কাজ শুরুর আগেই মেয়াদ বাড়ল দুই দফা

আনোয়ারা প্রতিনিধি | রবিবার , ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৬:২৮ পূর্বাহ্ণ

আনোয়ারা উপজেলার বারশত ইউনিয়নের দুধকুমড়া গ্রামে ১ হাজার ৩৫৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮৮৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদিত হয় ২০১৯ সালের ৯ জুলাই। ২০২২ সালের জুনে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। এর মাঝে প্রকল্পের মেয়াদ বেড়েছে দুই দফা। কিন্তু এ প্রকল্পের কাজ এখনো শুরু হয়নি। বরং কাজ শুরুর আগে দফায় দফায় সময় বাড়ানোর পাশাপাশি নির্মাণ ব্যয়ও বেড়েছে ৫০২ কোটি ৪০ লাখ ৯১ হাজার টাকা, যা মূল ব্যয়ের ৩৭ শতাংশ বেশি। এ অবস্থায় প্রকল্পটি কত দিনে আলোর মুখ দেখবে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। তবে এলাকাবাসী প্রকল্পটি প্রস্তাবিত কৃষি জমিতে না করে সরকারি খাস জমিতে করার দাবি জানিয়ে আসছেন।

জানা যায়, ‘চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ’ নামের এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এ প্রকল্পের অধীনে আনোয়ারা উপজেলার বারশত ইউনিয়নের দুধকুমড়া গ্রামে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) অধীনে ৮৮৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করার জন্য ২০১৯ সালের ৯ জুলাই একনেকে প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। এ প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালন হওয়ার কথা রয়েছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৩৫৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) বৈদেশিক সহায়তা হিসেবে ৯২৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা এবং সরকারি তহবিল থেকে ৩৫৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা অনুমোদিত হয়।

প্রকল্পের মেয়াদ নির্ধারিত হয় জুলাই ২০১৯ থেকে ২০২২ সালের জুন। ৩ বছরের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু করতে না পারায় প্রকল্পের মেয়াদ আরো দুই বছর বাড়িয়ে সময় নির্ধারণ করা হয় জুন ২০২৪ সাল। এর মাঝে প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বৃদ্ধি করে মোট ১ হাজার ৯০৪ কোটি ১৪ লাখ ৬৩ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ করে প্রকল্পটির প্রথম সংশোধন প্রস্তাব প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির কাছে পাঠানো হয়। কমিটি ১ হাজার ৮৬১ কোটি ২৮ লাখ ৯১ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ধরে পুনর্গঠিত ডিপিপি পাঠায়। সে হিসেবে বর্তমানে এ প্রকল্পের ব্যয় ১ হাজার ৮৬১ কোটি ২৮ লাখ ৯১ হাজার টাকা নির্ধারিত হয়েছে। দ্বিতীয় দফা মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে।

বর্তমানে এ প্রকল্পের মেয়াদ ৩ বছর থেকে ৬ বছরে বৃদ্ধি করা হলেও প্রকল্পটির কোনো অগ্রগতি তো দূরের কথা, এখনো ভূমি অধিগ্রহণও হয়নি। এর মাঝে প্রকল্পটির অতিরিক্ত ব্যয় বেড়েছে ৫০২ কোটি ৪০ লাখ ৯১ হাজার টাকা। মূল ব্যয়ের সাথে খরচ বেড়েছে ৩৭ শতাংশ।

স্থানীয় বাসিন্দা আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহযুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফজলুল করিম চৌধুরী বাবুল বলেন, বিদ্যুৎ প্রকল্পটি এলাকার তিন ফসলি জমিতে করার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত স্থানে হলে এলাকাবাসীর কৃষি জমি ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এলাকাবাসীর ব্যানারে স্থানীয়রা ২০২১ সালের ২২ এপ্রিল মানববন্ধন করে এ প্রকল্পটি বর্তমান প্রস্তাবিত স্থানের অদূরে পারকি সমুদ্রসৈকত সড়কের পশ্চিমের খাস জমিতে করার দাবি জানান।

প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নতুন পাওয়ার প্লান্ট থেকে উৎপাদিত ৮৮৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। সেই সাথে চট্টগ্রাম শহর এবং এ অঞ্চলের বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার অবকাঠামোরও উন্নয়ন হবে। কম সময়ের মধ্যে প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদনের পর কাজ শুরু করা হবে বলে জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধছাত্রদের ওপর গুলি নিয়ে তুমুল বিতর্ক
পরবর্তী নিবন্ধকমেছে উদ্ধার কাজের গতি, ফিকে হচ্ছে আশা