কি ছু জা না কি ছু অ জা না

প্রবীর বড়ুয়া | বুধবার , ১৭ নভেম্বর, ২০২১ at ১০:৪৯ পূর্বাহ্ণ

গুহা

  • গুহা বিভিন্ন ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি হতে পারে। এগুলো মধ্যে আছে রাসায়নিক প্রক্রিয়া, পানির দ্বারা ক্ষয়, টেকটোনিক ও আগ্নেয়গিরির শক্তি, উদ্ভিজ্জাণু এবং চাপ। সবচেয়ে সাধারণ যে উপায়ে গুহা সৃষ্টি হয় সেটি হলো পানি যখন গাছপালা মরে সৃষ্টি হওয়া কার্বন ডাইঅক্সাইডের সাথে মিশে তখন রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি হয় কার্বনিক এসিড। এই এসিড পাথর গলিয়ে গহ্বরের সৃষ্টি করে যা ধীরে ধীরে পরিণত হয় গুহায়। সমুদ্রের তীরে এবং মাটির ভেতর বরফ গলেও গুহা সৃষ্টি হতে পারে।
  • একজন মানুষের স্থান সংকুলান হবে এরকম আকারের একটি গুহা সৃষ্টি হতে ১ লাখেরও বেশি বছর সময় লেগে যায়।
  • মানুষ গুহাকে যেমন থাকার, খাবার সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার করেছে তেমনি ব্যবহার করেছে মৃত মানুষকে কবর দেয়ার জন্য এবং ধর্মীয় স্থান হিসেবেও। গুহাতে পাওয়া গেছে অনেক প্রাচীন ধনসম্পদ এবং নৃতাত্ত্বিক সামগ্রীও।
  • মাটির নিচে একটি গুহা সর্বোচ্চ ৯,৮০০ ফুট (৩,০০০ মিটার) পর্যন্ত গভীরে যেতে পারে। তার নিচে গেলে পাথরের চাপ এত বেড়ে যাবে যে গুহাটি বিস্ফোরিতও হতে পারে।
  • বিশ্বের গভীরতম গুহা ভেরিয়ভকিনা অবস্থিত দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চলের আবখাজিয়ায়। এটি ৭,২৫৭ ফুট (২,২১২ মিটার) গভীর এবং ৮.৪ মাইল (১৩.৫ কিলোমিটার) দীর্ঘ।
  • বিশ্বের দীর্ঘতম গুহা ম্যামথ কেভ অবস্থিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকিতে যার দৈর্ঘ্য ৪২০ মাইল (৬৭৫.৯ কিলোমিটার)।
  • কিছু প্রাণী গুহার মুখে থাকতে পছন্দ করে কিন্তু গুহার ভেতরে বাস করে না। এরকম প্রাণীর মধ্যে আছে শিয়াল, ভালুক, মাকড়শা, তেলাপোকা, ব্যাঙ, স্যালামান্ডার (গিরগিটি সদৃশ উভচর প্রাণী) ইত্যাদি।
  • যেসব প্রাণী সবসময় গুহার ভেতরেই বসবাস করে, কোনোসময়ই বাইরে বের হয় না সেগুলোকে ইংরেজিতে বলা হয় ট্রগলোবাইট। এই প্রাণীগুলো সচরাচর গুহার ভেতরের জীবনে এতটাই অভ্যস্থ হয়ে পড়ে যে তাদের দৃষ্টিশক্তি ও গায়ের রঙ কম থাকে। এরকম একটি প্রাণী হলো ব্লাইন্ড কেভ ফিশ যার কোনো চোখ এবং রঙ নেই।
  • বাদুড় কিন্তু ট্রগলোবাইট নয় কারণ তারা গুহাকে ব্যবহার করে ঘুমানোর জন্য এবং খাবারের সন্ধানে বাইরে বের হয়।
  • প্রাচীন মানবেরা গুহার দেওয়ালে নানা রকম চিত্র ও ছবি আঁকত। বৈজ্ঞানিকরা মনে করেন নিয়ানডারথাল মানুষেরা আইবেরিয়ান উপদ্বীপে গুহায় এঁকেছিল ৬৪ হাজার বছর আগে এবং বোর্নিওতে পশুর ছবি এঁকেছিল ৪০ হাজার বছর আগে।
  • মায়ানরা গুহার উপর মন্দির বানাত অথবা মন্দিরগুলোকে বানাত গুহার মতো দেখানোর জন্য কারণ তারা বিশ্বাস করত পরকালে যাওয়ার জন্য প্রবেশপথ ছিল গুহা। অনেক প্রাচীন মানব গুহাকে পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচনা করত।
  • পৃথিবীতে যত গুহা আছে সেগুলোর মধ্যে মাত্র ১ ভাগ গুহা আবিষ্কৃত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
  • আলো না থাকার কারণে গুহার ভেতর অন্ধকারে মানুষের চোখের পক্ষে মানিয়ে নেয়া সম্ভব নয়।
  • বন্যাপ্রবণ হওয়ার কারণে গুহা কিন্তু বেশ বিপদজনক হয়ে উঠতে পারে।
  • কিছু কিছু গুহার ভেতরের কক্ষ পুরো একটা শহরের সমানও হতে পারে।
  • ভালুকের মতো স্তন্যপায়ী প্রাণী প্রায়ই গুহাকে শীতনিদ্রা যাপনের জন্য ব্যবহার করে থাকে।
পূর্ববর্তী নিবন্ধশুরুতেই নানা সংকট
পরবর্তী নিবন্ধকাক কোকিলের ঠোঁট মা