কৃষকের ঘরে সম্প্রতি উঠেছে আমন ধান। বলা যায়, এখন ধানের ভরা মৌসুম চলছে। ধানের এই ভরা মৌসুমেও বাড়ছে চালের দাম। গতকাল চালের আড়তদাররা বলছেন, হঠাৎ করে মোকাম মালিকরা ধানের বস্তায় ৫০ থেকে ১০০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন। মিল মালিকরা ধানের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে চালের দাম বৃদ্ধি করছেন। চলতি আমন মৌসুমে রেকর্ড ধানের উৎপাদন হয়েছে। কারণ চলতি আমন মৌসুমে বন্যা, খরা কিংবা ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছিল না। ফলে কৃষকের ফসলহানি হয়নি। তবে অভিযোগ নাকচ করে মিল মালিকরা বলছেন, ধানের বাজার বাড়েনি, উল্টো কমছে। তাই চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আছে। কেবল ভারতীয় আমদানি চালের দাম কিছুটা বেড়েছে।
নগরীর চালের আড়ত চাক্তাইয়ের চালপট্টি ও পাহাড়তলীতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাজারে করে নাজিরশাইল সিদ্ধ, জিরাশাইল সিদ্ধ, মিনিকেট আতপ, মিনিকেট আতপ, কাটারীভোগ আতপ চালের দাম বস্তাপ্রতি সর্বোচ্চ ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তবে চিনিগুড়া চালের দাম বস্তায় বেড়েছে ৩০০ টাকা পর্যন্ত।
চালের আড়তদাররা জানান, বর্তমানে জিরাশাইল সিদ্ধ বস্তায় ১০০ টাকা বেড়ে গিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৭৫০ টাকায়। এছাড়া মিনিকেট সিদ্ধ ১০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৮০০ টাকা, দেশী পাইজাম সিদ্ধ ৫০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৭০০ টাকা, স্বর্ণা পাইজাম সিদ্ধ বস্তায় ১০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৫৫০ টাকা, দেশি কাটারিভোগ সিদ্ধ (২৫ কেজি বস্তা) ৫০ টাকা বেড়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকা, কাটারিভোগ আতপ বস্তাপ্রতি ১০০ টাকা বেড়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার টাকা, মিনিকেট আতপ ৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫০ টাকা, নাজিরশাইল সিদ্ধ (২৫ কেজি বস্তা) ৫০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৫০ টাকা, স্বর্ণা সিদ্ধ ৫০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৫৫০ টাকা, বেতি আতপ ২০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৬০০ টাকা এবং মোটা সিদ্ধ ৫০ টাকা বেড়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২০০ টাকায়। এছাড়া চিনিগুড়া ৩০০ টাকা বেড়ে গিয়ে ৫ হাজার ৮০০ টাকা।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম রাইচ মিলস মালিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ রফিক উল্লাহ দৈনিক আজাদীকে বলেন, বাজারে ধানের দাম কমতির দিকে রয়েছে। বর্তমানে স্বর্ণা–৫ ধান মণপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১৭০ টাকা থেকে ১ হাজার ১৮০ টাকা, বিআর ১১ ধান (মোটা) প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১৫০ টাকা এবং বিআর ৫১ ধান প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১৯০ টাকা। এসব ধান এক সপ্তাহের আগেও বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। তাই চালের বিষয়টি শতভাগ সঠিক নয়। দেশীয় চালের দাম বাড়েনি। জানতে চাইলে পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম নিজাম উদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, হঠাৎ করে দেশীয় চালের বাজার বেড়ে গেছে। মোকামে চালের দাম বেশি রাখছেন। এটির সঠিক কোনো ব্যাখা নাই। এই মূহুর্তে চালের দাম বাড়াটা অস্বাভাবিক। কারণ মাত্র কৃষকের ঘরে আমন ধান উঠেছে।












