মহামারীর বিধিনিষেধ ভেঙে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে বন্দি হল-মার্কের মহাব্যবস্থাপক তুষার আহমেদের সঙ্গে এক নারীর সাক্ষাতের ঘটনায় জেলসুপার ও জেলারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। কাশিমপুর কারাগার ১-এর জেল সুপার রত্না রায় ও জেলার নূর মোহাম্মদকে প্রত্যাহার করে গতকাল রোববার কারা অধিদপ্তরে সংযুক্ত করার আদেশ জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন বলেন, ‘তদন্তের স্বার্থে’ তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ ঘটনায় ডেপুটি জেলার গোলাম সাকলাইন, সার্জেন্ট ইনস্ট্রাক্টর মো. আব্দুল বারী ও সহকারী প্রধান কারারক্ষী মো. খলিলুর রহমানকেও এর আগে প্রত্যাহার করা হয়। হল-মার্ক গ্রুপের আড়াই হাজার কোটি টাকার ঋণ কেলেঙ্কারির মামলার অন্যতম আসামি তুষার কাশিমপুর কারাগারে আটক রয়েছেন বেশ কিছুদিন ধরে। মহামারীর মধ্যে কারাবন্দিদের সঙ্গে বাইরের কারও দেখা করার সুযোগ না থাকলেও গত ৬ জানুয়ারি দুপুরে কাশিমপুর কারাগারে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এক নারী। খবর বিডিনিউজের।
কারা কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় কারাগারের ভেতরে তাদের চলাফেরার দৃশ্য সিটিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। কয়েক দিন আগে একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সেই ভিডিও প্রকাশিত হলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। অবশ্য তার আগেই দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ, প্রত্যাহার করা হয় তিনজনকে, যার খবর সাংবাদিকরা জানতে পারেন গত শুক্রবার। একটি তদন্ত কমিটির প্রধান গাজীপুরের অতিরিক্ত ডিসি (এডিএম) আবুল কালাম সেদিন বলেছিলেন, প্রাথমিক তদন্তে তারা ‘ঘটনার সত্যতা’ পেয়েছেন। সেই ভিডিওতে দেখা যায়, ৬ জানুয়ারি বেলা পৌনে ১টার দিকে কারাগারের প্রবেশ পথে কর্মকর্তাদের কার্যালয় এলাকায় কালো পোশাক পরা তুষার ঘোরাফেরা করছেন। কিছু সময় পর বাইরে থেকে বেগুনি সালোয়ার-কামিজ পরা এক নারী সেখানে আসেন। কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার রত্না রায় ও ডেপুটি জেলার সাকলাইন কারাগারে থাকার সময়ই এ ঘটনা ঘটে। ভিডিওতে দেখা যায়, বেলা ১২টা ৫৫ মিনিটে দুই ব্যক্তির সঙ্গে ওই নারী কারা কর্মকর্তাদের কক্ষ এলাকায় যান। সেখানে ডেপুটি জেলার সাকলায়েন ওই নারীর সঙ্গে কথা বলেন। এরপর কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যান সাকলায়েন। কিছুক্ষণ পর কারাবন্দি তুষার আহমেদ আসেন সেখানে। ওই ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবুল কালামকে প্রধান করে গঠিত জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবিবা ফারজানা ও মো. ওয়াসিউজ্জামান চৌধুরী। আর অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক মো. আবরার হোসেনকে প্রধান করে গঠিত তদন্ত কমিটিতে উপ-সচিব (সুরক্ষা সেবা বিভাগ) মো. আবু সাঈদ মোল্লাহ ও ডিআইজি (ময়মনসিংহ বিভাগ) মো. জাহাঙ্গীর কবির সদস্য হিসেবে আছেন।