গত কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণে কাপ্তাই হ্রদের পানি বেড়েছে। এতে বাড়ানো হয়েছে দেশের একমাত্র জল বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন। গত সপ্তাহে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করলেও এখন উন্নীত হয়েছে ১৫০ মেগাওয়াটের বেশি। গতকাল সোমবার সকাল থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রের চারটি ইউনিট দিয়ে ১৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে চারটিই বর্তমানে চালু রয়েছে।
কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের (কন্ট্রোল রুম) তথ্য অনুযায়ী, সোমবার কাপ্তাই হ্রদে পানির রয়েছে ৮৬ দশমিক ৬৭ ফুট মিনস সি লেভেল (এমএসএল)। তবে বিদ্যুৎকেন্দ্রের রুলকার্ভ অনুযায়ী পানি থাকার কথা ৭৬ দশমিক ২৬ ফুট মিনস সি লেভেল (এমএসএল)। কাপ্তাই হ্রদে মোট পানি ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএল। যদিও ভারী বর্ষণ চলতে থাকলে বিদ্যুৎ আরও বাড়াতে হতে পারে জানিয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্র।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপকের কার্যালয়ের তথ্য মতে, বর্তমানে উৎপাদনে থাকা চারটি ইউনিটের মধ্যে ১, ২ ও ৪ নম্বর ইউনিট থেকে ৪০ মেগাওয়াট করে মোট ১২০ মেগাওয়াট এবং ৫ নম্বর ইউনিট থেকে ৩৫ মেগাওয়াটসহ মোট ১৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। ৩ নম্বর ইউনিটটি বন্ধ রয়েছে। কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক (তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী) মাহমুদ হাসান জানান, এতদিন কাপ্তাই হ্রদে পানি স্বল্পতার কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৫টি ইউনিটের মধ্যে শুধুমাত্র একটি সচল রেখে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছে। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে শনিবার দুইটি ইউনিট এবং রোববার আরও একটিসহ মোট চারটি ইউনিট সচল করা হয়েছে। হ্রদে পানি বাড়লে পাঁচটি ইউনিটই সচল করা যেতে পারে।
প্রসঙ্গত, ষাটের দশকের তৎকালীন পার্বত্য চট্টগ্রামের কাপ্তাই উপজেলায় খরস্রোতা কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ দিয়ে নির্মিত দেশের একমাত্র জল বিদ্যুৎকেন্দ্র। শুরুতে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা গেলেও ক্রমান্বয়ে এটির উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়। বর্তমানে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ২৪২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম। জ্বালানি খরচের দিক থেকে কয়লা ও গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চেয়ে জল বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন খরচ সাশ্রয়ী।