কারো বিরক্তির কারণ হবেন না

সুচিত্রা ভট্টাচার্য্য | সোমবার , ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ at ৭:৪০ পূর্বাহ্ণ

মানুষ সামাজিক জীব। সমাজে বাঁচতে হলে একে অন্যের জন্য সাহায্যের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। বিভিন্ন সময়ে এবং বিভিন্ন কারণে আমরা অনেক আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব পরিচিত বা অপরিচিত ব্যক্তির ও সাহায্য নিই। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমরা নিজের প্রয়োজন বা সমস্যাকে গুরুত্ব দিয়ে থাকি। অপরপক্ষ অর্থাৎ যার কাছ থেকে কোনো সাহায্য বা সহযোগিতা চাচ্ছি তিনি এ মুহূর্তে সেটা দিতে সক্ষম কিনা সেটা বিবেচনা করি না। অনেক মানুষই ফোন করে নিজের সমস্যা বা দরকারি কথাই বলতে থাকেন অপরদিকে তার বন্ধু, আত্মীয় বা পরিবারের সদস্যটির কথাটি শোনার সে সময় আছে কিনা সেটা জানতে চাওয়া অত্যন্ত বাঞ্চনীয়। আমি জানি আমার মতামতটি অনেকে ভদ্রতার বাড়াবাড়ি হিসেবে আখ্যা দেবেন। কিন্তু এটাই বাস্তবতা যে আপনার কাছে আপনার প্রয়োজন সবচেয়ে আগে হলেও অন্য প্রান্তের ব্যক্তিটি আপনার ওপর চরম বিরক্ত হতে পারে যা হয়ত তিনি মুখ ফুটে বলছেন না। আবার আর্থিক সাহায্য না নিয়েও আমরা নানাভাবে অন্যের বিরক্তির কারণ হয়ে ওঠি।

যেমন ধরুন কোনো প্রয়োজনে বা বেড়াতে গিয়ে কারও বাসায় উঠলেন। আপনার উচিত হবে কাজ শেষ করে যত দ্রুত সম্ভব চলে আসা। তার বাড়িতে যতই থাকা খাওয়ার সুব্যবস্থা থাকুক না কেন ওই ব্যক্তি বা পরিবারের একান্ত জীবন যাপনের ধরন বা ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে আপনি বিরক্তির কারণ হবেন যা উনি হয়তো লজ্জাবশত মুখে বলতে পারছেন না। আমাদের চারপাশে আবার কিছু কিছু ব্যক্তি আছেন যারা বিভিন্ন বিষয়ে অযাচিত উপদেশ বা পরামর্শ দেন। কিন্তু নিজে ভেবে দেখেন না এই মুহূর্তে যাকে উপদেশ বা পরামর্শ দিচ্ছেন তার পক্ষে ওই কাজটি করা আর্থিক বা পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনায় সম্ভব হয়ে উঠছে কিনা। এতেও সে আপনার ওপর বিরক্ত বৈ খুশি হবে না। আবার আমরাও অনেক সময় কোথাও কোনো কাজে কারো কোন দোষ বা খুঁত দেখি যা আমাদের মোটেই পছন্দ হচ্ছে না। অনেকেই ওই মুহূর্তে বিষয়টি সবার সামনে বলে দেন। ফলে সেই সময় ঐ ব্যক্তিটি একটু অপ্রস্তুত হন যার কারণে আপনি অন্যের কাছে অত্যন্ত বিরক্তিকর হতে পারেন।

এভাবে আমরা নিজের জ্ঞাতে বা অজ্ঞাতে অন্যের বিরক্তির কারণ হয়ে যায়। নিজের ছোটখাটো কাজ বা সমস্যায় অন্যের সাহায্য না নেওয়ার চেষ্টা করুন। যতই আপনার কাছের আপনজন থাকুক না কেন। সব সময় চেষ্টা করুন এবং যে কোনো সময় কোনো কারণে যেন কারো বিরক্তির কারণ না হয়ে যান।

এই শিক্ষাটা আপনার পরিবার ও সন্তানকে দিতে পারলে তাদের জীবন চলার পথে এটা অনেক সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। অন্যকে নিজের কাজে যতই কম ব্যবহার করবেন ততই ভালো। এতে অন্তত আপনি কারও প্রিয়ভাজন না হলেও অপ্রিয় হবেন না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতেলের দাম কমার সুফল জনগণ ভোগ করার ব্যবস্থা নেয়া হোক
পরবর্তী নিবন্ধশিক্ষক সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী