দুর্ধর্ষ জঙ্গি ও মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত আসামিসহ ২৫ জন বন্দিকে চট্টগ্রাম কারাগার থেকে সম্পতি কুমিল্লা কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে। কারা কর্মকর্তারা বলছেন, জঙ্গি, দুর্ধর্ষ ও ভয়ংকর বন্দির সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে। কিন্তু সে তুলনায় কারাগারে সেলের সংখ্যা কম। তাই তাদের নিরাপদে রাখতে ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের কাজ চলছে। জেল সুপার কামাল হোসেন আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম কারাগারে বন্দির সংখ্যা তুলনামূলক বেড়ে যাওয়ায় সেখানে আরও ৩২টি সেল নির্মাণ করা হচ্ছে। গত আগস্ট থেকে চার তলা ভবন তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। সেজন্য এসব বন্দিকে স্থানান্তর করা হয়েছে। সেল তৈরি হবার পর তাদের ফেরত আনা হবে।
কারা কর্তৃপক্ষের গতকালের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দুর্ধর্ষ ৩শ’ বন্দি চট্টগ্রাম কারাগারে রয়েছে। এদের মধ্যে ৪৭ জন জঙ্গি, ৫৩ জন ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ও ২৫০ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দি রয়েছে। ডেপুটি জেলার নাসির উদ্দিন এ প্রতিবেদককে বলেন, কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো ২৫ জনের মধ্যে ১২ জন মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ও ১৩ জন জঙ্গি রয়েছে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম কারাগারে সাজাপ্রাপ্ত জেএমবির চট্টগ্রাম বিভাগের সামরিক কমান্ডার জাবেদ ইকবাল প্রকাশ মোহাম্মদ, শহীদ হামজা বিগ্রেডের সামরিক কমান্ডার মনিরুজ্জামান ডনসহ ৪৭ জঙ্গি রয়েছে। এছাড়া ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দির মধ্যে দুর্ধর্ষ শীর্ষ সন্ত্রাসী শিবির ক্যাডার নাছির উদ্দিন ওরফে নাছির, শীর্ষ সস্ত্রাসী সোহেল, রিপন নাথ, মাসুদ, রেজোয়ান, হাত-কাটা জাহাঙ্গীর, ১০ ট্রাক অস্ত্র ও চোরাচালান মামলার আসামি দীন মোহাম্মদ, ডাকাত আলমসহ ৩৫ জন রয়েছে।
কারা তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে চট্টগ্রাম কারাগারে সাড়ে ছয় হাজার বন্দি রয়েছে। যদিও কারাগারের ধারণ ক্ষমতা দুই হাজার ২৪৯ জন। এর মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি রয়েছে ৬৪২ জন। তার মধ্যে সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত কয়েদি ৪৭০ জন, বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত ১১৬ জন, সিভিল বন্দি একজন ও আমৃত্যু কারাদন্ডপ্রাপ্ত একজন কয়েদী রয়েছে। আর সাধারণ হাজতি রয়েছে ৫ হাজার ৮৪০ জন এবং দায়রা হাজতি রয়েছে ১১১৫ জন। এছাড়া বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হওয়া দুর্ধর্ষ অপরাধী ও জঙ্গিরা চট্টগ্রাম কারাগারে ঠাঁই পাচ্ছে।
এক বছর আগে কারাগারের সেলে সন্ত্রাসী অমিত মুহুরী খুন হওয়ার পর এখন বেশি সর্তক কারা কর্তৃপক্ষ। কারাগারে এখন ধারণক্ষমতার ছয়গুণ বেশি বন্দি রয়েছে। এজন্য পৌনে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে দুর্ধর্ষ বন্দিদের দ্বিতল ভবনটি ৪র্থ তলায় রুপান্তর করছে সরকার। বর্তমানে ভবনটির দ্বিতীয় তলায় ৩২টি সেল ও একতলায় ১০টি সেল রয়েছে।