চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার কালীপুরের নাথপাড়ায় বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শুক্রবার সকালে সংঘটিত এ ঘটনায় বিকালে বাঁশখালী উপজেলা পরিষদ গেটে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যসহ কয়েক শতাধিক নারী-পুরুষের মানববন্ধনের মাধ্যমে ঘটনার প্রতিবাদ জানান। ঘটনার বর্ণনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য সুবল নাথের স্ত্রী নিপুরা দেবী বলেন, দুর্বৃত্তরা ঘটনার সময় পরিবারের সদস্য এসএসসি পরীক্ষার্থী ইমন নাথের প্রবেশপত্র ও বই নিয়ে গেছে; এখন সে কি ভাবে পরীক্ষা দেবে। এ সময় ইমন নাথকে আর্তনাদ করতে দেখা যায়। আর নিপুরা দেবীও কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এদিকে রাতে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান চৌধুরী, সহকারী পুলিশ সুপার (আনোয়ারা সার্কেল) হুমায়ুন কবীর, বাঁশখালী থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: কামাল উদ্দিন, কালীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আ.ন.ম শাহাদত আলম সহ দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করবেন বলে ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্বস্ত করেন।
জানা যায়, বাঁশখালী কালীপুরের জঙ্গল গুনাগরী ১নং ওয়ার্ডের নাথ পাড়ায় দেবেন্দ্র নাথের পুত্র নারায়ণ নাথ, সুবল নাথ গংদের সাথে একই এলাকার জনৈক মাসুদ গংদের চলাচলের রাস্তা নিয়ে বিরোধ ছিল। তা থানা ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে সমাধা করে দেওয়া হয়। তবে গেল ইউপি নির্বাচনে মাসুদের পছন্দের লোকদের ভোট না দেওয়ায় মাসুদ গং সুবলদের ওপর চড়া হন এবং এ ঘটনার জের ধরে গতকাল সকালে বেশ কয়েক সশস্ত্র যুবক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সুবল ও নারায়ণ নাথের টিনের ঘেরা দেওয়া বাড়ির সব মালামাল তছনছ করে এবং নগদ টাকা স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। বাড়ির মহিলা সদস্যরা এগিয়ে এলে তাদের মারধর করা হয় বলে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তরা জানান। সুবল নাথ ও তার স্ত্রী নিপুরা দেবী অভিযোগ করেন, গত ১৫ জুন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তাদের নৌকায় ভোট না দিতে চাপ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা নৌকায় ভোট দেন। মানববন্ধনে বক্তারা এ ঘটনায় জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার জোর দাবি জানান।
এ দিকে ঘটনার ব্যাপারে কালীপুরের সাবেক ও বর্তমান নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আ.ন.ম শাহাদত আলম বলেন, ঘর-বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাটি দুঃখজনক। প্রতিপক্ষ যদি জায়গা বা রাস্তা পেয়ে থাকে তাহলে তা আইনের মাধ্যমে আদায় করবে। কিন্তু এ ভাবে বাড়িঘর তছনছ করে, মালামাল নিয়ে যাওয়াটা কোনো অবস্থায় মেনে নেওয়া যায় না। তিনি তদন্তপূর্বক প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান। এ ব্যাপারে রামদাশ হাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক মোহাম্মদ সোলাইমান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে বলে তিনি জানান। এ দিকে রাতে এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার মামলা করার প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানা গেছে।
