কর্ণফুলীতে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর গাড়িচালকের বাড়ি থেকে ২৩ বস্তা নথি জব্দ

কর্ণফুলী প্রতিনিধি | রবিবার , ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ১২:২৭ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর শিকলবাহা সিকদার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের বিরুদ্ধে মামলার ২৩ বস্তা আলামত উদ্ধার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) ভোরে দুদকের উপপরিচালক মশিউর রহমানের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

দুদকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দুর্নীতির মাধ্যমে জাবেদের দেশে-বিদেশে অর্জিত সম্পদ ও টাকা পাচারের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ওই বাড়িতে গোপনে রাখা হয়েছিল।

দুদক জানায়, সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া আরামিট গ্রুপের দুই এজিএম আব্দুল আজিজ ও উৎপল পালের জবানবন্দির ভিত্তিতেই এ অভিযান পরিচালিত হয়। উৎপল পাল দীর্ঘদিন জাবেদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে বিদেশে সম্পদ ব্যবস্থাপনায় যুক্ত ছিলেন।

তার ল্যাপটপ ও মোবাইল থেকে পাচারের তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। দুদকের দাবি, দুবাই হয়ে যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচারের মূল পরিকল্পনাকারী তিনিই। অন্যদিকে আব্দুল আজিজ আরামিট থাই অ্যালুমিনিয়ামের এজিএম হিসেবে জাবেদের সম্পদ কেনা-বেচা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন।

তিনি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। মামলায় বলা হয়, জাবেদ ও তার পরিবারের সদস্যরা আরামিটের কর্মকর্তাদের নামে পাঁচটি নামসর্বস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলেন। এর মধ্যে একটির নামে ইউসিবিএল ব্যাংক থেকে ‘টাইম লোন’ সুবিধায় ২৫ কোটি টাকা নেওয়া হয়।

পরে সেই টাকা একই ব্যাংকে খোলা অন্য প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে বিদেশে পাচার করা হয়। গ্রেফতার আব্দুল আজিজের নামে খোলা ইম্পেরিয়াল ট্রেডিং নামের প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টেও ওই অর্থের অংশ পাওয়া গেছে। গত ২৪ জুলাই দুদকের উপপরিচালক মো. মশিউর রহমান বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

এতে জাবেদ, তার স্ত্রী, ভাই-বোন ও আরামিট গ্রুপের কর্মকর্তাসহ ৩১ জনকে আসামি করা হয়। দুদক বলছে, ২০১৯–২০ সালে ভূমিমন্ত্রী থাকাকালে জালিয়াতির মাধ্যমে এ অর্থ আত্মসাত ও পাচার করা হয়। সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ২০১৪–১৮ মেয়াদে ভূমি প্রতিমন্ত্রী এবং ২০১৯–২৩ সাল পর্যন্ত ভূমিমন্ত্রী ছিলেন। তবে ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচনের আগে বিদেশে বিপুল সম্পদ গড়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।

এরপর তাকে আর মন্ত্রিসভায় দেখা যায়নি। গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের আগমুহূর্তে তিনি স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে লন্ডনে চলে যান বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়। বর্তমানে তার ও স্ত্রী রুকমিলা জামানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারির আবেদন করেছে দুদক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবোয়ালখালীতে বিয়ে দিতে চাওয়ায় কলেজ ছাত্রীর আত্মহত্যা
পরবর্তী নিবন্ধসুফিয়া বেগম