চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) যেসব কর্মকর্তা–কর্মচারী নাগরিকদের তাদের প্রাপ্য সেবা দিতে ব্যর্থ হবে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এসময় তিনি প্রত্যেক নাগরিকের সেবা পাওয়ার অধিকার রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন। তিনি গতকাল ৭নং পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডে পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন ও পরিচ্ছন্ন কর্মীদের হাজিরা যাচাইকালে এসব কথা বলেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমি ও সহকারী প্রকৌশলী কামাল হোসেন সেলিম।
ডা. শাহাদাত বলেন, আজকেও আমরা কয়েকজন কর্মচারী চিহ্নিত করেছি যারা কাজ করছে না বা ফাঁকিবাজি করছে। গত সরকার আমলে যারা ওয়ার্ড কাউন্সিলর ছিল তারা নিজেদের কিছু লোককে এখানে ঢুকিয়ে দিয়েছে। তাদের একটি অংশ ফাঁকিবাজি করছে, কাজ করছে না। পূর্বের সরকারের সময় যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, তাদের মধ্যে অনেকে দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করছে না। আমরা এই ধরনের কর্মীদের জায়গায় নতুন কর্মী নিয়োগ দিব, যাতে কাজের মান উন্নত হয়। যারা নাগরিকদের প্রাপ্য সেবা দিতে ব্যর্থ হবে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমি চাই সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করুক কারণ আমি জনগণের সেবক হিসেবে দায়িত্ব পালনে দৃঢ় অঙ্গীকারবদ্ধ। ডা. শাহাদাত বলেন, আমি প্রতিটি ওয়ার্ডে যাচ্ছি। আমার লোকেরা ওয়ার্ডগুলোতে কার্যক্রম ঠিকমতো হচ্ছে কিনা যাচাই করছে। কিন্তু ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে অভিযান চালিয়েও আমি এখনো পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম নিয়ে শতভাগ সন্তুষ্ট নই। এখনো আমার লক্ষ্যের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশও অর্জন হয়নি। এটাকে যখন ৮০–৯০ শতাংশে যখন নিতে পারব তখনই মনে করব আমি সন্তুষ্ট।
পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মীদের সতর্ক করে মেয়র বলেন, যথেষ্ট পরিমাণ মশার ওষুধ আমাদের কাছে আছে। মশার ওষুধের জন্য চিন্তার কিছু নেই। যত লাগে দিবে। কিন্তু মশার ওষুধ মারতে হবে। আমার মূল কথা হচ্ছে এটা স্প্রে করতে হবে। মানুষের দুর্ভোগ যাতে বন্ধ হয়। যারা ফাঁকিবাজি করবে আমরা প্রত্যেকটা জায়গায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমি বারবার বলছি এই দুই মাস শীতকাল যতদিন থাকবে কিউলেক্স মশা বাড়তে থাকবে। এ মশাগুলো খুবই ডিস্টার্ব করবে তাই মানুষের দুর্ভোগ যাতে না হয় এ ব্যাপারে আমরা বদ্ধপরিকর এবং সবাইকে এ ব্যাপারে কাজ করার জন্য সচেষ্ট থাকার জন্য আমি জোর অনুরোধ করছি। অন্যথায় হয়তোবা কাজের গাফিলতির জন্য কারো কারো চাকরিও চলে যেতে পারে। হাজিরা গ্রহণ শেষে মেয়র ওয়ার্ড কার্যালয়স্থ আরবান হেলথ সেন্টার পরিদর্শন করেন। এসময় মেয়র বলেন, এখানে ১০ শয্যা বিশিষ্ট একটি মাতৃসদন সেন্টার করার পরিকল্পনা আছে আমার। যেহেতু আমাদের এখানে কিছুটা জায়গা রয়েছে, তাই আমরা এই এলাকার রোগীদের জন্য একটি ছোট মাতৃসদন সেন্টার করার চেষ্টা করছি। যদি প্রতিটি ওয়ার্ডে এ ধরনের সেন্টার চালু করা যায়, তাহলে স্বাস্থ্যসেবা মানুষের কাছে আরও সহজে পৌঁছে যাবে বলে মনে করি। বর্তমানে এখানে নিয়মিত ৪০–৫০ জন রোগী দেখা হয়, তবে আমি চাই এই সংখ্যা বাড়িয়ে ১০০–২০০ জনে উন্নীত করা হোক। এরকম সুন্দর একটি জায়গায় এত কম রোগী কেন আসে, সেটা আমার বোধগম্য নয়। এজন্য আমি আরও বিজ্ঞাপন এবং প্রচারণা চালানোর নির্দেশ দিয়েছি।