ভারতের রাজ্যসভায় সাংসদদের একাংশের প্রতিবাদের মধ্যে পাস হওয়া নতুন কৃষি সংস্কার বিলের বিরুদ্ধে এবার রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করেছে কৃষকরা। এই বিল কৃষকদের স্বার্থবিরোধী বলে অভিযোগ তাদের। শুক্রবার ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের প্রধান কৃষক সংগঠনগুলো এদিন ভারত বনধের ডাক দিয়েছে। রাজধানী নয়াদিল্লি অভিমুখী মহাসড়ক তারা বন্ধ করে দিয়েছে, বিভিন্ন রাজ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ট্রেন চলাচলও। পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, ঊড়িষ্যা এবং পশ্চিমবঙ্গে কৃষকরা বিক্ষোভ করেছে। এর মধ্যে পাঞ্জাব এবং হরিয়ানায় বিক্ষোভ–বনধ এর প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে বেশি। পাঞ্জাব থেকে বিবিসি’র এক সংবাদদাতা জানিয়েছেন, প্রায় সব কৃষক ইউনিয়ন রাজ্যটিতে ধর্মঘট ডেকেছে। রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভে সমবেত হয়েছে নারী–পুরুষ কৃষকরা। তারা রেললাইনের ওপর অবস্থান নিয়েছে। লড়াই করে যেতে তারা বদ্ধপরিকর।
কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, বিহারেও চলছে প্রতিবাদ–বিক্ষোভ। অমৃতসর, জালন্ধর, লুধিয়ানা, চণ্ডীগড়সহ বিভিন্ন জায়গায় সড়ক অবরোধ করেছে বিভিন্ন কৃষক সংগঠন। কংগ্রেসসহ ভারতের বেশিরভাগ বিরোধী দল কৃষকদের এই বিক্ষোভে সমর্থন দিচ্ছে। পাঞ্জাবের জালন্ধরের কাছে অমৃতসর–দিল্লি সড়ক অবরোধ করেছে ভারতীয় কিষান ইউনিয়ন ও রেভল্যুশনারি মার্ঙিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া। এনডিএর শরিক শিরোমণি আকালি দলও কৃষি বিলের প্রতিবাদে পাঞ্জাবজুড়ে গণপরিবহন বন্ধের কর্মসূচি নিয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
হরিয়ানার অম্বালায় বিক্ষোভের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে দিল্লি–চণ্ডীগড় বাস। কিষান মজদুর কমিটি বৃহস্পতিবার থেকেই পাঞ্জাবে ট্রেন চলাচল বন্ধ করেছে। শুক্রবারও তার অন্যথা হয়নি। পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায়, সেজন্য বিভিন্ন রাজ্যে প্রচুর পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে। বিশেষ করে দিল্লির আশেপাশে।
দিল্লির উপকণ্ঠে নয়ডায়ও চলছে কৃষক বিক্ষোভ। ভারতীয় কিষান ইউনিয়ন রাস্তা অবরোধ করে বিলের প্রতিবাদ করায় যান চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। মহারাষ্ট্রেও বাম সমর্থিত অল ইন্ডিয়া কিষান সভার ৩০ হাজারেরও বেশি সদস্য রাজ্যের প্রায় ২১টি স্থানে বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে।
সরকার এবং বিরোধীদের ভাষ্য: ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় আগেই পাস হওয়া কৃষি সংস্কারের দুটি বিল গত ২০ সেপ্টেম্বর উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় কণ্ঠভোটে পাস হয়। ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) বলছে, কৃষি সংস্কার সংক্রান্ত এসব বিলে ভারতের কৃষকদের বৃহৎ ক্রেতাদের কাছে সহজে পণ্য বিক্রির সুবিধা করে দেওয়া হয়েছে।