কেইপিজেডে আন্তর্জাতিক মানের টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়

২৫ একর জমিতে ৭ ক্যাম্পাস, একসাথে পড়বে ৮শ শিক্ষার্থী । ৮০ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবে । নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে, ২০২৬ সালে কার্যক্রম শুরু : কর্তৃপক্ষ

এম নুরুল ইসলাম, আনোয়ারা | রবিবার , ২০ জুলাই, ২০২৫ at ৬:২৫ পূর্বাহ্ণ

আন্তর্জাতিক মানের সুযোগসুবিধা রেখে আনোয়ারার কেইপিজেডে নির্মিত হয়েছে দৃষ্টিনন্দন টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়। ২৫ একর জমিতে নির্মিত এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮শ শিক্ষার্থী পোশাক শিল্পের ওপর চার বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা (এমএসসি) কোর্সে পড়ালেখা করবে। পোশাক কারখানার শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়নের ওপর বিভিন্ন মেয়াদের বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ কোর্সের সুবিধা রেখে নির্মিত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭টি ক্যাম্পাস। সাথে আছে গ্যালারিযুক্ত খেলার মাঠ ও সুইমিং পুল। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অনুমোদন পেলে ২০২৬ সালের শুরুতে এ ইউনিভার্সিটির কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছে কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ। এ বিশ্ববিদ্যালয় চালু হলে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে নতুন দিগন্ত রচিত হবে।

কেইপিজেড সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের পোশাক ও কারিগরি শিল্পে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। এর মধ্যে পোশাক ডিজাইন ও প্যাটার্ন তৈরি, বিভিন্ন ধরনের টেক্সটাইল সামগ্রীর জ্ঞান, সেলাই ও পোশাক তৈরির বিভিন্ন ধাপ, সেই সাথে কারিগরি দক্ষতা যেমন ওয়েল্ডিং, রেফ্রিজারেশন ও এয়ার কন্ডিশনিং, বিভিন্ন মেশিনারিজ মেইনটেন্যান্স ইত্যাদি প্রশিক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ। তারই ধারাবাহিকতায় পোশাক শিল্পে শ্রমিকদের দক্ষতা অর্জনের জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা নেওয়া হয়।

বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের ফ্যাশন ডিজাইনসহ যাবতীয় কারিগরি প্রশিক্ষণ ও চার বছর মেয়াদী টেক্সটাইল ফ্যাশন ডিজাইনের ওপর গ্র্যাজুয়েশন কোর্স চালু এবং কোরিয়ান ইপিজেড ও ইয়ং ওয়ান গ্রুপে কর্মরত ৮০ হাজার শ্রমিককর্মচারীর পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিসহ দেশের বৃহত্তর গোষ্ঠীর ভাগ্যোন্নয়নের জন্য ইয়ং ওয়ান গ্রুপ ও কোরিয়ান ইপিজেডের চেয়ারম্যান কিহাক স্যাংয়ের পরিকল্পনায় কেইপিজেড কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অর্থায়নে ২৫ একর জমিতে বিশ্বমানের টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হয়। ৮শ শিক্ষার্থীর আবাসন সুবিধাসহ সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সব ধরনের সুবিধা রাখা হয়েছে। এটি অনুমোদন লাভের পর সব ঠিক থাকলে আগামী বছর চালু করা হবে।

বাংলাদেশের পোশাকশিল্পে কারিগরি দক্ষতা অর্জনে এই বিশ্ববিদ্যালয় অবদান রাখবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ বিশ্ববিদ্যালয় চালু হলে দক্ষ জনশক্তি বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে। সেই সাথে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানিতে এই বিশ্ববিদ্যালয় বিরাট ভূমিকা রাখবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা চার বছর মেয়াদী টেক্সটাইল বিষয়ক শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগসুবিধা ভোগ করবেন।

দেশের ক্রমবর্ধমান বেকার সমস্যা লাঘবে সর্বসাধারণ এ ইউনিভার্সিটিতে প্রশিক্ষণ নিতে পারবে। এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশিক্ষণার্থী ও শিক্ষার্থীরা পোশাক ডিজাইন ও প্যাটার্ন তৈরি, পোশাক ডিজাইন করা, বিভিন্ন মাপের পোশাকের জন্য প্যাটার্ন তৈরি করা এবং তা কাপড়ে স্থানান্তর করার প্রশিক্ষণ, কাপড়ের গঠন, প্রকারভেদ এবং সেগুলোর যত্ন নেওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে বাস্তব জ্ঞান, বিভিন্ন ধরনের সেলাই মেশিন পরিচালনা করা, পোশাকের বিভিন্ন অংশ জোড়া দেওয়া এবং ফিনিশিংয়ের কাজ ভালোভাবে জানা, পোশাক তৈরির জন্য ব্যবহৃত মেশিনের ত্রুটি নির্ণয় এবং মেরামত করার প্রশিক্ষণ, ইলেকট্রিক্যাল মেইনটেন্যান্স, অটোক্যাড, কম্পিউটার এইডেড ডিজাইন সফটওয়্যার ব্যবহার করে নকশা তৈরি করার প্রশিক্ষণ, ওয়েল্ডিং (আর্ক ও গ্যাস), বিভিন্ন ধাতু জোড়া লাগানোর জন্য ওয়েল্ডিং করার প্রশিক্ষণ, রেফ্রিজারেশন ও এয়ার কন্ডিশনিং, রেফ্রিজারেশন এবং এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম ইনস্টল ও মেরামত করার প্রশিক্ষণসহ প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

কেইপিজেডের উপমহাব্যবস্থাপক মুশফিকুর রহমান বলেন, কেইপিজেড টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ইতোমধ্যে ৭টি ক্যাম্পাস নির্মিত হয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কেইপিজেড ও ইয়ং ওয়ান গ্রুপের ৮০ হাজার শ্রমিককর্মচারী প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সারা দেশের শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করার সুযোগ পাবেন। পোশাক শিল্পে দক্ষ জনশক্তি ও শ্রমিকদের প্রফেশনাল স্কিল, পোশাক তৈরির পেশাগত দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রধান উপদেষ্টা ঘোষিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন : প্রেস সচিব
পরবর্তী নিবন্ধপটিয়ায় বিএনপি নেতাকর্মীদের মহাসড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ