চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে পূর্ব শত্রুতার জেরে একটি প্রাইভেটকারের গতিরোধ করে ভাঙচুর ও যুবককে মারধরের অভিযোগ জানিয়ে ২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন রেজাউল করিম (৪৯) নামক এক ব্যক্তি। কিন্তু এলাকার লোকজন প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাস্থলে না থেকে এ মামলায় একাধিক জনকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) রাত ৯ টার দিকে উপজেলার চরলক্ষ্যা (২ নম্বর ওয়ার্ড) এটিএম হাসেমের বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে বলে এজাহারে জানান। বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকালে ২৭ জনের নাম উল্লেখ ও ১০-১২ জনকে অজ্ঞাত করে কর্ণফুলী থানায় মামলা দায়ের হয়। যার মামলা নং-৩০।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনির হোসেন। তিনি জানান, ‘বাদি যাদের নাম দিয়েছেন তাদের নামেই আমরা মামলা নিয়েছি। এখন বাকিটা তদন্ত করে দেখা যাবে কারা জড়িত, আর কারা জড়িত না। যদি নিরপরাধ কেউ থেকে থাকে আমরা তদন্ত করে পরে বাদ দিবো।’
এজাহারে অভিযুক্ত আসামিরা হলেন-মো. ইকবাল (৩৩), দেলোয়ার হোসেন সাইদি (৩১), ইয়াছিন আরাফাত (৩৪), মো. আরমান হোসেন (২৫), আব্দুল্লাহ আল নোমান (২৬), আব্দুল্লাহ আল সুমন (২৭), আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩২), মো. রুবেল(৩৫), মো। ফয়সাল (২১), মো. আবছার (২৪), মো. নয়ন (২৫), মো. মনির (৩০), মো. শাহজাহান (৩৫), শাহ জামাল (৩২), মো.মামুন (৩১), মো. তাহের (৫৮), মো. সোহেল (২৭), হাসমত (৪৫), আজম খান (৪৫), জসিম উদ্দিন (৫০), মো. রফিক (৬০), ফারুক চৌধুরী (৫৫), হায়দার কবির আইনান (২৫), তারেক হাসান জুয়েল (৩৫), মো. বাহাদুর খান (৩০), গিয়াস উদ্দিন মধু (৩২) ও মোক্তার হোসেন হিরু (৩৫)। তারা সকলেই কর্ণফুলী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বাসিন্দা।
কিন্তু এই মামলা নথিভূক্ত হবার আগেই থানা থেকে খবর রটে নিরাপরাধ ব্যক্তিদের মামলায় জড়ানো হচ্ছে। এমনটি থানা ওসির স্বাক্ষর হবার আগেই এজাহার বিভিন্ন স্যোশাল মিডিয়ার চ্যাট ম্যাসেঞ্জার জুড়ে ভাইরাল হয়। কেন নিরাপরাধ ব্যক্তিদের ঘটনায় জড়িত না থেকেও আসামি করা হয়েছে সে খবরের সত্যতা নিশ্চিতে অবিরাম চেষ্টা চলছে। যদিও এখনো ধোঁয়াশা কাটছে না।
তবে ঘটনার পর পরেই কর্ণফুলী থানা পুলিশের এসআই মো. বেলায়েত হোসেন অভিযান চালিয়ে মো. ইকবাল (৩৩), মো. দেলোয়ার হোসেন সাইদি (৩১), মো. আরমান হোসেন (২৫) ও মোঃ আবছার(২৪) কে চরলক্ষ্যা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছেন বলে সূত্রে জানায়। তবে আদালত সূত্র জানায়, ৪ জনকেই আদালতে হাজির করার সাথে সাথে জামিন আবেদন করলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন (৬ আদালত) ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালত জামিন মঞ্জুর করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিদের সাথে মামলার বাদীর জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিলো। এর জের ধরে ঘটনার সময় বাদীর বড় ছেলে ইমরান (৩০) সহ তার বন্ধুরা শহর থেকে ঘটনাস্থলের গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসলে হঠাৎ তাদের প্রাইভেট কারের গতিরোধ করে ভাঙচুর এবং ইমরান ও তার বন্ধুদের এলোপাতাড়ি হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করেন বলে দাবি। এ সময় গাড়িতে থাকা নগদ ১০ হাজার টাকা ও ২ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ্য করা হয়।
এ প্রসঙ্গে সিএমপি বন্দর জোনের উপ পুলিশ কমিশনার (ডিসি) শাকিলা সোলতানা বলেন, ‘গাড়ি ভাঙচুরের বিষয়ে একটি মামলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মামলায় নিরাপরাধ কেউ থাকলে তদন্তে বাদ যাবেন।’