খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য পদত্যাগের দাবিতে চট্টগ্রাম–রাঙামাটি–খাগড়াছড়ি সড়ক ‘ব্লকেড’ (অবরোধ) করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা। গতকাল বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেইট সংলগ্ন চট্টগ্রাম–রাঙামাটি–খাগড়াছড়ি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা।
এ সময় সড়কের উভয়পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় আধঘণ্টা পর বিকাল ৬টায় এ অবরোধ শেষ হয়। ব্লকেড কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা ‘জুলাইয়ের বাংলাদেশ, ফ্যাসিবাদের হয়নি শেষ’, ‘কুয়েটের সাথে আছে, চবিয়ান চবিয়ান’, ‘ভিসি মাসুদ স্বৈরাচার, এই মুহূর্তে গদি ছাড়’, ‘কুয়েট তোমার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
কর্মসূচিতে শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, জুলাই এখনো শেষ হয়নি। জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশে কোন স্বৈরাচারের ঠাঁই হবে না। কুয়েট ভিসি সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে। আজকের মধ্যে ভিসি মাসুদ পদত্যাগ না করলে আমরা আবার জুলাইয়ের সেই দেশব্যাপী ব্লকেড কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হব। শিক্ষার্থী মো. ইসহাক ভূইয়া বলেন, কুয়েটে বহিরাগত যেসকল সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো ৩৭ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আবার শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ভিসির মদদে মামলাও করা হয়েছে। এসবের প্রতিবাদে ও কুয়েট ভিসি পদত্যাগের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রায় ৫০ ঘণ্টার বেশি অনশন কর্মসূচি পালন করেছে। কিন্তু তারপরও শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও কুয়েট প্রশাসনের নিকট শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
চবি : কুয়েট শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে এবং কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশন করছেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সাত সদস্য। গতকাল বুধবার বিকেল ৫টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে অনশনে বসেন তারা। এছাড়া চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) কয়েকজন শিক্ষার্থীও চুয়েট স্বাধীনতা চত্বরে অনশন কর্মসূচি পালন করেন।
চবিতে অনশনরত মেহেদী হাসান বলেন, কুয়েটের উপাচার্য যতক্ষণ পর্যন্ত পদত্যাগ না করছেন ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আমরণ অনশন চলবে। আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর অবিচার করার কারণে আমরা উপাচার্যের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। পাশাপাশি কুয়েট শিক্ষক সমিতিসহ যারা উপাচার্যের পেছনে থেকে কলকাঠি নাড়ছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। অনশনকারী নওশীন তাবাসসুম যূথী বলেন, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের পক্ষ থেকে আমরা সাতজন আজ অনশনে বসেছি। আমরা সবাই জানি কীভাবে কুয়েটে শিক্ষার্থীদের হেনস্তা করা হয়েছে। তাদের অনেকের খুবই শোচনীয় অবস্থা। তাই আমাদের প্রত্যেকের একটাই দাবি–ভিসি মাসুদের পদত্যাগ।
গতকাল বুধবার রাত ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিতে অনশনরত ছিল। শিক্ষার্থীরা জানান, কুয়েটের উপাচার্য পদত্যাগ না করলে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
চুয়েট : রাউজান প্রতিনিধি জানান, গতকাল বুধবার দুপুরে চুয়েট স্বাধীনতা চত্বরে অনশন করেছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। কর্মসূচি চলাকালে তাদের হাতে ছিল প্লেকার্ড ও ফেস্টুন। অনশনকারী জানান, তাদের এই প্রতীকী কর্মসূচি মূলত কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে থাকা, কুয়েট শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি ও তাদের কষ্ট ভাগাভাগি করে নেয়ার জন্য। যদি ১২ ঘণ্টার মধ্যে কুয়েট উপাচার্য পদত্যাগ না করে তাহলে আমরা আরো কঠোর কর্মসূচি নিয়ে কুয়েটের শিক্ষার্থীদের পাশে থাকব।