চট্টগ্রামের জন্য লাকি গ্রাউন্ড নোয়াখালীর শহীদ ভুলু স্টেডিয়াম। আর এখান থেকেই চট্টগ্রাম পৌঁছে গেছে জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনাল পর্বে। তার আগে এ মাঠে ৩টি ম্যাচে অংশ নিয়েছে চট্টগ্রাম। কিন্তু কখনোই বিফল হয়নি। ৩টি ম্যাচের একটিতে ড্র করলেও বাকি দুটি ম্যাচে জয়লাভ করেছে চট্টগ্রাম। গতকাল শনিবার সেই নোয়াখালীতে জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের কোয়ার্টার ফাইনাল জিতে ঢাকা কমলাপুর স্টেডিয়ামে সেমিফাইনালে খেলার টিকেট নিশ্চিত করে ফেলে চট্টগ্রাম। প্রতিযোগিতার প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে গতকাল চট্টগ্রাম প্রথমে ০–১ গোলে পিছিয়ে থাকার পরও দাপটে খেলে ২–১ গোলে কুমিল্লা জেলাকে হারিয়ে দেয়। এ জয়ের ফলে চট্টগ্রাম জেলা আগামী ১১ নভেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য টুর্নামেন্টের প্রথম সেমিফাইনালে দিনাজপুর জেলার বিপক্ষে খেলবে। দিনাজপুর জেলা গতকাল নীলফামারিতে অনুষ্ঠিত ৩য় কোয়ার্টার ফাইনালে ১–০ গোলে বগুড়া জেলাকে পরাজিত করে। গতকাল কিন্তু খেলায় খুব বেশি জমজমাট লড়াই হয়নি। খেলার শুরু থেকেই চট্টগ্রাম কুমিল্লার রক্ষণভাগে একের পর এক আক্রমণ শানায়। খেলার ৩৫ মিনিটে গোল হজম করার আগে ৩ হতে ৪টি সুযোগ পেয়েছিল চট্টগ্রাম। কিন্তু ওসব আক্রমন থেকে গোল করতে ব্যর্থ হয় তারা। এ সময়ে খেলার ১১ মিনিটে দিদার কুমিল্লা সীমানায় একেবারে ফাঁকায় বল পেয়ে যান।
কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে তিনি তা বাইরে মেরে নিশ্চিত সুযোগ নষ্ট করেন। ক’মিনিট পর অধিনায়ক মো. রোমানও একইভাবে গোলকিপারের হাতে মেরে দেন। এ থেকেও চট্টগ্রাম গোল পেতে বঞ্চিত হয়। খেলার ২৫ মিনিটে ডানপ্রান্তে রোমানের কাটব্যাকে নিয়মিত একাদশে সুযোগ পাওয়া ফাহিমের শট কুমিল্লার ক্রসবারে লেগে প্রতিহত হয়। এরই মাঝে খেলার ধারার বিরুদ্ধে গোল হজম করে পিছিয়ে পড়ে চট্টগ্রাম। ৩৫ মিনিটে মধ্যমাঠ থেকে বল পেয়ে কুমিল্লার মেহেদি একক প্রচেষ্টায় বঙে ঢুকে পড়েন। আর চমৎকার প্লেসিং শটে বল চট্টগ্রামের জালে জড়িয়ে দেন (১–০)। চট্টগ্রামের রক্ষণভাগকে এক্ষেত্রে ব্যর্থতার পরিচয় দেয়। চট্টগ্রামের দুই ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়েই মেহেদি বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন। দ্বিতীয়ার্ধে চট্টগ্রাম জেলা কৌশলী ভূমিকা নেয়। কোচ নাজিমউদ্দিন নাজু দু’জন খেলোয়াড় বদল করেন। পাশাপাশি খেলার কৌশলও পরিবর্তন করে নেন। এতেই কাজ হয়। ৭ মিনিটের মধ্যেই চট্টগ্রাম গোল পায়। চট্টগ্রামের গোলের উৎস ছিলেন লেফট ব্যাক এবং লম্বা থ্রো করতে অভিজ্ঞ আবু বকর ছিদ্দিক বাবু। তার ছুঁড়ে দেয়া বল কুমিল্লার বঙে গিয়ে পড়ে। বঙে সৃষ্ট জটলায় বল পেয়ে যান ফাহিম। তিনি বাঁ পায়ের শটে গোল করেন (১–১)। সমতায় ফিরে উজ্জীবিত হয়ে উঠে চট্টগ্রাম জেলা দল। মাঝে কুমিল্লার আরাফাতের বিপদজনক শট চট্টগ্রামের কিপার নেছারুল ইসলাম হিরো বীরের মতোই ঠেকিয়ে দেন। ২৮ মিনিটে এগিয়ে যেতে সক্ষম হয় চট্টগ্রাম জেলা। এ সময় আবদুল্লাহ নোমান দীপুর কর্নার থেকে জাহেদুল আলম বল পান। আর নিখুঁত প্লেসিং শটে বল জালে জড়িয়ে দেন (২–১)। উল্লাতে মেতে উঠে চট্টগ্রাম থেকে খেলা দেখতে নোয়াখালী যাওয়া চট্টগ্রামের সমর্থকরা। শেষ দিকে আবারো গোল হতে পারতো। আবু বকর ছিদ্দিক বাবুর লং থ্রো থেকে ফাহিমের হেড কুমিল্লার সাইডবার ঘেঁষে বাইরে চলে যায়। তৃতীয় গোল থেকে বঞ্চিত হয় চট্টগ্রাম। ফলে ২–১ গোলের জয় নিয়েই চট্টগ্রাম জেলা দলকে সন্তুষ্ঠ থাকতে হয়। এ খেলায় ম্যান অব দি ম্যাচের পুরস্কার পান চট্টগ্রামের গোলরক্ষক নেছারুল ইসলাম হিরো।
গতকাল চট্টগ্রাম থেকে জেলা দলকে উৎসাহ দিতে নোয়াখালী যান সিডিএফএ সভাপতি এস এম শহীদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আ ন ম ওয়াহিদ দুলাল, যুগ্ম সম্পাদক সালাউদ্দিন জাহেদ, নির্বাহী সদস্য মাহামুদুর রহমান মাহাবুব, হারুন আল রশিদ, জসিম আহমেদ, সিজেকেএস কাউন্সিলর নাছির মিয়া, ফরিদ আহমেদ বাবু ও রায়হান উদ্দিন রুবেল, প্রবীণ কুমার ঘোষ ও সাইফুল্লাহ চৌধুরী, সোহেল আহমেদ, সিজেকেএস ক্লাব সমিতির সহ–সভাপতি আমিনুল ইসলাম ও মাহাবুবুল আলমসহ আগত শতাধিক সমর্থক। চট্টগ্রাম জেলা ফুটবল দলের ম্যানেজার সারওয়ার আলম চৌধুরী মনি জানিয়েছেন আগামী ১০ নভেম্বর সকালে চট্টগ্রাম দল সেমিফাইনাল খেলতে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা দেবে। পরদিন ১১ নভেম্বর মঙ্গলবার দুপুর ২টায় কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে প্রথম সেমিফাইনালে তারা দিনাজপুরের মোকাবেলা করবে।











