কারাগারে মৃত্যুর ঘটনায় হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

বিডিআর বিদ্রোহ

| সোমবার , ২৬ আগস্ট, ২০২৪ at ১০:৩৬ পূর্বাহ্ণ

পিলখানায় বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদরদপ্তরে বিদ্রোহের মামলার আসামি বিডিআরের উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুর রহিমের কারাগারে মৃত্যুর ঘটনায় তখনকার সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা, বিডিআর প্রধান (পরবর্তীতে সেনাপ্রধান) জেনারেল আজিজ আহমেদসহ ১৩ জনের নামে হত্যা মামলার আবেদন করা হয়েছে।

আব্দুর রহিমের ছেলে অ্যাডভোকেট আব্দুল আজিজ গতকাল রোববার ঢাকার মহানগর হাকিম মো. আক্তারুজ্জামানের আদালতে এই মামলার আবেদন করেন। ঢাকার মহানগর হাকিম আক্তারুজ্জামান বাদীর জবানবন্দি শুনে অভিযোগের বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে চকবাজার থানাকে নির্দেশ দেন। খবর বিডিনিউজের।

বাদীর আইনজীবী মো. দেলোয়ার হোসেন অভি বলেন, বিডিআর বিদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ২০১০ সালের ২৯ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন। আমরা মনে করছি, পরিকল্পিতভাবে আসামিরা তাকে হত্যা করেছেন। এ ঘটনায় তখন চকবাজার থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়। আজ (গতকাল) আদালত আমাদের মামলার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চকবাজার থানার সেই অপমৃত্যু মামলার নথি তলব করেন। ওই অপমৃত্যু মামলায় পুলিশ আদালতে কোনো প্রতিবেদন দিয়েছিল কিনা এবং আদালত তার প্রেক্ষিতে কোনো আদেশ দিয়েছিল কিনা তা জানতে চেয়েছেন। সেটি দেখে বিচারক মো. আক্তারুজ্জামান এ মামলাটির আবেদনের ওপর যথাযথ আদেশ দেবেন। অপমৃত্যু মামলার নথি উপস্থাপন ও প্রতিবেদন জমার পর বিচারক সিদ্ধান্ত দেবেন, অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হবে কিনা।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদরদপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন তোলে ওই ঘটনা। বিডিআরের দরবার হল থেকে সূচনা হওয়া ওই বিদ্রোহের ইতি ঘটে নানা ঘটনঅঘটনের মধ্য দিয়ে পরদিন। পিলখানায় বিদ্রোহের মধ্যেই দেশের বিভিন্ন স্থানে জওয়ানরাও বিদ্রোহ করে। সেই বিদ্রোহের পর সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বিডিআরের নাম বদলে যায়, পরিবর্তন আসে পোশাকেও। এ বাহিনীর নাম এখন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি।

মামলায় বাদী অ্যাডভোকেট আব্দুল আজিজ বলেন, আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার সরকার ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তর পিলখানায় সুপরিকল্পিতভাবে বিদেশি এজেন্ট নিয়োগ করে ৫৭ জন সেনা অফিসারসহ ৭৪ জনকে হত্যা করে। পরে বিডিআর বিদ্রোহের অভিযোগে চকবাজার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক বিজিবি মহাপরিচালক ও সাবেক সেনাপ্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজিজ আহমেদ এবং পিলখানা বিদ্রোহ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজলসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে মামলা আর্জিতে। সাবেক কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম খান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, সংসদ সদস্য শেখ সেলিম, নূর আলম চৌধুরী লিটন, শেখ হেলাল, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মির্জা আজম, হাসানুল হক ইনু ও ২০১০ সালের জুলাইয়ে কেন্দ্রীয় কারাগারের তৎকালীন জেল সুপার এবং চিকিৎসক ডা. রফিকুল ইসলামের নামও রয়েছে আসামির তালিকায়।

বাদী বলেন, তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম ডিএডি হিসেবে পিলখানায় কর্মরত ছিলেন। তাকেও বিডিআর বিদ্রোহের মামলায় আসামি করে আটক করা হয়। এর ৬ মাস পরে কারাগারে অন্তরীণ আসামিরা পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনিখোঁজের ২৬ ঘণ্টা পর চিংড়ি ঘেরে মিলল শিশুর ভাসমান লাশ
পরবর্তী নিবন্ধআজ শুভ জন্মাষ্টমী