বান্দরবানে কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের দায়ে ৪ যুবকের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৬ মাস সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। গতকাল রোববার সকালে বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেবুন্নাহার আয়শার আদালত এ আদেশ দেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মো. কায়ছার (২২), মো. রাশেদ (২৩), ওমর ফারুক (১৮) ও মো. হানিফ (২৪)। তারা সকলেই চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ড জঙ্গল পদুয়া এলাকার বাসিন্দা। তবে মো. কায়ছার ছাড়া অপর তিন আসামি পলাতক রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আদালতের তথ্যমতে, সাজাপ্রাপ্ত আসামি মো. রাশেদের সঙ্গে ভুল নম্বরে পরিচয় হয় ধর্ষিতা কিশোরীর। পরিচয়ের পর দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ২০২১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি রাতে মো. রাশেদ ফোনে ওই কিশোরীকে বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে পদুয়া এলাকায় যেতে বলেন। পরদিন কিশোরী চট্টগ্রামের আমিরাবাদ এলাকায় পৌঁছালে প্রেমিক রাশেদ ফোনে কিশোরীকে বলেন–তার একটু দেরি হবে এবং তার বন্ধু ওমর ফারুকের সাথে যেন পদুয়ায় চলে আসে। পরে পদুয়া পৌঁছালে সেখান থেকে কাজীর বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে পাহাড়ের জঙ্গল পথে বান্দরবানের ভাগ্যকুল এলাকায় নিয়ে গিয়ে কিশোরীকে ধর্ষণ করে আসামিরা। পরে কিশোরীর আর্তনাদ শুনে স্থানীয়রা ঘটনাস্থল থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করে। এ সময় ধর্ষক মো. রাশেদ, মো. কায়ছার ও ওমর ফারুকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করে জনতা। এ ঘটনায় পরে কিশোরী বাদি হয়ে বান্দরবান সদর থানায় আসামিদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করে। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের এই রায় প্রদান করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোহাম্মদ ইসমাইল জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত অভিযুক্ত ৪ আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। পুলিশি হেফাজতে থাকা মো. কায়ছারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। অপর পলাতক তিন আসামিকে গ্রেপ্তারপূর্বক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।