কর্ণফুলীতে ইউএনও অফিসে হামলার ছক, ২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

কর্ণফুলী প্রতিনিধি | বুধবার , ১৯ মার্চ, ২০২৫ at ১০:৩০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে সরকারবিরোধী মিছিল এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে হামলার পরিকল্পনার অভিযোগে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা হয়েছে। যার মামলা নম্বর-২১।

এ মামলায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। কর্ণফুলী থানায় দায়ের করা মামলাটি সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯ (সংশোধনী ২০১৩)-এর ৬(২)/৮/৯/১০ ধারায় রুজু করা হয়েছে।

মামলার পর চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কর্ণফুলী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। এ তথ্য জানান কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শরীফ।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলো—চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী তোলাতলী ২ নম্বর গেট এলাকার আব্দুল শুক্কুরের ছেলে মো. জিহাদ হোসেন (১৯), সদরঘাট পশ্চিম মাদারবাড়ির মৃত ইদ্রিস হোসেনের ছেলে মো. রাকিব হোসেন (১৯), পাঁচলাইশ হিলভিউ আবাসিক ২ নম্বর গেট এলাকার মোহাম্মদ জালালের ছেলে মো. জলিল আহমেদ রকি (২৪) ও পাঁচলাইশ মেয়র গলি ২ নম্বর গেট এলাকার মাহবুবুর আলমের ছেলে রেদোয়ান হোসেন হৃদয় (১৯)।

পলাতক দুই আসামি হলো—আর. জে রাজু (২৭) ও শাহরিয়ার শিবলু (২৫)।

মিছিল ও হামলার পরিকল্পনার অভিযোগ

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১৭ মার্চ রাত আনুমানিক ২টা ৪৫ মিনিটে কর্ণফুলী থানার পুলিশ গোপন সূত্রে জানতে পারে, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কিছু সক্রিয় সদস্য সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে নাশকতার পরিকল্পনা করছে। তারা দক্ষিণ শিকলবাহার ৫ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের তালতলা থেকে টাওয়ারের গোড়ার দিকে লাঠি, ইট-পাটকেল হাতে মিছিল বের করে এবং সরকারবিরোধী স্লোগান দেয়।

খবর পেয়ে পুলিশ রাত ৩টা ১০ মিনিটে ঘটনাস্থলে গেলে ২০-২৫ জন লোক বাসে করে দ্রুত পালিয়ে যান। পরে ঘটনাস্থল থেকে সাতটি কাঠের লাঠি ও ১০টি ইটের টুকরা উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও বিশ্লেষণ করে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামিরা জানায়, তারা নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সক্রিয় সদস্য এবং সরকারবিরোধী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত। মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, সংগঠনটির সদস্যরা বর্তমান সরকারকে অবৈধ ঘোষণা করে কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বক্তব্য

কর্ণফুলী থানার ওসি মুহাম্মদ শরীফ জানান, ‘আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে, অভিযুক্তরা প্রথমে চাক্তাই ও নতুন ব্রিজ এলাকায় মিছিল করার পরিকল্পনা করেছিলো। কিন্তু সেখানে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা কর্ণফুলী উপজেলার ভেল্লাপাড়া ব্রিজ এলাকায় গিয়ে মিছিল করে বাসে উঠে চলে যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে এবং তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে কিশোরীকে ধর্ষর্ণের অভিযোগ, যুবককে পুলিশে তুলে দিল জনতা
পরবর্তী নিবন্ধআনোয়ারায় আসামিদের ঘর জ্বালিয়ে দিল বিক্ষুব্ধ জনতা