কিছু লোক বসে পিআর পদ্ধতির সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয় : খসরু

| বৃহস্পতিবার , ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ৬:৫৬ পূর্বাহ্ণ

ছোট পরিসরের আলোচনায় সংসদ নির্বাচনের সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। গতকাল বুধবার ঢাকার গুলশানে এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, এ পদ্ধতি চালু করতে চাইলে নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে করতে হবে। এদিন বিকালে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির নেতারা। বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে গুলশানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূতাবাসে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে এ রুদ্ধদ্বার বৈঠক চলে।

বৈঠকে বিএনপির পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন অসীম ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন মুনির সাতৌরী। এ দলের অন্যান্য সদস্য হলেন, লুঙ্মেবার্গের (ইপিপি) ইসাবেলা ভিয়েডারলিমা, পোল্যান্ডের (ইসিআর) আরকাদিউস মুলারচিক, এস্তোনিয়ার (রিনিউ ইউরোপ) উর্মাস পায়েট ও নেদারল্যান্ডসের (দ্য গ্রিন্স) কাতারিনা ভিয়েইরা। খবর বিডিনিউজের।

দূতাবাস থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশ যে নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে, এটাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সন্তুষ্ট। ওরা চায়, বাংলাদেশ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গণতন্ত্রের পথে চলুক। এসব বিষয় নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে। এর প্রেক্ষাপটে আগামী দিনে আমরা কী করতে যাচ্ছি, ওদের ভূমিকা কী হবে এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের যে কথাবার্তা হচ্ছে, সেগুলো আলোচনায় উঠেছে। শেষ কথা হলো, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসুক, এটা তারা চায়।

আমীর খসরু বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বজুড়ে সবাই চাচ্ছে, বাংলাদেশে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরে আসুক। এজন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন কাজ করতে চায়। আমরা সবাই মিলে এ কাজটা যত তাড়াতাড়ি সম্পন্ন করতে পারি, সেটা দেশের জন্য মঙ্গল, গণতন্ত্রের জন্য মঙ্গল। নজরুল ইসলাম খান বলেন, গণতন্ত্র সুসংহতকরণের সহযোগিতার পাশাপাশি বাংলাদেশে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নকে আরও সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়েছি। তারা সেটাতে সম্মতি জানিয়েছে এবং আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

পিআর প্রসঙ্গে :

সংসদ নির্বাচনের পিআর পদ্ধতি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, এত সুনির্দিষ্টভাবে এগুলো নিয়ে আলোচনার প্রশ্ন না। আর পিআর তো এখন আলোচনা বিষয়বস্তু না এ কারণে যে, যদি আপনি রাজিও হন, এই নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে হবে না, সেটা তো হবে সংবিধান সংশোধনের পরে। কাজেই আমরা আলোচনা করেছি আসন্ন নির্বাচন নিয়ে। এই নির্বাচনের পরে কী হবে, বা সামনের নির্বাচন নিয়ে কী হবে, এটা আলোচনার বিষয়বস্তু না। পিআর প্রশ্নে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এটা আলোচনা হয়েছে এবং আলোচনার মধ্যে ওরা অনুধাবন করতে পেরেছে যে, পিআর যদি কেউ চায়ও, সেটা তো আগামীতে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সংসদে এসে পাস করতে হবে। জনগণের ম্যান্ডেট নিতে হবে। আমরা কিছু লোক টেবিলের চার দিকে বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব না। এটা আগামী নির্বাচনের পরে জনগণ যদি চায়, তাহলে হবে, না চাইলে হবে না।

পিআর নিয়ে আন্দোলন প্রসঙ্গে :

পিআর পদ্ধতির দাবিতে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের যুগপৎ আন্দোলন প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা দীর্ঘ দিন আন্দোলন একসঙ্গে করেছি। একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে আমরা কিছু বলতে চাচ্ছি না। কিন্তু কবে আমরা পিআর এর আলোচনা শুরু করলাম? কে কবে পিআর এর দাবিতে আন্দোলনসংগ্রাম করেছে। এই যে জুলাই আন্দোলন হলো সেখানে কি পিআর এর দাবি ছিলো? এটা একটা নতুন দাবি নিয়ে নির্বাচন সামনে এই সময়ে এরকম দাবিতে আন্দোলন, এই ধরনের কথাবার্তা আমরা মনে করি তারা বুঝতে পারবে তাদের কী করা উচিত এবং তারা আসন্ন নির্বাচনকে সুষ্ঠু করার ব্যাপারে সহযোগিতা করবে।

আমীর খসরু বলেল, কোনো রাজনৈতিক দলকে বাংলাদেশের মানুষ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলেনি। সুতরাং এটা আলোচনার বিষয় না। কোনো রাজনৈতিক দলের যদি এতে ইচ্ছা থাকে তারা আগামী নির্বাচনে জনগণের কাছে এটা নিয়ে যেতে হবে। ম্যান্ডেট নিয়ে সংসদে আসতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিয়ের সাত দিনের মাথায় ডেঙ্গুতে যুবকের মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধভারতে পালানোর সময় রাউজানের আওয়ামী লীগ নেতা ইরফান গ্রেপ্তার