দুই বন্দী
আমার বাবার একটি বাগান ছিল। সেই বাগানে ছিল দুটো খাঁচা। একটিতে থাকতো এক সিংহ। বাবার এক ভৃত্য, সিংহটাকে নিনাভা মরুভূমি হতে এনেছিল। আরেক খাঁচায় থাকে একটি চড়ুই পাখি।
প্রতিদিন ভোরে চড়ুই পাখিটি সিংহকে বলতো: “সাথী ভাই, তোমার দিনটি শুভ হোক।”
ডালিম
এক লোকের একটি ফলের বাগান ছিল। বাগানে অনেক ডালিম গাছ। প্রতি শরৎকালে লোকটি এক রূপার পাত্র ভরে ডালিমগুলো বাড়ির বাইরে রাখতো এবং পাত্রের উপর লোকটি লিখে দিতো: “ আপনাকে শুভেচ্ছা জানাই। এই পাত্র ফল গ্রহণ করুন।”
কিন্তু লোকেরা তা উপেক্ষা করলো। একটি ফলও নিলো না। এই ঘটনায় লোকটি চিন্তিত হলো। পরবর্তী শরৎকালে সে আর বাড়ির বাইরে পাত্র ভরে ডালিম রাখলো না।
কিন্তু বড় অক্ষরে কিছু লেখা লিখে ঝুলিয়ে দিল। তাতে লেখা ছিল: “এখানে এই জায়গার সবচেয়ে ভালো ডালিম পাওয়া যায়। কিন্তু আমরা তা অন্যান্য ডালিমের চাইতে বেশি দামে বিক্রি করবো।”
এরপর দেখা গেল, পাড়ার সমস্ত নারী–পুরুষ দ্রুত এসে ভীড় জমিয়েছে ডালিম কেনার জন্য।
দুই পন্ডিতের কান্ড
অনেককাল আগে আফকার নামে একটি শহর ছিল। সেই শহরে বাস করতো দুই পন্ডিত ব্যক্তি। যারা একে অন্যের পান্ডিত্যকে ঘৃণা ও অবজ্ঞা করতো। তাদের মধ্যে একজন আবার ঈশ্বরের অস্তিত্বকে অস্বীকার করতো এবং অন্যজন ঈশ্বরে বিশ্বাসী ছিল।
একদিন এক বাজারে দুই পন্ডিতের মুখোমুখি দেখা হয়ে গেল। বাজারের মধ্যেই তারা বিবাদ শুরু করে দিল এবং ঈশ্বরের অস্তিত্ব বিষয়ে পক্ষে–বিপক্ষে যুক্তি–তর্কে মেতে উঠলো। অবশেষে ঘন্টাখানেক বাক–বিতন্ডার পর তারা যে যার পথে চলে গেল।
সেদিন বিকেলে ঈশ্বরে অবিশ্বাসী পন্ডিতজন দেবালয়ে গিয়ে বেদীর সামনে অবনমিত হয়ে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলো যে, ঈশ্বর যেন তার অতীত একগুয়েমিকে ক্ষমা করে দেন।
একই সময়ে ঈশ্বরে বিশ্বাসী পন্ডিতজন তার ধর্ম বিষয়ক সব বইগুলো আগুনে পুড়িয়ে ফেললো। এরপর সে একজন নাস্তিকে পরিণত হলো।
বায়ু নিশান
একদিন বায়ু নিশান বাতাসকে বললোঃ “তুমি কেমন বিরক্তিকর ও একঘেয়েভাবে বইছো। তুমি কি অন্যপথে বইতে পারো না? কেবল আমার মুখোমুখি বইছো? তুমি আমার ঈশ্বর প্রদত্ত নিয়মে বিঘ্ন ঘটাচ্ছো।”
বাতাস কোন কথা বললো না। কেবল সেই জায়গার মধ্যেই স্বচ্ছন্দে বইতে লাগলো।
শৃগাল
এক শৃগাল সূর্যোদয়ে তার ছায়ার দিকে তাকিয়ে বলতো: “একটা উট দিয়ে আমি মধ্যাহ্ন ভোজ করবো।” প্রতিদিনই সকালে সে উটের খোঁজে বেরিয়ে পড়তো। কিন্তু দুপুরে শৃগালটি ফিরে এসে তার ছায়াকে বলতো: “এবার একটা ইঁদুর শিকার করতেই হবে।”