চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীন কলেজগুলোর একাদশ শ্রেণি ভর্তিতে ১ লাখ সাড়ে ২২ হাজার শিক্ষার্থী আবেদন করেছে। গত ১০ আগস্ট থেকে অনলাইনে এ আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গতকাল ২০ আগস্ট মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চট্টগ্রামের ১ লাখ ২২ হাজার ৫০০ জন শিক্ষার্থী কলেজ ভর্তিতে অনলাইনে আবেদন সম্পন্ন করেছে। চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর জাহেদুল হক আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আবেদনে এসব শিক্ষার্থীর কলেজ চয়েসের সংখ্যা ৬ লাখ ৬৫ হাজার ৬০০টি বলেও জানান তিনি।
শিক্ষাবোর্ডের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে এবার এসএসসি পাস করেছে ১ লাখ ২০ হাজার ৮৬ জন। কলেজ ভর্তিতে আবেদনকারীর সংখ্যা ১ লাখ সাড়ে ২২ হাজার জন। সে হিসেবে চট্টগ্রাম বোর্ডের অধীনে এসএসসি উত্তীর্ণের তুলনায় ২ হাজার ৪০০ জনের বেশি আবেদনকারী কলেজ ভর্তিতে আবেদন করেছে।
শিক্ষাবোর্ড সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড ছাড়াও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ড থেকে এসএসসি উত্তীর্ণ অনেক শিক্ষার্থী কলেজ ভর্তিতে আবেদন করে। এছাড়া আগের বছরে উত্তীর্ণদেরও আবেদনের সুযোগ থাকে। সে সুবাদে আগের দুই বছরে এসএসসি ও সমমান উত্তীর্ণ অনেক শিক্ষার্থীও কলেজ ভর্তিতে আবেদন করে থাকতে পারে। এসব কারণে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর সংখ্যার তুলনায় কলেজ ভর্তিতে আবেদনকারীর সংখ্যা কিছুটা বেশি বলে মনে করেন প্রফেসর জাহেদুল হক।
এদিকে, বরাবরের মতো এবারও নগরীর প্রথম সারির সরকারি কলেজগুলোতে বেশি আবেদন পড়েছে। শিক্ষাবোর্ডের তথ্য মতে, অনলাইন আবেদনে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে মোট চয়েস পড়েছে ১২ হাজার ৭১৭টি। সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজে চয়েস পড়েছে ১৯ হাজার ৩৯৭টি। সরকারি সিটি কলেজে সর্বোচ্চ ২৭ হাজার ২১১টি চয়েস পড়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজে ১৪ হাজার ৯৩৬টি, সরকারি কমার্স কলেজে ৩ হাজার ৪২৬টি, বাকলিয়া সরকারি কলেজে ২৩ হাজার ৭২২টি, চট্টগ্রাম সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ১০ হাজার ৬১৩টি এবং কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৪ হাজার ৮৫৫টি চয়েস পড়েছে।
আবেদন সংশোধনের সুযোগ : একাদশে ভর্তিতে অনলাইনে আবেদনের সময়সীমা গতকাল রাত ১২টায় শেষ হয়েছে। এই সময়সীমার মধ্যে আবেদনে কলেজ পরিবর্তন ও পছন্দক্রম পরিবর্তনের সুযোগ পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। তবে পুনঃনিরীক্ষায় ফল পরিবর্তন হওয়া শিক্ষার্থীদের ৩১ আগস্ট (একদিন) পুনরায় আবেদনের সুযোগ রয়েছে। ওইদিনও আবেদন সংশোধনের সুযোগ পাওয়া যাবে বলে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর জাহেদুল হক।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব–কমিটি সূত্রে জানা গেছে, যারা ভুল ধারণায় আবেদনে কম সংখ্যক কলেজ পছন্দ দিয়ে আবেদন করেছে তারা এই সময়ে আবেদন সংশোধন করতে পারবে। সংশোধনের মাধ্যমে আবেদনে কলেজ যোগ করতে পারবে। একইভাবে কলেজের পছন্দক্রমও পরিবর্তনের সুযোগ পাওয়া যাবে। ভর্তি সংক্রান্ত ওয়েবসাইটে ‘আপডেট এপ্লিকেশন’ বা সংশোধন সংক্রান্ত অপশন যুক্ত আছে। ওই অপশনে গিয়ে সিকিউরিটি কোড ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা আবেদন সংশোধনের সুযোগ পাবে। যেহেতু অটো মাইগ্রেশনের সুযোগ রয়েছে, সেক্ষেত্রে আবেদনে কলেজের পছন্দক্রম সাজানো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে মনে করেন বোর্ড সংশ্লিষ্টরা।
প্রসঙ্গত, এদিকে পুনঃনিরীক্ষায় ফল পরিবর্তন হওয়া শিক্ষার্থীরা নতুন করে আবেদনের সুযোগ পাবে ৩১ আগস্ট। ওইদিন ইতোমধ্যে করা আবেদন শিক্ষার্থীরাও সংশোধনের সুযোগ পাবে। প্রথম দফায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে ৫ সেপ্টেম্বর। ২য় ও ৩য় পর্যায়ের ফল প্রকাশের পর ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবরের মধ্যে কলেজগুলোকে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। ৮ অক্টোবর থেকে একাদশে ক্লাস শুরু হবে।