শতবর্ষী কালুরঘাট সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচলে কোনো ধরনের নিয়মনীতি মানছেন না মোটরসাইকেল ও সিএনজি চালকরা। সেতুতে ট্রেন ওঠার সাথে সাথে রেলওয়ের গেটম্যানের সিগন্যাল অমান্য করে ট্রেনের পেছন পেছন ছুটতে থাকে বেপরোয়া মোটরসাইকেল, সিএনজি টেক্সিসহ ছোটখাট গাড়িগুলো।
কালুরঘাট সেতু দিয়ে ট্রেন পারাপারের সময় সেতুর ওপর কোনো ধরনের যানবাহন না ওঠার জন্য রেলওয়ের গেটম্যান ব্যারিয়ার ফেলে দেন। অপরদিকে বোয়ালখালী অংশে সেতুর ইজারাদার প্রতিষ্ঠান গাড়ি ব্লক করে রাখে। দীর্ঘদিন এই নিয়ম মেনে এলেও সাম্প্রতিক সময়ে কালুরঘাট সেতুতে কোনো ধরনের নিয়মনীতি মানছেন না মোটরসাইকেল চালক ও সিএনজি চালকরা। সেতু দিয়ে ট্রেন পার হওয়ার ৫ মিনিট সময়ও অপেক্ষা করতে চান না তারা। সেতুতে ট্রেন ওঠার সাথে সাথে ব্যারিয়ার নিজেরা তুলে সেতুতে গাড়ি তুলে দেন। গত শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টার সময় দেখা গেছে, ঢাকা থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি কালুরঘাট সেতু অতিক্রম করছে। এর পেছনে সাথে সাথে সেতুতে উঠে গেছে মোটরসাইকেল, সিএনজি টেক্সি, টেম্পো, কারসহ অন্যান্য যানবাহন। এভাবে অনেকদিন থেকে চলছে বলে জানান সেতুর গেটকিপার এবং সেতু এলাকার দোকানদাররা।
সেতুর শহর অংশে গেটকিপারের ব্যারিয়ার এবং বোয়ালখালী অংশে ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের ব্যারিয়ার নিজেরা তুলে ট্রেনের পেছন পেছন ছুটতে থাকেন। বিপজ্জনকভাবে কালুরঘাট সেতুতে একসাথে ট্রেন এবং পেছনে যানবাহন চলাচলের দৃশ্য উভয় পাড়ের মানুষ দেখেন।
এ সময় রেলওয়ের গেটকিপারকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, সেতুতে ট্রেন ওঠার আগে ব্যারিয়ার ফেলে গাড়ি ওঠার পথ বন্ধ করে দেওয়া হলেও মোটরসাইকেল চালক ও সিএনজির যাত্রীরা ব্যারিয়ার তুলে ট্রেনের পেছন পেছন সেতুতে ওঠে যান। তাদেরকে নিষেধ করলেও শোনে না। এভাবে ট্রেনের পেছন পেছন সেতু পার হওয়া বিপজ্জনক। যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, কালুরঘাট সেতুটি মূলত রেলওয়ের ট্রেন চলাচলের সেতু। কিন্তু বোয়ালখালীসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষের যাতায়াতের কথা চিন্তা করে রেল কর্তৃপক্ষ একসময় এই সেতুটি যানবাহনের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়। কিন্ত ট্রেন পারাপারের ৫ মিনিট আগে থেকে সেতুতে কোনো ধরনের যানবাহন যাতে উঠতে না পারে এজন্য গেটম্যান ব্যারিয়ার ফেলে দেন।
কক্সবাজারগামী ট্রেন চলাচলের জন্য ১৪ মাস সংস্কার কাজ শেষে নতুন রূপ পেয়েছে কালুরঘাট সেতুটি। সংস্কারের পর এখন এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন ঢাকা–কক্সবাজার এবং চট্টগ্রাম–কক্সবাজার ৪টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। পাশাপাশি গত বছরের ২৭ অক্টোবর এই সেতু দিয়ে যান চলাচল উন্মুক্ত করে দেয় রেলওয়ে। ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে যানবাহন থেকে টোল আদায় শুরু হয়।