কালুরঘাট সেতুর মেরামত ও নবায়নসহ পথচারী পারাপারের জন্য নতুনভাবে পৃথক একটি ওয়াকওয়ে নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছে ১ আগস্ট। নির্মাণ কাজ চলবে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত। এ সময় সেতু দিয়ে সকল ধরনের যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু জাফর মিঞা। এদিকে কালুরঘাট সেতু মেরামতের জন্য বন্ধ হয়ে গেলে সেতু দিয়ে চলাচলরত সকল যানবাহন যাতে ফেরি দিয়ে পারাপার করতে পারে এ জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগ ফেরি সার্ভিস চালু করেছে। মোট তিনটি ফেরির ব্যবস্থা রয়েছে। ২টি ফেরি চলাচলের জন্য দুই পাড়ে রয়েছে। আর ১টি ফেরি ষ্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে। ফেরি সার্ভিস চালুর সাথে সাথে নির্ধারণ করা হয়েছে ফেরি দিয়ে পারাপারে যানবাহনের টোলের হারও।
এ ব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু জাফর মিঞা আজাদীকে বলেন, সেতু মেরামত ও নবায়নের পাশাপাশি পথচারীদের পারাপারের জন্য নতুন ভবে পৃথক একটি ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে। নির্মানকাজ চলাকালীন সময়ে সকল যানবাহন বিকল্প পথে চলাচলের জন্য আমরা বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। সড়ক ও জনপথ বিভাগ ফেরি সার্ভিস চালু করেছে। সেতু সংস্কারের জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ করে সাইটে নির্মাণ সামগ্রী ও ইক্যুইপমেন্ট মোবিলাইজেশন শুরু করেছে। আগস্টে সেতুটির ডেকিং ডিসমেন্টলিং (খেলো) কাজ আরম্ভ করা হবে। ফেরি দিয়েও যানবাহন চলাচল করতে পারবে। ভারী যানবাহন গুলো শাহ আমানত সেতু দিয়েও যাতায়াত করতে পারবে। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, বহুল প্রতীক্ষিত চট্টগ্রাম–দোহাজারী–কক্সবাজার রুটে আগামী সেপ্টেম্বরে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধনের কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে সাংবাদিকদের বেশ কয়েকবার রেলমন্ত্রী এবং রেল সচিব এই কথা জানিয়েছেন। এই লক্ষ্যে দোহাজারী–কক্সবাজার রেল লাইনের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালুর জন্য প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ৯২ বছরের পুরোনো কালুরঘাট সেতুটি। তাই জরুরি ভিত্তিতে এই সেতুটি মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। বিদ্যমান সেতু দিয়ে দক্ষিণ কেরিয়া থেকে আমদানীকৃত আধুনিক উচ্চগতির কোচসহ ১৫ এক্সেল লোডের ইঞ্জিন প্রবেশ করতে পারবে না এবং পুরনো জরাজীর্ণ সেতুটি লোডও নিবে না বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা। তাই রেল কর্তৃপক্ষ শতবর্ষী কালুরঘাট সেতুটি মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছেন।
বুয়েটের পরামর্শ অনুযায়ী সেতুটি মেরামতের জন্য গত জুন মাসের ১৮ তারিখ ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের চুক্তি স্বাক্ষর হয়। মোট ৫৫ কোটি টাকায় সেতুটি সংস্কার করা হচ্ছে। এদিকে দোহাজারী–কক্সবাজার রেল লাইনের ৮৬ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ১০১ কিলোমিটার রেল লাইনের মধ্যে এই পর্যন্ত ৮৫ কিলোমিটার রেল লাইন বসে গেছে বলে জানিয়েছেন দোহাজারী–কক্সবাজার রেল লাইন প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মুহম্মদ আবুল কালাম চৌধুরী। তিনি বলেন, সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে দোহাজারী–কক্সবাজার রুটে আমরা ট্রেন চালু করবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের কথা রয়েছে। এই লক্ষ্যে আমরা কাজ চালিয়ে নিচ্ছি। কক্সবাজার প্রধান স্টেশন বিল্ডিংটি ঝিনুকের আদলে তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ডুলাহাজারা ষ্টেশনের কাজ শেষ হয়েছে। দোহাজারী ষ্টেশনের কাজ আগস্টে শেষ হবে। উদ্বোধনের আগে চকরিয়া এবং রামু ষ্টেশনের কাজও শেষ হবে। সেপ্টেম্বরে উদ্বোধন হয়ে যাবে। কিছু ফিনিশিংয়ের কাজ বাকি থাকলে সেগুলো আস্তে আস্তে করা যাবে।