শিক্ষা সমাজের প্রতিচ্ছবি। শিক্ষা গোটা সমাজ ব্যবস্থাকে বাইরে প্রতিফলিত করে। সমাজ সুন্দর থাকলে তার শিক্ষা ব্যবস্থাও সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়। আমরা শিশু জীবনের বহুমুখী প্রকাশ দেখতে পাই শিশুর কাজের মধ্য দিয়ে। শিশু চির চঞ্চল, স্বাভাবিক কর্ম প্রবণতা অনেক সময় তার পথকে রুদ্ধ করে রাখে। কাজের মধ্য দিয়ে সে যা আয়ত্ত করবে, তাই হবে তার সত্যিকারের শিক্ষা। প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে শিশুর জ্ঞানের ভিত্তি দৃঢ় হবে।
শিশুর কাজে সবসময় বাধা দিতে নেই। ‘এটা করো না’, ‘ওটা করো না’, ‘এটাই হাত দিও না’, – এই ‘না’ শব্দটি তার কর্ম শক্তির পরিপূর্ণ বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে। শিশুর অনুসন্ধিৎসু মন তাকে নানা কাজে প্রেরণা যোগায়। নতুন কিছু দেখলে শিশু অবাক হয়ে জানতে চায়, বুঝতে চায়। প্রতিযোগিতামূলক কাজে তার আগ্রহ অত্যন্ত বেশি। যে ধরনের কাজে বাধা কিংবা প্রতিবন্ধকতা থাকে, সেসব কাজে তারা আরো বেশি উৎসাহ পায়। শিশুকে শিক্ষা দিতে হলে তার মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে। শিক্ষাকে যদি শিশুর জীবনের সক্রিয় কর্ম প্রচেষ্টার সাথে যুক্ত করা যায়, তাহলে সহজেই সে শিক্ষাই আগ্রহী হয়ে উঠবে। শিক্ষক তার এই অন্তনির্হিত শক্তিকে সুষ্ঠু পথে পরিচালনা করে সঠিক পথে নিয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে শিশুর বয়স, রুচি, চাহিদা, সার্মথ্য সবকিছুর বিচার করতে হবে। শিক্ষা মানে কেবল কতগুলো বই মুখস্থ করা নয়। বর্তমান যুগের শিক্ষাবিদরা অনুধাবন করতে পারেন, গতানুগতিক পুস্তক ভারাক্রান্ত নিরস শিক্ষাকে সরস করে তুলতে শিক্ষার প্রতিটি কাজে এমন আয়োজন করতে হবে, যাতে একজন শিশু সৃজনশীল কাজে সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে পারে। শিক্ষার লক্ষ্য হতে হবে – প্রতিটি কাজে শিশু যেন আনন্দের সাথে অংশগ্রহণ করতে পারে। শিশুদের কাজের মূল্য যত বেশি দেওয়া হবে, ততই তার কাজের আগ্রহ বেড়ে যাবে। কাজের স্বীকৃতির মধ্য দিয়েই শিশু তার আত্ম আবিষ্কারের পথ খুঁজে পাবে।












