চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ মার্কেট চত্বরে গতকাল বুধবার জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস উপলক্ষে এক সমাবেশ ও মানববন্ধনের আয়োজন করে জাহাজভাঙা শ্রমিক সেফটি কমিটি। সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০১৬ সাল থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হয়ে আসা দিবসটি কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং শ্রমজীবী মানুষের জীবনের নিরাপত্তা ও মর্যাদার প্রতীক। কিন্তু চলতি বছর সরকার ব্যয় সংকোচনের অজুহাতে দিবসটি ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের সঙ্গে একত্রে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা দিবসটির গুরুত্ব ও স্বাতন্ত্র্য ক্ষুণ্ন করেছে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ আলী এবং সঞ্চালনা করেন জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের সদস্য সচিব ফজলুল কবির মিন্টু। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের আহ্বায়ক তপন দত্ত। উপস্থিত ছিলেন শ ম জামাল উদ্দিন, মাহাবুবুল আলম, দিদারুল আলম চৌধুরী, মাহাবুবুল আলম চৌধুরী, মো. ইকবাল হোসেন, মো. ইদ্রিছ, মো. মানিক মন্ডল প্রমুখ। প্রধান অতিথি বলেন, দেশের অন্যতম বিপজ্জনক শিল্প খাত জাহাজভাঙা শিল্পে শ্রমিকদের জীবন প্রতিনিয়ত হুমকির মুখে। গত এক দশকে এ খাতে ১৩০ জন শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন, আহত হয়েছেন দুই শতাধিক। শ্রমিকদের মধ্যে কফজনিত রোগ, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, ও অস্বাভাবিক ফোলা ভাবসহ নানা স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিয়েছে।
বক্তারা বলেন, জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবসকে আলাদা গুরুত্ব দিয়ে পালন করা এখন সময়ের দাবি। শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা, মালিকপক্ষকে সুরক্ষা সরঞ্জাম প্রদান ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় বাধ্য করা, স্বাস্থ্যবীমা ও চিকিৎসা সুবিধা চালু করা এবং দুর্ঘটনায় নিহত বা আহত শ্রমিকদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান নিশ্চিত করতে হবে। তারা শ্রমিকদের জন্য ন্যায্য মজুরি বাস্তবায়ন, বাজারদরের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণভাবে তা পুননির্ধারণ, রেশনিং ব্যবস্থা চালু এবং বিএসবিএ হাসপাতালকে আধুনিক করে বিশেষায়িত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রূপান্তরের দাবি জানান।
শেষে র্যালি সহকারে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়। জেলা প্রশাসকের পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন এডিসি শিক্ষা এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মো. শরিফ উদ্দিন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।