রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের ফটকে নয় বছর বয়সী ছেলের সামনে বিয়ে হয়েছে বাবা-মায়ের। গতকাল শনিবার দুপুরে কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপারের দফতরে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশে ধর্ষণ মামলার আসামি ও ভুক্তভোগীর এই বিয়ে আয়োজন। ধর্ষণ মামলায় আট বছর ধরে কারাবন্দি বাবা। বিয়ের শর্তে তার জামিন পাওয়ার কথা।
এর আগে গত ২২ অক্টোবর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ উভয়পক্ষের সম্মতিতে এ বিয়ের আদেশ দেন। রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা জানান, উচ্চ আদালতের নির্দেশে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে। বেলা ১১টার দিকে কনেপক্ষকে কারাফটকে আসার সময় দেয়া ছিল। নির্ধারিত সময়ের একটু পরে কনেসহ দুই পক্ষের ১৪ জন কারাফটকে উপস্থিত হন।
তিনি বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হিন্দু বিয়ে নিবন্ধক বর ও কনের সই নেন। পুরোহিত বিয়ের মন্ত্র পাঠ করেন। মালাবদলে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। কারাগারের পক্ষ থেকে কনেকে একটি কাতান শাড়ি উপহার দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলার সিতানাথের ছেলে দিলীপের সঙ্গে তার খালাতো বোনের (ভিকটিম) ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে ভিকটিম গর্ভবতী হয়ে পড়লেও দিলীপ তাকে বিয়ে করতে রাজি হননি। এ নিয়ে সে সময় সালিশ-বৈঠক হলেও তাতে কোনো ফল আসেনি।
২০১১ সালের ২৫ অক্টোবর গোদাগাড়ি থানায় ধর্ষণ মামলা হয়। মামলায় ২০১২ সালের ১২ জুন দিলীপকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। রায়ে বলা হয়, যখন ভিকটিম ধর্ষণের শিকার হন তখন তার বয়স ছিল ১৪ বছর। কারাগারে থাকা অবস্থায় দিলীপ হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন। শুনানিকালে তার আইনজীবী জানান, ভিকটিম এখানে আছে। তারা বিয়ে করতে সম্মত।