কুলগাঁওয়ে তিন ভাই বোনকে হত্যায় দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড

২০ বছর আগের ঘটনা

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ at ৬:১৪ পূর্বাহ্ণ

নগরীর বায়েজিদের কুলগাঁওয়ে ঘরে ঢুকে তিন ভাই বোনকে গুলি করে খুনের দায়ে দুই ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাদের দুজনকে ২ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। তারা হলেন, বায়েজিদের বালুচরার মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে আবুল কাশেম প্রকাশ জামাই কাশেম ও কুলগাঁওয়ের মৃত আবুল বশরের ছেলে ইউসুফ প্রকাশ বাইট্টা ইউসুফ। গতকাল চট্টগ্রামের ১ম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ কামাল হোসেন শিকদার এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় দুই আসামি কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন। পরে তাদের কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এম এ ফয়েজ আজাদীকে বলেন, ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে বিচারক এ রায় ঘোষণা করেছেন। আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট। আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা চেয়েছিলাম। আমরা মনে করছি, বাদী ন্যায়বিচার পেয়েছেন। তিনি বলেন, দুই আসামি জামিনে ছিলেন। গত পরশু যুক্তিতর্কের দিন জামিন বাতিল করে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। আদালত সূত্র জানায়, ২০০৪ সালের ২৯ জুন নগরের বায়েজিদ থানাধীন কুলগাঁও এলাকায় মোটরসাইকেল যোগে এসে ঘরে ঢুকে আপন তিন ভাই বোনকে গুলি করে খুন করা হয়। তিন ভাই বোন হলেন, সাইফুল আলম প্রকাশ ছোট সাইফুল, তার ভাই মোহাম্মদ আলমগীর ও বোন মনোয়ারা বেগম। এ ঘটনায় সাইফুলের স্ত্রী আয়েশা আক্তার বাদী হয়ে পরদিন বায়েজিদ থানায় একটি মামলা করেন। এতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুইজন ছাড়াও আরো দুজনকে আসামি করা হয়। তারা হলেন, মো. নাছির প্রকাশ গিট্টু নাছির ও ফয়েজ মুন্না। ইতিমধ্যে এ দুজন র‌্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছেন। আয়েশা আক্তারের দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, জমিজমার বিরোধকে কেন্দ্র করে আসামিরা প্রকাশ্যে মোটরসাইকেলযোগে এসে এবং বাউন্ডারি দেওয়াল টপকে ঘরে ঢুকে গুলি করে তিন ভাই বোনকে খুন করে। আদালত সূত্র আরো জানায়, তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করলে ২০১৭ সালের ৫ জুলাই আদালত আসামি কাশেম ও ইউসুফের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। আদালত সূত্র জানায়, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি শিবিরের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। ২০১০ সালে নিজেদের আওয়ামী লীগের কর্মী পরিচয় দিয়ে তারা মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। এতে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হক দানু সুপারিশ করেন। সেই অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে রাজনৈতিক বিবেচনায় তাদের অব্যাহতি দিতে আদেশও হয়। কিন্তু আদালত সেটি গ্রহণ করেননি। এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এম এ ফয়েজ আজাদীকে বলেন,

মন্ত্রণালয়ের আদেশ ছিল তাদের অব্যাহিত দেয়ার। কিন্তু আদালত সেটি গ্রহণ করেননি। তিনি বলেন, ভিকটিম মনোয়ারা বেগম গর্ভবতী ছিলেন। তাকেও ছাড়েননি আসামিরা। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন, সাক্ষ্যগ্রহণ, যুক্তিতর্ক শুনানি করে এ রায় ঘোষণা করেছেন।

আদালত সূত্র আরো জানায়, ভিকটম সাইফুল আলম প্রকাশ ছোট সাইফুলও শিবিরের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমৌসুমের প্রথম বৃষ্টি, কিছুটা স্বস্তি নগরবাসীর
পরবর্তী নিবন্ধএবার চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল যাবে পাইপ লাইনে