কিছু ছোট দলের বড় নেতা আরেকটি এক-এগারো সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছেন

মতবিনিময়কালে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আবদুস সালাম মামুন ‘অলি আহমদ চন্দনাইশের মানুষের স্মৃতি থেকে মলিন হয়ে যাচ্ছেন’

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৬ জুলাই, ২০২৫ at ৬:০২ পূর্বাহ্ণ

কতিপয় ছোট দলের বড় নেতা আরেকটি একএগারো সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আবদুস সালাম মামুন। এসময় তিনি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সুনামের ক্ষতি হবে বলেও মন্তব্য করেন। তিনি গতকাল শনিবার দুপুরে নগরের একটি রেস্টুরেন্টে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন। এসময় তিনি এলডিপির প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমদ চন্দনাইশের মানুষের স্মৃতি থেকে মলিন হয়ে যাচ্ছেন বলেও দাবি করেন। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সংগঠকদের অন্যতম আবদুস সালাম মামুন বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে সিনিয়র আইনজীবী হিসেবে প্র্যাকটিস করছেন।

আবদুস সালাম মামুন বলেন, জাতি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার মসৃণ পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত। এ অবস্থায় তথাকথিত কতিপয় ছোট দলের বড় নেতা নিজেদের ব্যক্তিস্বার্থে এবং দেশের গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত করা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বিনষ্ট করার উদ্দেশে বিভিন্ন অজুহাতে অগণতান্ত্রিক পরিস্থিতি তৈরির চক্রান্ত করছেন। অগণতান্ত্রিক পরিস্থিতি তৈরির মাধ্যমে আবার একটি একএগারো এর দিকে যেতে চাইছেন। জাতিকে এ পর্যায়ে সতর্ক হতে হবে, যেন তাদের এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে না পারে।

আবদুস সালাম মামুন বলেন, জাতিকে বিভ্রান্ত করে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার পরিণামে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন দেশের একমাত্র নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সুনামের ক্ষতি হবে। তার সুনামের বিনিময়ে ওয়ানইলেভেনের দিকে জাতিকে ঠেলে দিলে বিশ্বের রাজনীতিতে আমরা অনেক অনেক দূর পিছিয়ে যাব।

ছোট দলের বড় নেতা’ হিসেবে এলডিপির প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমদকে ইঙ্গিত করছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, জাতীয় পর্যায়ে যারা রাজনীতি করছেন, যাদের দল ছোট হলেও নেতা হিসেবে বড় কিংবা বড় বলে দাবি করেন, তাদের উদ্দেশ্যে এ কথা বলছি। চন্দনাইশে ছোট দলের বড় নেতার প্রভাব কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, দল ছোট কিন্তু নেতা বড় তাদের স্থানীয় পর্যায়ে জনগণের কাছে দিন দিন জনপ্রিয়তা হ্রাস পাচ্ছে। তিনি বলেন, চন্দনাইশের মানুষ চাঁদাবাজির কারণে অতিষ্ঠ। বিএনপির লোকজন চন্দনাইশে চাঁদাবাজি করে না। সারা দেশের মতো একটি গণতান্ত্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় গণতন্ত্রের উত্তরণ ঘটানো এবং ক্ষমতার পরিবর্তন ঘটানোর জন্য চন্দনাইশের মানুষ প্রস্তুত। ব্যক্তিগতভাবে চন্দনাইশের জনগণকে যতটুকু বুঝি তারা গণতান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন এবং গণতন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতার পালাবদল হোক চায়, তারা একটি গ্রহণযোগ্য সুষ্ঠু স্বাভাবিক নির্বাচন চায়। কিন্তু চন্দনাইশের কোনো কোনো নেতা তাদেরকে বিভ্রান্ত করার অপপ্রয়াস করছেন।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম১৪ আসনে (চন্দনাইশ ও সাতকানিয়া আংশিক) বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী আবদুস সালাম মামুন চন্দনাইশ আসনে সুসময়ের অনেক ‘কোকিল’ বিএনপিতে উঁকি দিচ্ছেন জানিয়ে বলেন, চন্দনাইশে এমন কিছু লোকের নাম শুনেছি, যাদের নাম এলাকার মানুষ শুনেননি। আমি ১৯৭৯ সালে পার্লামেন্ট নির্বাচনে চন্দনাইশের নির্বাচনী কার্যক্রমের সঙ্গে ছিলাম। ১৯৮০ সালেও ছিলাম। পরবর্তী নির্বাচনগুলোতেও কাজ করেছি, এখনো কাজ করে যাচ্ছি। ২০০১ সালে আমি ব্যক্তিগতভাবে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলাম।

তিনি ২০০৮ সালে দল তাকে চন্দনাইশসাতকানিয়া (আংশিক) আসনে মনোনয়ন দিতে চাইলেও নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না জানিয়ে বলেন, নমিনেশন দিয়ে দল আমাকে মূল্যায়ন করলেও ওই সময় আমি ছিলাম অপ্রস্তুত। তাই নির্বাচনে অংশ নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে মাঠেময়দানে ছিলাম সরব। এসময় আগামী সংসদ নির্বাচনে দল চাইলে বিচারপতি আবদুস সালাম মামুন এমপি প্রার্থী হবেন জানিয়ে বলেন, ইনশাআল্লাহ ধানের শীষ প্রতীকে বিপুল ভোটে জিতে চন্দনাইশ আসন পুনরুদ্ধার করে দলকে উপহার দেব।

অতীতের ন্যায় সামনেও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চন্দনাইশে এলডিপির প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমদএর প্রভাব থাকবে কীনা জানতে চাইলে বলেন, তিনি (অলি আহমদ) যখন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন, তখন চন্দনাইশে তার একটি প্রভাব অবশ্যই ছিল। কিন্তু বিএনপিকে তিনি ভেঙে ফেলেছেন। বিএনপিকে ভেঙে ফেলার কারণে চন্দনাইশের মানুষের মন থেকে উঠে গেছেন। তবে একেবারে মুছে না গেলেও স্মৃতি থেকে তিনি মলিন হয়ে যাচ্ছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরামুতে জুমা পড়তে গিয়ে ঘরে ফিরেনি ৪ কিশোর
পরবর্তী নিবন্ধআওয়ামী লীগের দমন-পীড়ন ছিল এজিদ বাহিনীর সমতুল্য : তারেক