রাঙ্গুনিয়ায় শুক্রবার মধ্যরাত থেকে একটি বন্যহাতি আটকে ছিলো গভীর নরম কাদায়। শনিবার সকালে স্থানীয় ও বনবিভাগের যৌথ প্রচেষ্টায় প্রায় ১০ ঘণ্টা পর হাতিটিকে উদ্ধার করা হয়। উপজেলার শিলক ইউনিয়নের চা বাগানের পাদদেশে ধইল্যাঘোনা বিলে এই ঘটনা ঘটে। উদ্ধারের পর হাতিটি বনে ফেরার সময় বনবিভাগের চারটি মোটরবাইক ভাঙচুর করে। স্থানীয় বাসিন্দা ও উক্ত অঞ্চলের প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের সাবেক ভেটেরিনারি সার্জন সৈয়দ হোসেন বলেন, সম্ভবত ভোররাতের দিকে হাতিটি গভীর কাদায় আটকা পড়ে। সকাল নয়টার দিকে স্থানীয়রা সেটা টের পায়। পরে বন বিভাগের লোকজনও এসেছে। দুপুর একটার দিকে স্থানীয়রা হাতিটিকে টেনে তুলতে সক্ষম হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল আলম বলেন, হাতিটি প্রায় ১০ ফিট নরম কাদামাটিতে আটকে ছিল। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই ওই এলাকায় হাতিটি বিচরণ করছিল। খাদে আটকে পড়ার বিষয়টি বনবিভাগকে জানানো হয়। তারা ঘটনাস্থলে এলেও তাদের প্রয়োজনীয় উপকরণ ছিল না। এমনকি স্যালাইন ও প্রয়োজনীয় ঔষধ সেবন করতে তারা কাছেও যেতে পারেনি।
ঘটনাস্থলে হাতিটির উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছিলেন কোদালা চা বাগানের ব্যবস্থাপক মো. আবদুল লতিফ। তিনি বলেন, বিশেষ কৌশলে রশি দিয়ে বেঁধে হাতিটিকে টেনে তোলা হয়। রশিটিও নেওয়া হয়েছে চা বাগান থেকে। চা বাগানের শ্রমিক ও স্থানীয়রা এমনকি আমি নিজেও কাদায় নেমে সাহস করে এটির কাছে গিয়ে রশি দিয়ে বেঁধে ছিলাম। পরে চা বাগানের ৩০/৪০ জন শ্রমিক ও স্থানীয় জনসাধারণ মিলে এটিকে টেনে তোলা হয়।
বনবিভাগের রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মাসুম কবির বলেন, কাদায় বন্যহাতি আটকে যাওয়ার খবরে বনবিভাগের কর্মী ও চিকিৎসকরা সকাল ৮টার দিকে ঘটনাস্থলে যায়। পরে দড়ি বেঁধে কৌশলে এটিকে উদ্ধার করা হয়। হাতিটি বনে ফিরে গেছে।
শিলক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, প্রায় সময় শিলকসহ দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার পাহাড় বেষ্ঠিত চার ইউনিয়নে লোকালয়ে নেমে আসে বন্যহাতির দল। বিশেষ করে ধান পাকার মৌসুমে হাতির দল লোকালয়ে এসে বেপরোয়া হয়ে উঠে। বন্যহাতির আক্রমণে ফসলের ক্ষতি ও প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। বন্যহাতির তান্ডব কমাতে বনবিভাগের আরো তৎপড়তা প্রয়োজন।