চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি–২ এর কর্মকর্তা কর্মচারীদের ‘গণছুটি’ নামের কর্মসূচি পালনে হাজার হাজার গ্রাহক গত কয়েকদিন ধরে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। সমিতির সেবাদানকারী সকল শাখায় তালা ঝুলিয়ে সকল কর্মকর্তা কর্মচারী চলে যাওয়ায় নানা সমস্যায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া শত শত গ্রাহক এখন অন্ধকারে রয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গ্রামীণ জনপদে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীগণ গত কয়েকদিন থেকে তাদের সকল প্রকার সেবাদান কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন ‘গণছুটি’ কর্মসূচি পালনের নামে।
অভিযোগ উঠেছে জাতীয় জরুরি সেবাদানকারী এই প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা কর্মচারীদের এমন হঠকারী কর্মসূচি সমিতির আওতাধীন রাউজান, ফটিকছড়ি, রাঙ্গুনিয়ার প্রায় চার লাখ গ্রাহককে চরম ভোগান্তিতে ফেলেছে। সঞ্চালন লাইনের ত্রুটিজনিত কারণে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকায় অনেক গ্রামের মানুষকে এখন অন্ধকারে থাকতে হচ্ছে।
খবর নিয়ে জানা যায়, সমিতির ভৌগলিক এলাকার মধ্যে থাকা বহু চিকিৎসা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনে সৃষ্ট নানা জটিলতায় পড়ে জরুরি সেবাও দিতে পারছে না। ঠিকমত কাজ করতে পারছে না ব্যাংক, বীমাসহ অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠানও। বিভিন্ন এলাকায় বিপণী বিতাণ সমূহে বিদ্যুৎ না পেয়ে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। উপজেলার চিকদাইর ইউনিয়নের প্রবাসী আয়ুব আলীর পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয়েছে তাদের ঘরের মিটার সর্টসাকিট হয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে সমস্যা সমাধানে তারা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয়ে বার বার ধর্ণা দিয়েও কোনো কর্মকর্তা কর্মচারীকে পাননি। দেখেছেন সব কার্যালয়ে তালাবদ্ধ। গত এক সপ্তাহ ধরে পরিবারটি বিদ্যুৎ বিহীন অবস্থায় রয়েছে বলে জানা যায়।
রাউজানের বড় বাণিজ্যিক কেন্দ্র নোয়াপাড়া পথের হাটের ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের ত্রুটিজনিত কারণে গত বুধবার থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত তারা কোনো বিদ্যুৎ পাননি। বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় অন্ধকারের মধ্যে সকল ব্যবসায়ী হাত গুটিয়ে রয়েছেন।
তারা জানান, গতকাল দুপুরের দিকে ক্ষণিকের জন্য বিদ্যুতের দেখা মিললেও পরবর্তীতে ওই এলাকায় বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করছে। অভিজাত শ্রেণির মিষ্টিজাত দ্রব্যের ব্যবসায়ী হাজী শফি বলেছেন, দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় ফ্রিজের সব মিষ্টি নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে সেগুলো ফেলে দিতে হয়েছে। হাটবাজরের ব্যবসায়ীরা বলেছেন বিদ্যুতের বিকল্প হিসাবে সাময়িক ব্যবহারের জন্য তারা জেনারেটর সার্ভিসের সাহার্য্য নিয়ে ব্যবসা বাণিজ্য করতেন। এখন লম্বা সময় ধরে জেনারেটর চালিয়ে রাখাও সম্ভব না হচ্ছে না। এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি–২ এর মহাব্যবস্থাপকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।












