ভারতের কর্নাটকে বাংলাদেশি এক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া তথ্যের বরাতে পুলিশের দাবি, ওই নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার কর্নাটকের কালকেরে লেক সংলগ্ন স্থানে ২৮ বছর বয়সী ওই নারীর লাশ পাওয়া যায় বলে জানিয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যম। হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, স্থানীয়রা শুক্রবার সকালে লেকের একটি নির্জন স্থানে ওই নারীর লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, তিন সন্তানের জননী নাজমা নামের ওই নারী বাসাবাড়িতে কাজ করতেন। তার স্বামী স্থানীয় পৌরসভার একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী। খবর বিডিনিউজের।
পুলিশের ধারণা, বৃহস্পতিবার রাতে কাজ থেকে ফেরার পথে আক্রান্ত হন নাজমা। তিনি যে অ্যাপার্টমেন্টে কাজ করতেন সেখান থেকে এক কিলোমিটার দূরে তার লাশ পাওয়া যায়। ঘটনা খতিয়ে দেখতে পুলিশ আশপাশের ভবনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখছে।
পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা যাচ্ছে হত্যার আগে ওই নারীকে যৌন নির্যাতন করা হয়েছে। ঘটনাটি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে রাতের মধ্যে কোনো সময়ে ঘটে থাকতে পারে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ভিরগো নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
হিন্দুস্তান টাইমসকে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, নিহত বাংলাদেশি নারী শহরে পরিবারের সঙ্গে ছয় বছর ধরে বাস করছিলেন। তার কোনো বৈধ কাগজপত্র না থাকলেও তার স্বামীর বৈধ পাসপোর্ট রয়েছে এবং তিনি এখানে এসেছিলেন মেডিকেল ভিসায়। বৃহস্পতিবার ওই নারী তার এক সহকর্মীকে বলেছিলেন তার ব্যক্তিগত কাজ রয়েছে এবং ঘরে ফিরতে দেরি হবে। তিনি সহকর্মীকে একাই চলে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু অনেক সময় পরও ঘরে না ফেরায় তার স্বামী রামামূর্তি নগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।
ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, মনে হচ্ছে তিনি স্বেচ্ছায় ওই নির্জন স্থানে গিয়েছিলেন পূর্ব পরিচিত কারও সাথে দেখা করার জন্য। শুক্রবার সকালে তার মরদেহ পাওয়া যায়। তার মাথায় ভারী কোনো বস্তুর বেশ কয়েকটি আঘাত রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে কোনো কিছু নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছে, যার এক পর্যায়ে তাকে খুন করা হয়েছে। আমরা ভারতীয় ন্যায় সংহিতা–বিএনএস ৬৩ (ধর্ষণ) এবং ১০৩ (হত্যা) ধারায় মামলা করেছি এবং ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষায় আছি।
খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশের পূর্ব বিভাগের উপ কমিশনার দেবরাজ। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ডগ স্কোয়াডও গেছে সেখানে।
উপপিুলিশ কমিশনার দেবরাজ বলেন, আমরা সকালে ১১২ নম্বরে ফোনে খবর পাই এক নারীর লাশ পড়ে আছে কালকেরে লেকের নির্জন স্থানে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ধর্ষণের পর তাকে হত্যা করা হয়েছে। এটি একটি নৃশংস ঘটনা। ঘটনার তদন্ত জোরেশোরে চলছে বলেও জানান তিনি।