কাপ্তাই-বড়াদম-রাঙামাটি নতুন সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। এই ভাঙনের ফলে সড়ক অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আর এই সড়কের উপর দিয়ে চরম ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন যানবাহন চলাচল করছে বলে জানা গেছে। সরেজমিন দেখা গেছে, কাপ্তাই রাঙামাটি নতুন সড়কটি পাহাড়ের চূড়ার উপর দিয়ে নির্মিত হয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে সড়কটি অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে নির্মিত। কাপ্তাই থেকে রাঙামাটি যাবার পথে সড়কের বাম পাশে দেখা যাবে ঘন সবুজে আচ্ছাদিত সুউচ্চ পাহাড়। ডান পাশে বিশাল কাপ্তাই লেক। ৪০ কিলোমিটার সড়কের পুরোটা জুড়েই শতশত মোড় এবং পুরোটা পথই আঁকাবাঁকা।
এই সড়কের ৯ স্পটে পরিলক্ষিত হয় ভয়াবহ ভাঙন। সড়কটি ২০ ফুট চওড়া হলেও ভাঙনের কারণে কোনো কোনো স্থানে সড়ক মাত্র ১০ ফুটে নেমে এসেছে। অনেক স্থানে সড়কের নীচের মাটি সরে গেছে। কোনো কোনো স্থানে সড়কের একপাশে ভাঙনের পাশাপাশি গভীর গিরি খাদ রয়েছে। একটু অসতর্ক হলেই চরম বিপদ অনিবার্য। মোঃ চাঁন মিয়া নামক একজন অটোচালক জানান, তিনি প্রতিদিন কাপ্তাই নতুন বাজার থেকে যাত্রী নিয়ে রাঙামাটির আসামবস্তী পর্যন্ত যাতায়াত করেন।
সড়কের যেসব অংশে ভাঙন রয়েছে সেখানে চরম ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। বাস ট্রাকসহ বিভিন্ন প্রকারের যানবাহন এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে বলেও তিনি জানান। দ্রুত সড়কটি সংস্কার করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। বড়াদম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পেলারাম চাকমা বলেন, পর্যটন এলাকা হওয়ায় প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থী এই সড়ক পথে যাতায়াত করেন। এই সড়ক ব্যবহার করে রাঙামাটি শহর এবং চট্টগ্রামেও যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। আবার এই সড়ক পথে বান্দরবান হয়ে কঙবাজারেও যাতায়াতের সুযোগ আছে। কিন্তু সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙন সৃষ্টি হওয়ায় যাতায়াতে ঝুঁকি বাড়ছে।
এ ব্যাপারে রাঙামাটি উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন আক্তার বলেন, জেলা প্রশাসনের মাসিক উন্নয়ন সভায় বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে এবং দ্রুত সড়কটি সংস্কার করার জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ইসমাইল বলেন, এবারের বর্ষায় ভারী বৃষ্টির কারণে সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি সড়ক ও জনপথ বিভাগ অবগত রয়েছে। তবে ইতোমধ্যে সড়ক সংস্কারের কাজও শুরু হয়েছে। ভাঙনের কারণে সড়কের কোনো কোনো অংশ এতটাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে যে ঐ অংশ সংস্কারের বড় আকারের অর্থ বাজেটে করতে হবে। যা তাৎক্ষণিক সম্ভব হচ্ছে না। তবে আপাতত যানবাহন যাতে স্বাভাবিক গতিতে চলাচল করতে পারে সে জন্য সড়ক সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সংস্কার কাজ সম্পন্ন হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন। তবে এই সড়কে সকল প্রকার যানবাহনের চালককে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে গাড়ি চালানোর পরামর্শ দেন।