কারাগারে বৈদ্যুতিক শক, বিষ প্রয়োগে নির্যাতনের অভিযোগে মামলা

আজাদী অনলাইন | বৃহস্পতিবার , ৪ মার্চ, ২০২১ at ৯:১৩ অপরাহ্ণ

এক বন্দিকে ‘বৈদ্যুতিক শক দিয়ে ও বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ’ করে নির্যাতনের অভিযোগে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার ও জেলারসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।
ঐ বন্দির স্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালতে মামলাটি করেন।
আদালত অভিযোগ গ্রহণ করে তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অভ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বাদীর আইনজীবী ভুলন লাল ভৌমিক। বিডিনিউজ
অভিযোগের বিষয়ে কারা কর্মকর্তাদের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। চট্টগ্রামের জেলারের সরকারি মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
বাদীর আইনজীবী ভুলন লাল বলেন, “নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইন ২০১৩ এর ১৩ (১)(২) এর (ক)(খ) ও (গ) ধারায় মামলাটি করা হয়েছে।নগরীর পাহাড়তলী থানার দক্ষিণ কাট্টলী উত্তর নাথ পাড়ার বাসিন্দা মৃত দেবেন্দ্র নাথ লালের ছেলে রূপম কান্তি নাথের (৫০) স্ত্রী মামলাটি করেন। রূপম ঠিকাদারি কাজে সরঞ্জাম সরবরাহের ব্যবসা করেন।”
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার, জেলার ও কারাগারে কর্তব্যরত সহকারী সার্জনকে আসামি করা হলেও এজাহারে তাদের নাম উল্লেখ করা হয়নি। রতন ভট্টাচার্য্য নামে এক ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, “আদালত চার আসামির বিরুদ্ধে করা মামলাটি গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। রতন ভট্টাচার্য্যের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন নিয়ে হওয়া একটি মামলায় ১৫ ডিসেম্বর থেকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন রূপম।”
তার স্ত্রী ঝর্ণা রানী দেবনাথ (৪২) মামলায় অভিযোগ করেন, “কারাগারে বন্দি অবস্থায় রতন ভট্টাচার্য্যের প্ররোচনায় ও আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ওই মামলায় সম্মতি আদায়ের জন্য এবং নির্যাতন করে হত্যার জন্য রূপমকে বৈদ্যুতিক শক দেয় ও রক্তাক্ত জখম করে। এরপর এই অপরাধ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য দুই হাতে দুটি বিষাক্ত ইনজেকশন দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে।”
গত ২৪ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কোনো এক সময় এই ঘটনা ঘটে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে গত সোমবার চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হোসেন মোহাম্মদ রেজার আদালতে একই অভিযোগ করেন রূপমের স্ত্রী ঝর্ণা রানী দেবনাথ।
পরদিন মঙ্গলবার আদালত এক আদেশে জানান, নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইন ২০১৩ এর ৭(১) ধারা অনুযায়ী আদালত কর্তৃক অভিযোগকারীর মামলাটি গ্রহণের এখতিয়ার না থাকায় মামলাটি যথাযথ আদালতে দাখিলের জন্য ফেরত প্রদান করা হোক।
তার আগে ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে রূপমকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে জানান আইনজীবী ভুলন লাল ভৌমিক।
তিনি বলেন, “আর্থিক লেনদেনের যে মামলায় রূপম কান্তি নাথ কারাগারে আছেন সেই মামলাটি অন্য একজন আইনজীবী পরিচালনা করছেন। ২৫ ফেব্রুয়ারি কারাগার থেকে ওই আইনজীবীকে ফোনে জানানো হয়, রূপম কান্তি নাথ হাসপাতালে আছেন। এরপর রূপম কান্তির স্বজনরা হাসপাতালে গিয়ে খোঁজ নেন।”
২৫ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে রূপম কান্তির ‘উন্নত চিকিৎসার জন্য’ আবেদন করেন তার স্ত্রী ঝর্ণা।
আইনজীবী ভুলন ভৌমিক বলেন, “অসুস্থ রূপম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার মুখে ও নিম্নাঙ্গে আঘাতের চিহ্ন আছে। সেখানে ভর্তির আগে তিনি কারা হাসপাতালে ছিলেন।”
সবশেষ বুধবার রূপমের পক্ষে জামিনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত তার জামিন মঞ্জুর করে কিন্তু জামিননামা জমা না দেওয়ায়
আজ বৃহস্পতিবার আবার ঐ জামিন বাতিল করা হয় বলে জানান আইনজীবী ভুলন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটিকার জন্য শিক্ষার্থীদের তথ্য চেয়েছে চবি প্রশাসন
পরবর্তী নিবন্ধসেন্টমার্টিনের রিসোর্টে চন্দনাইশের চেয়ারম্যানের মৃত্যু