নগরীর বায়েজিদের রৌফাবাদ এলাকায় এক কিশোরী গৃহকর্মীকে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। এতে মাহবুব আলম ও তার স্ত্রী নিলিমা শামীমকে আসামি করা হয়েছে। গতকাল নগরীর বায়েজিদ থানায় ভিকটিম কিশোরী নিজে বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) কাজী তারেক আজিজ দৈনিক আজাদীকে বলেন, ভিকটিম কিশোরী এখনো চমেকে চিকিৎসাধীন। তার চিকিৎসা চলছে। ঘটনায় একটি মামলাও হয়েছে। এতে গৃহকর্তা মাহবুব আলম ও নীলিমা শামীমকে আসামি করা হয়েছে। ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে মামলাটি করেন। তিনি বলেন, অভিযুক্ত দম্পতি এখনো লাপাত্তা। তাদেরকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বাসায় নেই তারা। তবে আমরা চেষ্টা করছি তাদের ধরতে। আমাদের অভিযান চলছে। এদিকে নির্যাতন ও মারধরের শিকার গৃহকর্মী কিশোরীকে আইনি সহায়তা দেওয়ার আগ্রহের কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন। মানবাধিকার সংস্থাটির মহাসচিব আইনবিদ জিয়া হাবিব আহসান দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমরা ভিকটিম গ্রহকর্মীকে আইনি সহায়তা দিতে চাই। আমরা তার কাছে যাব। তার সাথে ও তার পরিবারের সাথে কথা বলব। আমরা তার পাশে আছি। তার পক্ষে আমরা মামলা পরিচালনা করব। গত রোববার দুপুরের দিকে কিশোরী গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটে। বায়েজিদের রৌফাবাদ কলোনির বিহারী মসজিদের পাশে মাহবুব আলম ও নিলীমা শামীম দম্পত্তির বাসায় কাজ করত ওই গৃহকর্মী। ঘটনার পর এ দম্পত্তি পালিয়ে যায়। জানা যায়, গত ৩০ অক্টোবর সন্ধ্যায় বাসার ছাদের গাছে পানি দেওয়ায় ওই কিশোরীকে বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করেন অভিযুক্ত নীলিমা শামীম। মারধরের ঘটনাটি পাশের বাসার এক ব্যক্তি ভিডিও করে বেসরকারি এক টেলিভিশনের প্রতিবেদককে পাঠান। এরপর পুলিশকে বিষয়টি জানানো হলে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের সময় ওই গৃহকর্মী উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, তাকে বেতন দেয় না। আম্মু অসুস্থ থাকতে এখানে (নিলীমার বাসায়) দিয়ে গেছে। এখানে থাকি–খাই। আম্মু আব্বু মারা গেছে। তাকে বিভিন্ন সময়ে মারধর করা হয়েছে জানিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন দেখান। লোহা গরম করে শরীরে লাগিয়ে দেয়া হয় বলে দাবি করেন তিনি। ঘটনার পর পুলিশ জানায়, ওই কিশোরী সাত বছর ধরে নিলীমা শামীমের গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করছিল। তার বাবা মারা গিয়েছেন। তার মা তাকে অভিযুক্তদের বাসায় দিয়ে যান। এর কিছুদিন পর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তার মা মারা যান। কিছুদিন ভালো ব্যবহার করলেও ওই কিশোরীর ওপর অত্যাচার শুরু করেন অভিযুক্তরা। দিনদিন সে অত্যাচার বাড়তে থাকে। ভিকটিম কিশোরীকে কারণে অকারণে মারধর করতেন তারা। রান্নায় কোনো ভুল হলেই নীলিমা শামীম ওই কিশোরীকে স্টিলের খুন্তি আগুনে গরম করে শারীরিক নির্যাতন করতেন।