সুতার ঘোষণায় আমদানি করা হয় মদের চালান। বিষয়টি জানতে পেরে চালানের খালাস কার্যক্রম আটকে দেওয়া হয়। কিন্তু পরক্ষণেই খবর বের হয়, চালানটি খালাস হয়ে গেছে। জাল আইপি দাখিল করে শুল্কায়ন সম্পন্ন করা হয়েছে। হ্যাক করা হয় রাজস্ব কর্মকর্তার আইডি ও পাসওয়ার্ড। এ ঘটনায় কাস্টম হাউসের দায়ের করা মামলায় মো. শোয়েব আজিজ নামে এক আমদানি কারককে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। তিনি কুমিল্লা ইপিজেডের হেশি টাইগার কোং লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী। গতকাল চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ জেবুন্নেছা শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে উচ্চ আদালত থেকে নেওয়া ৬ মাসের জামিনের মেয়াদ শেষ হলে তিনি আত্মসমর্পণ করে স্থায়ী জামিনের আবেদন করলে বিচারক তা নাকচ করে দেন।
মহানগর পিপি ফখরুদ্দিন চৌধুরী আজাদীকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে কন্টেনার ভর্তি দুটি মদের চালান খালাসের এ মামলায় আসামি পাঁচজন। এর মধ্যে শোয়েব আজিজের পাশাপাশি চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানাধীন গোসাইলডাঙ্গার দোভাষ লেইনের সিএন্ডএফ এজেন্ট মেসার্স জাফর আহমেদের স্বত্বাধিকারী জাফর আহমেদও আছেন। এ প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমেই কন্টেনার ভর্তি উক্ত দুটি মদের চালান (৪১ কোটি টাকা মূল্যের পাসপোর্ট স্কচ হুইস্কিসহ নানা ব্যান্ডের মদ) খালাস হয়। পরবর্তীতে যা নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁও থেকে বিশেষ অভিযান চালিয়ে জব্দ করে র্যাব। আদালতসূত্র জানায়, চলতি বছরের ২০ জুলাই সুতার ঘোষণা দিয়ে মদের চালান আমদানি এবং হ্যাকিং করে চালান খালাসের ঘটনাটি ঘটে। যা দুদিন পর ২২ জুলাই নারায়নগঞ্জ থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ১ আগস্ট চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বিন আজাদ বাদী হয়ে কাস্টমস আইনের ১৫৬ (১) এর ৮, ৯ ও ১৪ ধারা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ১৭, ১৮ ও ৩৪ ধারায় বন্দর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজহারে তিনি উল্লেল করেন, মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে এবং চোরাচালানের মাধ্যমে সুতার নামে উচ্চ শুল্কহার যুক্ত দুটি কন্টেনার ভর্তি বিদেশী মদের উক্ত চালানটি আমদানি করা হয়। এ কাজ করতে গিয়ে আসামিরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে ও ডিজিটাল ডিভাইসে কম্পিউটার সিস্টেমে বেআইনিভাবে প্রবেশ ও হ্যাকিং করার অপরাধ করেছেন। শুল্ক ফাঁকি দিতেই আসামিরা এ পথ বেচে নিয়েছেন। যা দণ্ডনীয় অপরাধ।