চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানাধীন বড়উঠান ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জাগিরপাড়া গ্রামে ৮ মাস বয়সী শিশু আলিফার রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় চারজনকে অভিযুক্ত করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত আলিফা একই এলাকার নুর হোসেনের মেয়ে।
মামলার বাদী হয়েছেন শিশু আলিফার নানি খুরশিদা বেগম (৫৭), যিনি কর্ণফুলী উপজেলার দক্ষিণ শাহমীরপুরের বাসিন্দা। কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শরীফ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। থানায় দায়ের করা মামলার নম্বর ০৩/৬৫।
মামলায় এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন—১. মো. পারভেজ হোসেন ওরফে রানা (২৬), পিতা মৃত মো. ইদ্রিস, ২. মো. ইসমাইল (৩৮) ও ৩. মো. ইকবাল (৩৭), উভয় পিতা মোস্তাক আহম্মদ, ৪. বেবী আক্তার (২২), পারভেজ হোসেন রানার স্ত্রী।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২ মার্চ দুপুর ১২টার দিকে খুরশিদা বেগমের নাতি মো. জাহেদ ও অভিযুক্ত ইকবালের ছেলে মো. তুহিন একসঙ্গে খেলছিল। এ সময় ইকবাল এসে জাহেদ কে গালিগালাজ ও মারধর করেন। এ ঘটনায় জাহেদ তার দাদি খুরশিদা বেগমকে জানালে তিনি প্রতিবাদ করেন।
এতে ইকবাল আরও ক্ষিপ্ত হয়ে খুরশিদা বেগমকেও মারধর করেন এবং হুমকি দিয়ে চলে যান।
বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে খুরশিদা বেগমের ছোট ছেলে মো. রবিউল হোসেন বাড়ি ফিরে ঘটনাটি জানতে পারেন। তিনি প্রতিবাদ করলে অভিযুক্ত রানা, ইসমাইল, ইকবাল ও বেবী আক্তারের সঙ্গে তার কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আসামিরা রবিউলকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন।
এ সময় রবিউলের বোন ইয়াসমিন প্রতিবাদ করলে রানা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ঘুষি মারেন। ইয়াসমিনের কোলে থাকা ৮ মাস বয়সী শিশু আলিফার মুখে আঘাত লাগে, এতে তার মুখ ফুলে যায়। এরপর আসামিরা ইয়াসমিনকেও মারধর করেন। শিশুটির চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে আসামিরা পালিয়ে যায়।
আহত শিশু আলিফা, রবিউল ও ইয়াসমিনকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত সাড়ে ৯টার দিকে চিকিৎসক আলিফাকে মৃত ঘোষণা করেন। ডাক্তার মৃত্যুর কারণ হিসেবে শারীরিক নির্যাতন (ফিজিক্যাল অ্যাসল্ট) উল্লেখ করেন।
এ বিষয়ে কর্ণফুলী থানার ওসি মুহাম্মদ শরীফ বলেন, “মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”