কর্ণফুলী গ্যাসের ডিজিএমের সোয়া কোটি টাকা জব্দ

জমি ক্রয়ে ২৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ৫:৩৮ পূর্বাহ্ণ

কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) এর জমি কেনার মাধ্যমে ২৭ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির উপ-মহাব্যবস্থাপক লুৎফুল করিম চৌধুরী ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে গচ্ছিত সোয়া কোটি টাকার এফডিআর ও সঞ্চয়পত্র জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি দিয়ে প্রায় এক মাস আগে এসব টাকা জব্দ করেন। গতকাল বুধবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসলে কর্ণফুলী গ্যাস জুড়ে নতুন করে আলোচনায় আসে ঘটনাটি। প্রসঙ্গত, কর্ণফুলী গ্যাসের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আইযুব খান চৌধুরী ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে কর্ণফুলী গ্যাসে নিয়োগ, পদোন্নতি, অবৈধ সংযোগ, জমি কেনার নামে অর্থ আত্মসাৎসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘চট্টগ্রাম মহানগরীর জিইসি মোড়ে কোম্পানির আইন ভঙ্গ করে একটি জমি কেনা হয়। কর্ণফুলী গ্যাসের মেমোরেন্ডাম অব আর্টিকেল মতে ২৫ কোটি টাকার উপর কোন ব্যয় করতে হলে তা পত্রিকায় উন্মুক্ত টেন্ডারের মাধ্যমে করতে হয়। কিন্তু আইন না মেনে ১০৪ কোটি টাকার জমি কেনা হয়েছে। এক্রয়ে ২৭ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় দেখিয়ে আত্মসাতের একটি অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে।’
এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ওই জমি ক্রয় কমিটিতে যুক্ত ছিলেন বর্তমান প্রশাসন বিভগের উপ-মহাব্যবস্থাপক লুৎফুল করিম চৌধুরী। তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক আইয়ুব খান চৌধুরীর সাথে যোগসাজশের মাধ্যমে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। যে কারণে লুৎফুল করিম চৌধুরী ও তার স্ত্রীর নামে ব্যাংকে গচ্ছিত এক কোটি ২৬ লক্ষ টাকা এফডিআর ও সঞ্চয়পত্র জব্দ করা হয়েছে।’
সূত্র জানায়, নগরীর জিইসি মোড়ের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হতে ১০৪ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি জমি কেনে কর্ণফুলী গ্যাস। জমিটি রেজিস্ট্রিশন করার জন্য প্রায় ৭ কোটি টাকা খরচ হয়। রেজিষ্ট্রেশন খরচ বাদে ৯৭ কোটি টাকা জমির মালিককে প্রদান করা হয়। কিন্তু অভিযোগ উঠে, ২৭ দশমিক ৮৩ কাঠা জমির মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৭০ কোটি টাকা। কিন্তু যোগসাজশ করে ৯৭ কোটি টাকা দেখিয়ে ২৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। এ নিয়ে আইয়ুব খান চৌধুরীর বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে একটি অভিযোগ জমা পড়ে দুদকে। দুর্নীতি দমন কমিশন অভিযোগটি তদন্তের জন্য দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়কে নির্দেশ দেয়া হয়। ২০১৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।
অনুসন্ধানে নেমে দুদক জানতে পারে, জমি কেনার মাধ্যমে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছিলেন বর্তমান উপ-মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) লুৎফুল করিম চৌধুরী। এসব অর্থ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী আমানত হিসেবে জমা রেখেছেন তিনি। অভিযোগের সত্যতা মেলায় এবি ব্যাংক লিটিটেড, বেসিক ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ষোলশহর শাখায় রক্ষিত স্থায়ী আমানত (এফডিআর) ও সঞ্চয়পত্র মিলে এক কোটি ২৬ লক্ষ টাকা জব্দ করে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা। জানুয়ারির শুরুতে এসব অর্থ জব্দ করা হয় বলে জানিয়েছে দুদক সূত্র।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরোহিঙ্গারা ফের এলে গ্রহণ করবে না বাংলাদেশ
পরবর্তী নিবন্ধদৈনিক শনাক্তের হার ৩ শতাংশের নিচে