কাজের পরিধি বেড়েছে, এখনো অর্ধেক জনবলে কার্যক্রম

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২১ ডিসেম্বর, ২০২২ at ১০:১৪ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম কাস্টমসে কাজের পরিধি বাড়লেও এখনো চাহিদার অর্ধেক জনবল নিয়েই চলছে কার্যক্রম। অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায়ের বৃহৎ প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘ সময় ধরে জনবল সংকটে ধুঁকছে। কিন্তু স্থায়ী কোনো সমাধান হয়নি। সেবাগ্রহীতারা অভিযোগ করছেন, কাস্টমসে যে কাজ একদিনে শেষ হওয়ার কথা সেটি শেষ হচ্ছে এক সপ্তাহে। এছাড়া প্রিভেন্টিভ কার্যক্রমের তদারকিতেও বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানান কাস্টমস কর্মকর্তারা। ফলে রাজস্ব ফাঁকির ঝুঁকিও বাড়ছে। চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, কাস্টমসে মোট এক হাজার ২৪৮টি পদের বিপরীতে বর্তমানে কাজ করছেন ৬৪৭ জন। এছাড়া শূন্য রয়েছে ৬০১টি পদ। অর্থাৎ, অনুমোদিত পদের বিপরীত শূন্য পদ হলো ৪৮ দশমিক ১৬ শতাংশ। এরমধ্যে প্রথম শ্রেণীর ২১০টি পদের বিপরীতে শূন্যপদ ৯৪টি, দ্বিতীয় শ্রেণীর ৪৯৭ পদের বিপরীতে শূন্যপদ ২৩১টি, তৃতীয় শ্রেণীর ৪২৩ পদের বিপরীতে শূন্যপদ ২৫৪টি এবং চতুর্থ শ্রেণীর ১১৮ পদের বিপরীতে শূন্যপদ রয়েছে ২২টি।

জনবল কাঠামোতে দেখা গেছে, প্রথম শ্রেণীর ২১০ পদের মধ্যে যুগ্ম কমিশনার পদে ৫ জনের বিপরীতে কাজ করছেন ৩ জন, ডেপুটি কমিশনার পদের ১৬ জনের বিপরীতে কাজ করছেন ১২ জন, উপ প্রধান রাসায়নিক পদের ৩ জনের সবগুলোই শূন্য, সহকারী পরিচালক/পরিসংখ্যান পদের দুই পদের দুটিই শূন্য, সহকারী কমিশনারের ৪৭ পদের বিপরীতে শূন্য পদ ৩০টি, রাসায়নিক পরীক্ষকের দুই পদের দুটিই শূন্য, রাজস্ব কর্মকর্তার ১১৯ পদের মধ্যে শূন্য পদ ৪৪টি, আইন কর্মকর্তার দুটি পদে কর্মরত আছেন একজন, প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার দুটি পদে দুটিই শূন্য, পরিসংখ্যানের দুই পদে দুটিই শূন্য।

অন্যদিকে দ্বিতীয় শ্রেণীর ৪৯৭ পদের মধ্যে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তার ৪৮৭ পদের মধ্যে শূন্য পদ রয়েছে ২২১টি, সহকারী রাসায়নিক পরীক্ষকের ৬ পদের ৬টিই শূন্য, অডিটরের দুই পদের দুটি শূন্য এবং সহকারী হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার দুটি পদ থাকলেও কর্মরত নেই কেউই।

তৃতীয় শ্রেণীর ৪২৩ পদের মধ্যে কম্পিউটার অপারেটরের ২৯ পদে শূন্য পদ রয়েছে ৯টি, অফিস সুপারিনটেনডেন্টের ১৩ পদে শূন্যপদ ৫টি, পরিসংখান অনুসন্ধায়কের পদটি খালি, রেডিও অপারেটরের দুই পদের শূন্যপদ একটি, প্রধান সহকারী ১৫ পদের মধ্যে শূন্যপদ ৫টি, উচ্চমান সহকারী পদে ৮১ পদের মধ্যে শূন্যপদ ৩৩টি, ক্যাশিয়ারের দুই পদের শূন্য একটি, স্পিড বোট ড্রাইভার-১ পদের ২টির মধ্যে দুটিই শূন্য, ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের পদটি শূন্য, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটরের ৬৩ পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ৫৮টি, সাব ইন্সপেক্টর পদের ১৭টির মধ্যে ১৪টি শূন্য, ড্রাইভার পদের ৪৭টি মধ্যে ৭টি শূন্য, টেলিফোন অপারেটর পদের ৩টির মধ্যে দুটি শুন্য, ইলেক্ট্রিশিয়ানের পদ শূন্য, সিপাই পদের ১৩৫ পদের মধ্যে ১১৫টিই শূন্য।

এছাড়া চতুর্থ শ্রেণীর ১১৮ পদের মধ্যে গ্রিজারের ৪ পদে শূন্যপদ একটি, রেকর্ড সাপ্লাইয়ারের এক পদের একটিই শূন্য, অফিস সহায়ক ৯০ পদের ৬টি শূন্য, কুকের ২ পদের দুটিই শূন্য, লস্করের দুই পদের একটি শূন্য, ঝাড়ুদার/ক্লিনার/সুইপার পদের ৭ পদের মধ্যে শূন্যপদ ৫টি এবং মালী পদের ৮টির মধ্যে শূন্যপদ রয়েছে ৬টি।

চট্টগ্রাম কাস্টমস সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানি রিগ্যান দৈনিক আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমসে জনবল সংকট, এটি অনেক দিন ধরে চলছে। বিশেষ করে কাস্টমসের ল্যাবে পর্যাপ্ত রাসায়নিক পরীক্ষক না থাকার কারণে আমাদের সময়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে। জনবল সংকটের কারণে ল্যাবের পরীক্ষা নিরীক্ষায় আমাদের প্রচুর সময় ব্যায় হচ্ছে।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার ফাইজুর রহমান জানান, কাস্টমসে জনবল সংকট থাকলেও কাজে কোনো ধরনের ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে না। জনবল সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও অবগত আছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাষ্ট্র মেরামত বিএনপির নতুন স্টান্টবাজি : কাদের
পরবর্তী নিবন্ধবিজিবিকে বিশ্বমানের বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হবে