনার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। এই স্কিমে কোনো ভুলত্রুটি থাকলে তা সংশোধনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্কিমে চাকরিজীবী, শিক্ষকসহ সব পেশার মানুষ অংশ নিচ্ছেন না। এটি কেন হচ্ছে এবং মানুষের অনীহা কোথায় সেটি খতিয়ে দেখতে হবে।