চট্টগ্রাম কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান হাজী ছাবের আহমদের প্রত্যাহার চেয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তুলে একই ইউনিয়নের স্থানীয় নাগরিক, সামাজিক সংগঠনের নেতা-কর্মী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা ইউএনওর কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন।
গতকাল (২১ আগস্ট) বুধবার দুপুরে কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাসুমা জান্নাতের কাছে লিখিতভাবে এ অভিযোগ দেন। অভিযোগকারীরা হলেন-গিয়াস উদ্দিন ফারুকী, শেখ আহমদ, মো. আব্বাস উদ্দিন, মো. নুরুল কবির, মমিনুল হক, মো. সেলিম খাঁন ও ইলিয়াছ বাহাদুর। এদের মধ্যে কয়েকজন ইউনিয়ন বিএনপি নেতা বলে জানা যায়।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২৮ মে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের নির্বাচনে ইছানগর ভোটকেন্দ্রে টয়লেট থেকে ব্যালটসহ আওয়ামী লীগের নৌকা সমর্থিত ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী হাজী ছাবের আহমেদ কে হাতেনাতে সিলমারা অবস্থায় গ্রেপ্তার করে বিজিবি।
তখন থেকে এখনো অবধি তিনি কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এমনকি আওয়ামী লীগের দলীয় প্রভাব কাটিয়ে চেয়ারম্যান পদ আকড়ে রেখেছেন। সে একজন বিনা ভোটের চেয়ারম্যান। জনগণের ভোটে সে নির্বাচিত নয় বলে অভিযোগে জানানো হয়।
এতে আরও জানান, তৎকালীন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলম তাঁকে আটক করে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছিলেন। হাজী ছাবের আহমদের পাজেরো গাড়িতে নৌকার সিল মারা ব্যালট পেপার পেয়েছিলেন। তবুও সে দলীয় প্রভাব কাটিয়ে সে বিতর্কিতভাবে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১৬-২০২৪ থেকে গত ৯ বছর সে ইউনিয়ন পরিষদের কোটি কোটি টাকা লুটপাট করছেন। পরিষদের কোন আয় ব্যয়ের হিসাব দেননি।
স্থানীয় নাগরিকদের দেওয়া এ অভিযোগ লিখেন, ইউনিয়ন পরিষদের আয়ের নিজস্ব উৎসের মধ্যে কর, রেট এবং ফি বাবদ কত টাকা উত্তোলন হয়েছে, ট্রেড লাইসেন্স, ওয়ারিশ সনদ, জন্মনিবন্ধন, জন্ম-মৃত্যু সনদ, মৃত ব্যক্তির পোষ্য সংক্রান্ত উত্তরাধিকার সনদ, জাতীয়তা ও চারিত্রিক সনদের বিপরীতে কত টাকা নাগরিকদের কাছ থেকে আদায় করেছেন, সরকারি কোষাগারে কত টাকা জমা দিয়েছেন তার কোন সুনির্দিষ্ট হিসাব নাই।
প্রতি বছর সরকার থেকে বিভিন্ন অনুদান ১%, এলজিএসপিসহ ট্রেড লাইসেন্সের বিপরীতে ইউনিয়নের বিভিন্ন মিলকারখানা ও ফ্যাক্টরী থেকে কোটি কোটি টাকা আদায় করেছেন। গোপনে আত্মসাৎ করেছেন। বর্তমানে জনগণের টাকায় পরিষদ নির্মাণ করবে বলে কোটি কোটি টাকা লুটপাটের ধান্ধায় নেমেছেন। যার সঠিক তদন্ত হলে দুদক সব অভিযোগের সত্যতা পাবে বলে স্থানীয় অভিযোগকারীদের দাবি।
এতে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে চেয়ারম্যান কে প্রত্যাহার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন সামাজিক সংগঠনের নেতা-কর্মী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা।
এ বিষয়ে জানতে চরপাথরঘাটার ইউপি চেয়ারম্যান হাজী ছাবের আহমদ এর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও ফোন রিসিভ হয়নি।
এ প্রসঙ্গে কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাসুমা জান্নাত বলেন, ‘স্থানীয়দের কাছ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। যা তদন্ত করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’