চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার শাহমীরপুর এলাকার একটি কওমি মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে কক্সবাজারে ঘুরতে গিয়ে অপহরণের শিকার হয়েছে হেফজ বিভাগের তিন ছাত্র। অপহরণের পর তাঁদের পরিবারের কাছে ১০ লাখ করে মোট ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কর্ণফুলীর শাহমীরপুর তাজবীদুল উলুম কোরআন মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে রাত ৮টায় কক্সবাজারে অপহরণকারীর চক্রের খপ্পরে পড়ে তারা।
পরদিন বুধবার রাতে কক্সবাজার মেডিকেলের পিছনের একটি পাহাড় থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় অপহৃত তিন শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে র্যাব -১৫। এসময় অপহরণকারীর এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বৃহস্পতিবার র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১৫ এর সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া অফিসার) আ. ম. ফারুক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। https://dainikazadi.net/wp-admin/profile.php
উদ্ধার হওয়া তিন মাদ্রাসা ছাত্র হলেন- সাইদুল ইসলাম জিহাদ (১৬), ওবাদুল ইসলাম মুন্না (১৫) এবং মিজবাহ উদ্দিন (১৪)। তাদের মধ্যে মিজবাহ উদ্দিনের বাড়ি কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান পূর্ব শাহমীরপুর গ্রামে একজনের বাড়ি চরলক্ষ্যার বোর্ড বাজার এলাকায় এবং অন্যজনের বাড়ি পটিয়া উপজেলায় বলে জানা গেছে। তারা তিনজনেই কর্ণফুলী উপজেলাী শাহমীরপুর তাজবীদুল উলুম কোরআন মাদ্রাসা হেফজ বিভাগের শিক্ষার্থী।
এ ঘটনার সাথে জড়িত গ্রেপ্তার হওয়া অপহরণকারী মোঃ রিয়াদ (১৯)। সে কক্সবাজার সদরের দক্ষিন জানার ঘোনা গ্রামের মৃত নবী হোসেনের ছেলে।
র্যাব ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১৫ জুলাই সকালে কর্ণফুলীর বড়উঠান ইউনিয়নের শাহমীরপুর তাজবীদুল উলুম কোরআন মাদ্রাসার তিন ছাত্র কাউকে না জানিয়ে নাস্তা করার কথা বলে বাইরে বের হয়। পরে তারা পালিয়ে হানিফ পরিবহন করে কক্সবাজারে ঘুরতে যায় এবং এক পর্যায়ে কলাতলী এলাকায় যায়।
সেখানেই এক অটোরিকশাচালকের কৌশলে প্রতারকচক্রের খপ্পরে পড়ে তিনজনই অপহৃত হন। পরে তাদের একটি নির্জন স্থানে আটকে রেখে প্রত্যেক ছাত্রের পরিবারের কাছে প্রথমে ১০ লাখ টাকা করে মোট ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। পরবর্তীতে দরকষাকষির মাধ্যমে এই অঙ্ক কমিয়ে ৫০ হাজার টাকায় নামিয়ে আনে তারা।
ঘটনার পরপরই পরিবারের সদস্যরা মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের কাছে খোঁজ নিয়ে কোনো তথ্য না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।অপহৃত ছাত্র মিছবাহ উদ্দিনের মা হামিদা ইয়াছমিন কর্ণফুলী থানায় একটি জিডি (নম্বর: ৮০৯) করেন। পাশাপাশি স্বজনরা র্যাব-১৫, অধিনায়ক বরাবর সংশ্লিষ্ট বিষয়ে লিখিত আবেদন করেন।
জিডির তদন্ত কর্মকর্তা কর্ণফুলীর থানার এসআই মিজানুর রহমান বলেন, ‘মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে জানতে পারি ছাত্ররা কক্সবাজারে রয়েছে এবং তারা অপহৃত হয়েছে। অপহরণকারীরা ফোনে মুক্তিপণ দাবি করলে একটি বিকাশ নম্বর চেয়ে কৌশলে অবস্থান শনাক্ত করি এবং বিষয়টি দ্রুত র্যাবকে জানানো হয়।’
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১৫ এর সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া অফিসার) আ. ম. ফারুক বলেন,তিন ছাত্রকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় একজন অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। জড়িত বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’
পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উদ্ধারকৃত তিনজন ও গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়।