কাঁচা সড়কের ভোগান্তি

বৈদ্যপাড়া-ধামারখিল

মোহাম্মদ জিপন উদ্দিন, ফটিকছড়ি | শনিবার , ১৫ জুন, ২০২৪ at ৮:২৮ পূর্বাহ্ণ

ফটিকছড়ি উপজেলায় দাঁতমারা ইউনিয়নের বৈদ্যপাড়া টু ধামারখিল সড়কের পশ্চিমে ‘মা জান চা বাগান’ পর্যন্ত প্রায় কয়েক কিলোমিটার কাঁচা মাটির রাস্তা জনদুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে রাস্তায় কোনোভাবে চলাচল করতে পারলেও বর্ষা মৌসুমে রাস্তায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।

সামান্য বৃষ্টি হলেই হাঁটু সমান কাদা পানির সৃষ্টি হয়। এতে যানবাহন তো দূরের কথা, হেঁটে চলাও দুষ্কর হয়ে পড়ে। বৃষ্টির পানি ও কাদামাটি মিশে একাকার হয়ে যায় পুরো রাস্তা। এতে বিপাকে পড়েন দাঁতমারা ইউপির ৫নং, ৬নং ওয়ার্ডসহ ওই এলাকার কয়েক গ্রামের হাজারো মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে কাঁচা রাস্তাটি পাকা না হওয়ায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী। অথচ ওই সড়কে রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, এতিমখানা, মসজিদ। দীর্ঘদিনেও সড়কটি পাকা না হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বৈদ্যপাড়া পাড়া মসজিদ থেকে পশ্চিম পাশে মা জান চা বাগান পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটারের বেশি রাস্তা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। হাঁটু সমান কাদা মাড়িয়েই চলাচল করতে হয় স্কুলকলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী, বয়োবৃদ্ধসহ অন্য সবাইকে। বছরের শুষ্ক মৌসুমে সড়কে ধুলাবালি আর বর্ষা মৌসুমে কাদামাটির ভোগান্তির শিকার হতে হয় পথচারীদের। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এ রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে সীমাহীন কষ্ট পোহাতে হয় তাদের। এ এলাকার মানুষের আতংক ও ভয়ের আরেক নাম বৃষ্টি। বৃষ্টি হলেই রাস্তায় জমে হাঁটু সমান কাঁদামাটি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বর্ষা মৌসুমে এ রাস্তায় কোনো অ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রোবাস, ভ্যানরিকশা আসে না। মোটরসাইকেল, সাইকেলে তো দূরে থাক, খালি পায়ে হেঁটে চলাচল করাও কষ্টসাধ্য ব্যাপার। বৃষ্টির দিনে গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো যানবাহন ও অ্যাম্বুলেন্সও এখানে ঢুকতে চায় না। অনেক সময় কেউ মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে কাঁধে করে কর্দমাক্ত রাস্তা পার করতে হয়। এছাড়াও এ রাস্তার পাশে পানি চলাচলের যে সরকারি ছোট একটি খাল ছিল সেটিও স্থানীয় প্রভাবশালীরা ভরাট করে ফেলেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে মো. হাসান নামে এক স্থানীয় ব্যক্তি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. রফিক বলেন, আমাদের দুঃখকষ্ট, দুর্ভোগের কথা কেউ শুনে না। এ এলাকার মানুষের ভোগান্তির কথা বলে বোঝানো যাবে না। নিজ চোখে দেখতে হবে। আমরা ঠিকমতো হাটবাজারে যেতে পারি না। আমাদের ছেলেমেয়েরা কষ্ট করে স্কুলকলেজে যায়। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে জুতাস্যান্ডেল হাতে নিয়ে রাস্তার কাদামাটি মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হয়। আর কত কাল এ কষ্ট করতে হবে কে জানে।

একই গ্রামের আরেক বাসিন্দা ইয়ার মোহাম্মদ বলেন, দীর্ঘদিনেও রাস্তা উন্নয়ন বা সংস্কার করা হয়নি। বৃষ্টি হলে রাস্তার অবস্থা ধানি জমির মতো হয়ে যায়। দূর থেকে তাকালে জমি মনে হয়। রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা, হেঁটে চলাই কঠিন। রাস্তার বেহাল দশার কারণে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কবে এই ভোগন্তির শেষ হবে কেউ জানেন না। মো: হাসান নামের আরেক স্থানীয় বলেনকাঁচা সড়কে কাদা আর পানিতে দুর্ভোগের শেষ নেই। তারমধ্যে রাস্তার পাশ দিয়ে পানি চলাচলের যে ছোট খাল/ছড়া ছিল সেটিও প্রভাবশালীরা ভরাট করে ফেলেছে। ফলে পানি চলাচল বন্ধ হওয়াতে জলাবদ্ধতাও সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য আমি ইউএনও কে লিখিত অভিযোগও দিয়েছি।

জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি সদস্য আলী আহমদ বলেন, রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে কাঁচা। রাস্তার পানি যাওয়ার যে রেকর্ডভুক্ত ছড়াটি ছিল প্রভাবশালীরা তা ভরাট করে ফেলেছে। ফলে পানি যাতায়াতের পথ বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়াও কাঁচা সড়কটি ব্রিক সলিন করার জন্য সব সময় প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

এ ব্যাপারে দাঁতমারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জানে আলম বলেন, ফটিকছড়ির সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন দাঁতমারা।

এ দাঁতমারাকে সাজাতে রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছি। বরাদ্দ পেলে অবশ্যই এ সড়কের কাজ হবে। এছাড়াও এ কাজটি করার জন্য আমি নিজেই চেষ্টা করবো।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঈদযাত্রায় সড়কে গাড়ির চাপ থাকলেও যানজট নেই : কাদের
পরবর্তী নিবন্ধমোস্তফা হাকিম ব্লাড ব্যাংকের সাধারণ সভা