কার দায় না খুঁজে হাঁটাচলার নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করুন : সুজন

ম্যাক্স জনভোগান্তি করে উস্কানি সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৫:১৭ পূর্বাহ্ণ

কার দায় সেটা না খুঁজে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেবা সংস্থাগুলোকে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। তিনি বলেন, জনগণ কোনো অবস্থাতেই কার দায় সেটা দেখতে চায় না। তারা প্রত্যাশা করে নিরাপদে হাঁটা-চলার স্বস্তিকর পরিবেশ। গতকাল বুধবার সকাল ১১টায় নালায় তলিয়ে গিয়ে অকালে প্রাণ হারানো বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সেহেরীন মাহবুব সাদিয়ার বাসায় তার পরিবারবর্গকে সমবেদনা জানাতে গিয়ে এসব কথা বলেন সুজন। সাদিয়ার বাসায় সুজন পৌঁছালে নিহতের স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এসময় তিনি নিজেও অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয় তখন। আশপাশের পাড়া মহল্লার শত শত মানুষ এসে সেখানে হাজির হন। এসময় নগর আওয়ামী লীগের এ সহ-সভাপতি বলেন, সাদিয়ার মতো সন্তান যে কোনো পিতা-মাতার জন্য একটি স্বপ্নের বীজের মতো। কিন্তু সে স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ হয়ে গিয়েছে নিদারুণ গাফিলতি এবং কর্তব্য অবহেলায়। একটি রাষ্ট্রে একজন শিক্ষার্থী হাঁটতে গিয়ে নালায় পড়ে তলিয়ে যাবে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলেও যোগ করেন সুজন।
তিনি বলেন, একের পর এক মৃত্যু হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা আমাদের ব্যথিত করে। জনগণ কোনো অবস্থাতেই কার দায় সেটা দেখতে চায় না। জনগণের প্রত্যাশা নিরাপদে হাঁটাচলার স্বস্তিকর পরিবেশ। সুজন বলেন, দুঃখজনকভাবে দেখা যাচ্ছে, সংস্থাসমূহের অদক্ষতা এবং উদাসীনতার কারণে জনভোগান্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উন্নয়নের কারণে দেওয়ানহাট থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত চট্টগ্রামের প্রধান সড়কটি খানাখন্দে পরিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। নির্মাণ কাজ করতে গিয়ে ঐ সড়কে অসংখ্য ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ এ অবস্থা থেকে মুক্তি চায়।
তিনি বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বাস্তবায়নকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে জনভোগান্তি সৃষ্টি করে সরকার বিরোধী উসকানি সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের কার্যতালিকায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সড়কটি যান ও জনগণের চলাচল উপযোগী রাখা, নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরিসহ প্রতিনিয়ত পানি ছিটিয়ে জনদুর্ভোগ লাঘব করার কথা থাকলেও তারা কোনোটাই মানছে না। এতে করে দুর্ঘটনা বাড়ছে, হারাতে হচ্ছে অমূল্য প্রাণ। তিনি বলেন, সড়কবাতি না থাকায় ঘুটঘুটে অন্ধকারে সড়ক এবং নালা মিলিত হয়ে পড়েছে।
দেওয়ানহাট থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত সড়কের যেসব স্থানে ত্রুটি আছে সেগুলো দ্রুত চিহ্নিত করে নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি না করা পর্যন্ত উন্নয়ন কাজ বন্ধ রেখে ত্রুটিসমূহ অপসারণ এবং নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতি আহ্বান জানান সুজন। অন্যথায় জানমালের আর কোনো ক্ষয়ক্ষতি হলে তার সম্পূর্ণ দায়দায়িত্ব ঐ প্রতিষ্ঠানকে বহন করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন কর্মকাণ্ড যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সেজন্য সিটি কর্পোরেশন, সিডিএ, পুলিশ প্রশাসন, ওয়াসাসহ সকল সেবা সংস্থাকে এক টেবিলে বসে সব সমস্যার তড়িৎ সমাধান করার জন্য বিনয়ের সাথে অনুরোধ জানান সুজন।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক লায়ন মো. হোসেন, বন্দর থানা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. ইলিয়াছ, হালিশহর থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক রেজাউল করিম কায়সার, বখতিয়ার মিয়া, মঞ্জুর আলম, হাজী মো. আবু তাহের, আমিনুল ইসলাম আমিন, সংগঠনের সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেন প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ অব্যাহত
পরবর্তী নিবন্ধবিবাহোত্তর অনুষ্ঠানের আগেই নববধূর মৃত্যু