কাদায় পিচ্ছিল সড়কে দুর্ঘটনা

চন্দনাইশে দুইটি গাড়ি পড়ে গেল বিলে সাতকানিয়ায় চার ঘণ্টার যানজট

সাতকানিয়া ও চন্দনাইশ প্রতিনিধি | সোমবার , ২০ মার্চ, ২০২৩ at ৫:১২ পূর্বাহ্ণ

ট্রাক থেকে ঝরে পড়া মাটির প্রলেপের উপর বৃষ্টি পড়ায় পিচ্ছিল হয়ে পড়ে চট্টগ্রামকক্সবাজার মহাসড়ক। পিচ্ছিল সড়কে গাড়ি চালাতে গিয়ে অনেকে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। সড়ক থেকে ছিটকে পড়েছে অনেক গাড়ি। যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। মহাসড়কের সাতকানিয়া অংশে গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত টানা চার ঘণ্টা যানজট লেগে ছিল। এতে করে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। অন্যদিকে ভোরের গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিপাতে সড়ক পিচ্ছিল হয়ে চন্দনাইশে বেশ কয়েকটি যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হয়। উপজেলার দেওয়ানহাট ও বড়পাড়ার মাঝামাঝি স্থানে লবণ বোঝাই একটি ট্রাক ভোরে উল্টে সড়কের পাশে পড়ে যায়। এছাড়া বাইন্যাপুকুরপাড়স্থ এলাকায় অপর একটি কাভার্ডভ্যান সড়ক থেকে পিছলে পার্শ্ববর্তী বিলে উল্টে পড়ে যায়। এছাড়াও সকাল থেকে বেশ কয়েকটি মোটর সাইকেল, সিএনজি অটোরিকশা পিছলে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে এসব ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

সাতকানিয়া প্রতিনিধি জানান, সরেজমিন পরিদর্শনকালে যানবাহন চালক, যাত্রী ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ইটভাটা মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকে ২০২৫টি মাটি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট আবাদি জমি থেকে মাটি কেটে ইট ভাটায় বিক্রি করে আসছে। এসব মাটি বিল থেকে ট্রাক যোগে ইট ভাটায় নেয়ার সময় চট্টগ্রামকক্সবাজার মহাসড়কের উপর ঝরে পড়ে। দিনরাত সমান তালে ট্রাক থেকে ঝরে পড়া মাটি সড়কের উপর প্রলেপ তৈরি করে। বিশেষ করে আবাদি জমির নিচের অংশের নরম মাটি সড়কের উপর পড়ার পর যান চলাচলের ফলে সড়কে শক্ত প্রলেপ তৈরি করে। এছাড়া মাটির প্রলেপের উপর লবণবাহী ট্রাক থেকে লবণ পানিও ঝরে পড়ে। লবণযুক্ত মাটির প্রলেপের উপর বৃষ্টি পড়ার সাথে সাথে পুরো সড়ক পিচ্ছিল হয়ে যায়। বিশেষ করে সড়কের কেরানীহাট থেকে মৌলভীর দোকান পর্যন্ত এলাকায় এক থেকে দেড় ইঞ্চি পিচ্ছিল কাদা হয়ে যায়। এমন পিচ্ছিল কাদার উপর দিয়ে গাড়ি চালাতে গিয়ে অনেকে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।

সাতকানিয়ার কেরানীহাট এলাকার ড্রাইভার আবদুর রশিদ জানান, বৃষ্টির পর কেরানীহাট থেকে মৌলভীর দোকান পর্যন্ত সড়কটি চাষ দেয়া জমির মতো হয়ে যায়। তখন গাড়ি চালানো দূরের কথা, সড়কের উপর দিয়ে পায়ে হাঁটাও মুশকিল হয়ে পড়ে। মহাসড়কের উপর দিয়ে মাটি নেয়া বন্ধ করা দরকার। বৃষ্টি সকালে না হয়ে রাতে হলে আরও অনেক যানবাহন দুর্ঘটনার কবলে পড়ত। এ দিনের বেলাতেও অনেক গাড়ি সড়কেই ঘুরে গেছে।

তবে দোহাজারী হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ খান মোহাম্মদ এরফান জানান, মাটি পরিবহনের কারণে নয়, সড়কের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফলে কোনো কোনো জায়গায় ধুলোবালি জমেছিল। সকালে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির ফলে সড়ক কিছুটা পিচ্ছিল হয়েছিল। এতে যানবাহন কিছুটা ধীর গতিতে চলেছে, যানজট হয়নি। আর সড়কের কোথাও কোনো দুর্ঘটনাও হয়নি।

চন্দনাইশ প্রতিনিধি জানান, রোববার সকালে মহাসড়ক পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার দেওয়ানহাট ও বড়পাড়ার মাঝামাঝি স্থানে দুইটি গাড়ি সড়ক থেকে ছিটকে বিলে পড়ে যায়। ভোরে পিচ্ছিল সড়কে এক কিলোমিটার যেতে দুই থেকে তিনঘণ্টা সময় লেগেছে প্রতিটি যানবাহনের। এতে ভোর থেকে মহাসড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজট লেগে ছিল। দুর্ভোগ পোহাতে হয় স্থানীয় ও দূরপাল্লার যাত্রী সাধারণকে।

দোহাজারী হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ খান মোহাম্মদ এরফান জানান, সকালে বৃষ্টিপাতে মহাসড়ক পিচ্ছিল হয়ে পড়লে যানবাহন চলাচলের সময় একটি লবণ বোঝাই ট্রাক ও একটি কাভার্ডভ্যান সড়ক থেকে ছিটকে সড়কের পাশে উল্টে পড়ে যায়। তবে এ ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ইতমধ্যে লবণ বোঝাই ট্রাকটি উদ্ধার করা হয়েছে। উল্টে পড়া কাভার্ডভ্যানটিও উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকক্সবাজারে দুই পর্যটককে ছুরিকাঘাত করে ছিনতাই
পরবর্তী নিবন্ধউন্নয়ন কাজের সব তথ্য জানাতে হবে জেলা প্রশাসনকে